- indraniনবাগত
- Posts : 8
স্বর্ণমুদ্রা : 1162
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-06-05
তোমার প্রতি আসক্তি
Sat Jun 05, 2021 9:17 pm
পর্ব ০১
তোমার মায়ের জন্য যেই শাড়িটা কিনছো সেটার দাম কত? আর আমার মায়ের জন্য যেই শাড়িটা কিনছো সেটার দাম কত?
স্ত্রীর এমন অবাক করা কথা শুনে অনেক বিস্মিত হয় মাহমুদ। শাড়ি কিনেছি কিন্ত এখানে মূল্য জানার কী আছে? মাহমুদ বলে, হঠাৎ এমন কথা বলছো কেন সানু?
সানু বলে , এমন অবাক হওয়ার কী আছে মাহমুদ? যা জানতে চেয়েছি সেটা বলে দিলেই তো হয়ে গেল। এবার বলো আমাকে।
তোমার মায়ের জন্য যেই শাড়িটা কিনেছি সেটার দাম পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছে।
সানুর এমন কথা শুনে অনেক খারাপ লাগে মাহমুদের। কয়দিন বিয়ে হতে না হতেই তার মা আর আমার মায়ের মধ্যে এমন সমান ভাগ করার চেষ্টা করবে ভাবতেই পারেনি মাহমুদ । কার জন্য কত টাকা দিয়ে কী কিনেছি সেটাও বলতে হবে। তার মায়ের জন্য কম টাকা দিয়ে শাড়ি কিনলে হয়তো মন খারাপ করে বসে থাকতো আর অনেক কথা শুনিয়ে দিতো। এক প্রকার মন খারাপ করে চলে যাওয়ার সময় সানু মাহমুদের হাত টেনে ধরে বলে ,
আমি কিন্ত আমার সম্পূর্ণ প্রশ্নের উত্তর পাইনি।
মাহমুদ বলে, বলেই তো দিলাম তোমার মায়ের শাড়ি পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছে?
আর তোমার মায়ের টা?
আমার মা কখনও বেশি দামের শাড়ি পরে না। এইতো কয়েক বছর আগে কোরবানীর ঈদে মায়ের জন্য দুটা শাড়ি নিয়ে এসেছিলাম। অনেকদিন মাকে কিছু কিনে দেওয়া হয়নি তাই ভাবলাম দুটা শাড়ি নিয়ে গেলে মা অনেক খুশি হবে। কিন্ত আমি ভুল ছিলাম। যখন আমি মায়ের সামনে গিয়ে দুটা শাড়ি দিই তখন আমার মা কী বলে জানো?
কী বলে?
তখন আমার মায়ের মুখটা কালো হয়ে যায়। আর বলে, দুটা শাড়ি কেন একটা হলেই তো হতো। এখনও অনেক শাড়ি তোলা আছে আমার। সেগুলো শেষ করতে পারব না। তার থেকে ভালো হতো শাড়ি না নিয়ে আসলে। অভাবের সংসার টাকাগুলো বেঁচে যেত। অন্যকিছু করলে ভালো হতো।
তোমাকে অনেকদিন কিছু দেওয়া হয়নি মা। তাই ভাবলাম দুটা শাড়ি দিই।
মা তখন কান্না করতে করতে বলে, আমার এসবের কিছু দরকার নেই। তুই আমাকে কিছু কিনে দিলেও যেমন আমার ভালোবাসার আদরের সেই ছোট্ট ছেলেটা আর কিছু কিনে না দিলেও আমার সেই আদরের ছোট্ট ছেলে।
মায়ের চোখের পানি মুছে দিয়ে বললাম এবার থেকে কিছু কিনলে তোমাকে বলব মা। কখনও তোমার কথার বিরুদ্ধে যাব না।
মা বলে একটা শাড়িটা আমি কাউকে দান করে দিব আর একটা রেখে দিব।
আচ্ছা ঠিক আছে মা দিও।
আগে আমাদের অভাবের সংসার ছিল বলে আমি মনে করতাম মা আমার সাথে মিথ্যা বলতো কিছু লাগবে না। কারণ মায়েরা সবথেকে বেশি মিথ্যা বলে। ঘরে অল্প খাবার থাকলে বলে আমার ক্ষুধা নেই। তুই খেয়ে নে বাবা। মাছের বড় মাথাটা দিয়ে বলে মাছের মাথা খেতে আমার ভালো লাগে না। আমার বুদ্ধি জ্ঞান হয়ে পর্যন্ত কখনও দেখি নাই যে, আমার মা মাছের মাথা খেয়েছে। আজ পর্যন্ত কখনও দেখি নাই যে, মুরগির রান খেয়েছে।
কিন্ত এখন আমার কাছে টাকা আছে তবুও আমার মা আগের মতোই আছে। মায়েরা কখনও স্বার্থের জন্য পরিবর্তন হয় না। সারাজীবন এক থাকে।
আর কিছু না বলে মাহমুদ অন্য রুম থেকে দুটা শাড়ির প্যাকেট নিয়ে সানুর হাতে দিয়ে বলে,
এটা তোমার মায়ের জন্য নিয়ে এসেছি পাঁচ হাজার টাকা দাম আর এটা আমার মায়ের জন্য নিয়ে এসেছি এক হাজার টাকা নিয়েছে। বিশ্বাস না হলে ক্রয় মূল্য দেখতে পারো পরিষ্কার ভাবে লেখা আছে। তারপর মাহমুদ ক্রয় মূল্যের ছিল দুটা তুলে সানুকে বলে এবার দেখো এখানে কিন্ত কোনো মূল্য লেখা নেই। সহজে কেউ বুঝতে পারবে না কোন শাড়ির কী মূল্য। তুমি যদি এক হাজার টাকার শাড়িটা পাঁচ হাজার আর পাঁচ হাজার টাকার শাড়ি এক হাজার বলো তাহলে কেউ চিনতে পারবে না সহজে। কয়েকদিন পরে ঠিকই নষ্ট হয়ে যাবে শাড়িটা। পরতে আর ভালো লাগবে না।
আর আমার মায়ের হাতে শাড়িটা তুমি নিয়ে দিবে আর বলবে মা এটা আপনার জন্য। তাহলে দেখবে মা এতোটা খুশি হবে যে, তুমি কল্পনাও করতে পারবে না সানু। আর শাড়ির দাম জিজ্ঞেস করবে না।
হঠাৎই মাহমুদের ফোনের কল বেজে উঠে। মাহমুদ ফোনটা বাহির করে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলে, তোমার মা প্রায় চলে আসছে। আমি স্টেশন থেকে নিয়ে আসি।
তুমি রুমের সবকিছু ভালো করে গুছিয়ে রাখো। আর আমার মা প্রায় চলে আসলো মেয়ের বাসা থেকে। আসলে সাথে করে একটু রান্না করে নিও। অনেক পথ জার্নি করে আসছে তো। তোমার মায়ের যেন কোনো ত্রুটি না হয় কোনো।
সানু তখন বলে, রান্না করা হয়ে গিয়েছে।
কে রান্না করেছে?
আমিই রান্না করলাম কিছুক্ষণ আগে যখন তুমি মার্কেট করতে গিয়েছিলে। একা একা বসে কী করব বুঝতে পারছিলাম না। ভালো লাগছিল না তাই সময় কাটানোর জন্য রান্না করেছিলাম।
একা একা কেন কষ্ট করে রান্না করতে গেলে। মা আসলে একসাথে রান্না করতে পারতে। তোমার কাজ একটু সহজ হয়ে হতো ।
মা অনেকক্ষণ আগে চলে এসেছে। মা রান্না করতে এসেছিল। জ্বর এসেছে তাই আমি রান্না করতে দিই নাই।
মায়ের জ্বর আসছে আমাকে আগে বললে না কেন?
তুমি তো আমাকে কিছু বলার সুযোগ দিলে না তাই বলতে পারি নাই।
আচ্ছা ঠিক আছে। আমি মায়ের সাথে দেখা করে আসি।
না না, এখন যেতে হবে না। ঘুমিয়ে আছে। তার থেকে তুমি আসার পথে মায়ের জন্য মেডিসিন নিয়ে আসবে। তারপর এসে দেখা করিও।
আচ্ছা ঠিক আছে, এটা বলে চলে যায় মাহমুদ, সানুর মাকে নিয়ে আসতে। এর আগে কখনও আসে নাই। এই প্রথম তাও আবার একা সে জন্য নিয়ে আসতে যাচ্ছে।
দুজন রিকশা করে আসার পথে মাহমুদ বলে, এখানে একটু রাখেন।
সানুর মা বলে কী হলো বাবা হঠাৎ থামতে বললে যে,
আসলে আমার মা অসুস্থ তো মেডিসিন নিব, আপনি পাঁচ মিনিট বসেন আমি আসছি।
মেডিসিন নিয়ে ফিরে এসে দেখে সানুর মা রিকশাতে নেই। মাহমুদ রিকশা মামাকে বলল, এখানে একটা ভদ্র মহিলা ছিল কোথায় গিয়েছে।
হাতের আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বলল, রেস্টুরেন্টে গিয়েছে এখনি চলে আসবে আপনাকে অপেক্ষা করতে বলেছে।
মাহমুদ কিছুটা বিরক্ত হয়ে মনে মনে বলল, মায়ের জন্য তাড়াতাড়ি ঔষধ নিয়ে যেতে হবে আবার রেস্টুরেন্টে কী করতে গেল। মাহমুদ রেস্টুরেন্টের দিকে যাওয়ার সময় যা দেখলো তা দেখে মাহমুদের রাগ একদম চলে গেল। অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে। সানুর মা খাবার পার্সেল করে একটা আসহায় মানুষ কে দিচ্ছে। সত্যই অবাক না হয়ে পারছে না মাহমুদ। আজকাল এত ভালো মানুষ ও আছে।
সানুর মা ফিরে আসলে মাহমুদ বলে কোথায় গিয়েছিলেন আপনি।
এইতো একটু এদিকে গিয়েছিলাম। তেমন কিছু না। একটু শহর ঘুরে দেখলাম। বসেই তো ছিলাম একটু হাঁটা হলো।
মাহমুদ হাসতে হাসতে বলে আপনি আমার সাথে মিথ্যা কেন বলছেন?
কই মিথ্যা তো বলি নাই।
আমি দেখেছি আপনি রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার নিয়ে একজন আসহায় মানুষ কে দিলেন।
আমি কোনো মিথ্যা বলি নাই বাবা। কারণ তুমি যদি কাউকে কিছু দান করো তাহলে ডান হাত দিয়ে দান করলে বা হাত যেন না জানতে পারে। আর সে জন্যই আমি দানের বিষয়ে কাউকে কিছু বলি না। তুমি যখন দেখেই ফেললে কিছু তো আর করার নেই। সত্য লুকিয়ে রাখতে পারলাম না।
কিছুক্ষণের মধ্যেই দুজন বাসায় চলে আসে। সানু তার মাকে অনেকদিন পরে কাছে পেয়ে অনেক খুশি। যা বলে বোঝানো সম্ভব না।
সবাই খাবার টেবিলে বসে আছে । সানু সবাইকে খাবার দিচ্ছে। প্রথমেই মাহমুদের মায়ের প্লেটে মাছের একটা বড় মাথা দেয়। এটা দেখে বেশ অবাক হয়েছে মাহমুদ। কিন্ত মাহমুদের মা বরাবর এর মতো মাহমুদের প্লেটে মাছের মাথা তুলে দিয়ে বলে আমি খাবো না মাথা , ভালো লাগে না আমার।
সানু তখন মাহমুদ কে আবাক করে দিয়ে মাছের তরকারি টা মাহমুদের সামনে রাখে। সানু আজকে সবগুলো মাছের মাথা রান্না করেছে। সানু বলে আজ আমি কত কষ্ট করে রান্না করলাম আর আপনি যদি এই মাছ না খান আমার অনেক খারাপ লাগবে।
মাহমুদের মা হাসতে হাসতে বলে, পাগলি মেয়ে একটা, দাও তাহলে। আমি আমার মেয়েকে কখনও কষ্ট দিতে পারি না।
সবাই একসাথে বসে গল্প করছে খাওয়া দাওয়া শেষে। তখন মাহমুদ ইশারা করে সানুকে বলে শাড়ি দুটা নিয়ে এসে দুজনকে দিতে।
দ্বিতীয় বারের মতো আবার অবাক করে দেয় সানু মাহমুদকে।
সবথেকে দামি শাড়িটা নিজের মাকে না দিয়ে শ্বাশুড়িকে দেয় আর কম দামের শাড়িটা নিজের মাকে দেয়। কিন্ত মাহমুদ বলেছিল দামি শাড়িটা সানুর মাকে আর কম দামের শাড়িটা মাহমুদের মাকে দিতে। এক দৃষ্টিতে মাহমুদ সানুর দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে যেন স্বপ্ন দেখছে।
Wohad Mahmud
চলবে,,,,
তোমার মায়ের জন্য যেই শাড়িটা কিনছো সেটার দাম কত? আর আমার মায়ের জন্য যেই শাড়িটা কিনছো সেটার দাম কত?
স্ত্রীর এমন অবাক করা কথা শুনে অনেক বিস্মিত হয় মাহমুদ। শাড়ি কিনেছি কিন্ত এখানে মূল্য জানার কী আছে? মাহমুদ বলে, হঠাৎ এমন কথা বলছো কেন সানু?
সানু বলে , এমন অবাক হওয়ার কী আছে মাহমুদ? যা জানতে চেয়েছি সেটা বলে দিলেই তো হয়ে গেল। এবার বলো আমাকে।
তোমার মায়ের জন্য যেই শাড়িটা কিনেছি সেটার দাম পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছে।
সানুর এমন কথা শুনে অনেক খারাপ লাগে মাহমুদের। কয়দিন বিয়ে হতে না হতেই তার মা আর আমার মায়ের মধ্যে এমন সমান ভাগ করার চেষ্টা করবে ভাবতেই পারেনি মাহমুদ । কার জন্য কত টাকা দিয়ে কী কিনেছি সেটাও বলতে হবে। তার মায়ের জন্য কম টাকা দিয়ে শাড়ি কিনলে হয়তো মন খারাপ করে বসে থাকতো আর অনেক কথা শুনিয়ে দিতো। এক প্রকার মন খারাপ করে চলে যাওয়ার সময় সানু মাহমুদের হাত টেনে ধরে বলে ,
আমি কিন্ত আমার সম্পূর্ণ প্রশ্নের উত্তর পাইনি।
মাহমুদ বলে, বলেই তো দিলাম তোমার মায়ের শাড়ি পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছে?
আর তোমার মায়ের টা?
আমার মা কখনও বেশি দামের শাড়ি পরে না। এইতো কয়েক বছর আগে কোরবানীর ঈদে মায়ের জন্য দুটা শাড়ি নিয়ে এসেছিলাম। অনেকদিন মাকে কিছু কিনে দেওয়া হয়নি তাই ভাবলাম দুটা শাড়ি নিয়ে গেলে মা অনেক খুশি হবে। কিন্ত আমি ভুল ছিলাম। যখন আমি মায়ের সামনে গিয়ে দুটা শাড়ি দিই তখন আমার মা কী বলে জানো?
কী বলে?
তখন আমার মায়ের মুখটা কালো হয়ে যায়। আর বলে, দুটা শাড়ি কেন একটা হলেই তো হতো। এখনও অনেক শাড়ি তোলা আছে আমার। সেগুলো শেষ করতে পারব না। তার থেকে ভালো হতো শাড়ি না নিয়ে আসলে। অভাবের সংসার টাকাগুলো বেঁচে যেত। অন্যকিছু করলে ভালো হতো।
তোমাকে অনেকদিন কিছু দেওয়া হয়নি মা। তাই ভাবলাম দুটা শাড়ি দিই।
মা তখন কান্না করতে করতে বলে, আমার এসবের কিছু দরকার নেই। তুই আমাকে কিছু কিনে দিলেও যেমন আমার ভালোবাসার আদরের সেই ছোট্ট ছেলেটা আর কিছু কিনে না দিলেও আমার সেই আদরের ছোট্ট ছেলে।
মায়ের চোখের পানি মুছে দিয়ে বললাম এবার থেকে কিছু কিনলে তোমাকে বলব মা। কখনও তোমার কথার বিরুদ্ধে যাব না।
মা বলে একটা শাড়িটা আমি কাউকে দান করে দিব আর একটা রেখে দিব।
আচ্ছা ঠিক আছে মা দিও।
আগে আমাদের অভাবের সংসার ছিল বলে আমি মনে করতাম মা আমার সাথে মিথ্যা বলতো কিছু লাগবে না। কারণ মায়েরা সবথেকে বেশি মিথ্যা বলে। ঘরে অল্প খাবার থাকলে বলে আমার ক্ষুধা নেই। তুই খেয়ে নে বাবা। মাছের বড় মাথাটা দিয়ে বলে মাছের মাথা খেতে আমার ভালো লাগে না। আমার বুদ্ধি জ্ঞান হয়ে পর্যন্ত কখনও দেখি নাই যে, আমার মা মাছের মাথা খেয়েছে। আজ পর্যন্ত কখনও দেখি নাই যে, মুরগির রান খেয়েছে।
কিন্ত এখন আমার কাছে টাকা আছে তবুও আমার মা আগের মতোই আছে। মায়েরা কখনও স্বার্থের জন্য পরিবর্তন হয় না। সারাজীবন এক থাকে।
আর কিছু না বলে মাহমুদ অন্য রুম থেকে দুটা শাড়ির প্যাকেট নিয়ে সানুর হাতে দিয়ে বলে,
এটা তোমার মায়ের জন্য নিয়ে এসেছি পাঁচ হাজার টাকা দাম আর এটা আমার মায়ের জন্য নিয়ে এসেছি এক হাজার টাকা নিয়েছে। বিশ্বাস না হলে ক্রয় মূল্য দেখতে পারো পরিষ্কার ভাবে লেখা আছে। তারপর মাহমুদ ক্রয় মূল্যের ছিল দুটা তুলে সানুকে বলে এবার দেখো এখানে কিন্ত কোনো মূল্য লেখা নেই। সহজে কেউ বুঝতে পারবে না কোন শাড়ির কী মূল্য। তুমি যদি এক হাজার টাকার শাড়িটা পাঁচ হাজার আর পাঁচ হাজার টাকার শাড়ি এক হাজার বলো তাহলে কেউ চিনতে পারবে না সহজে। কয়েকদিন পরে ঠিকই নষ্ট হয়ে যাবে শাড়িটা। পরতে আর ভালো লাগবে না।
আর আমার মায়ের হাতে শাড়িটা তুমি নিয়ে দিবে আর বলবে মা এটা আপনার জন্য। তাহলে দেখবে মা এতোটা খুশি হবে যে, তুমি কল্পনাও করতে পারবে না সানু। আর শাড়ির দাম জিজ্ঞেস করবে না।
হঠাৎই মাহমুদের ফোনের কল বেজে উঠে। মাহমুদ ফোনটা বাহির করে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলে, তোমার মা প্রায় চলে আসছে। আমি স্টেশন থেকে নিয়ে আসি।
তুমি রুমের সবকিছু ভালো করে গুছিয়ে রাখো। আর আমার মা প্রায় চলে আসলো মেয়ের বাসা থেকে। আসলে সাথে করে একটু রান্না করে নিও। অনেক পথ জার্নি করে আসছে তো। তোমার মায়ের যেন কোনো ত্রুটি না হয় কোনো।
সানু তখন বলে, রান্না করা হয়ে গিয়েছে।
কে রান্না করেছে?
আমিই রান্না করলাম কিছুক্ষণ আগে যখন তুমি মার্কেট করতে গিয়েছিলে। একা একা বসে কী করব বুঝতে পারছিলাম না। ভালো লাগছিল না তাই সময় কাটানোর জন্য রান্না করেছিলাম।
একা একা কেন কষ্ট করে রান্না করতে গেলে। মা আসলে একসাথে রান্না করতে পারতে। তোমার কাজ একটু সহজ হয়ে হতো ।
মা অনেকক্ষণ আগে চলে এসেছে। মা রান্না করতে এসেছিল। জ্বর এসেছে তাই আমি রান্না করতে দিই নাই।
মায়ের জ্বর আসছে আমাকে আগে বললে না কেন?
তুমি তো আমাকে কিছু বলার সুযোগ দিলে না তাই বলতে পারি নাই।
আচ্ছা ঠিক আছে। আমি মায়ের সাথে দেখা করে আসি।
না না, এখন যেতে হবে না। ঘুমিয়ে আছে। তার থেকে তুমি আসার পথে মায়ের জন্য মেডিসিন নিয়ে আসবে। তারপর এসে দেখা করিও।
আচ্ছা ঠিক আছে, এটা বলে চলে যায় মাহমুদ, সানুর মাকে নিয়ে আসতে। এর আগে কখনও আসে নাই। এই প্রথম তাও আবার একা সে জন্য নিয়ে আসতে যাচ্ছে।
দুজন রিকশা করে আসার পথে মাহমুদ বলে, এখানে একটু রাখেন।
সানুর মা বলে কী হলো বাবা হঠাৎ থামতে বললে যে,
আসলে আমার মা অসুস্থ তো মেডিসিন নিব, আপনি পাঁচ মিনিট বসেন আমি আসছি।
মেডিসিন নিয়ে ফিরে এসে দেখে সানুর মা রিকশাতে নেই। মাহমুদ রিকশা মামাকে বলল, এখানে একটা ভদ্র মহিলা ছিল কোথায় গিয়েছে।
হাতের আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বলল, রেস্টুরেন্টে গিয়েছে এখনি চলে আসবে আপনাকে অপেক্ষা করতে বলেছে।
মাহমুদ কিছুটা বিরক্ত হয়ে মনে মনে বলল, মায়ের জন্য তাড়াতাড়ি ঔষধ নিয়ে যেতে হবে আবার রেস্টুরেন্টে কী করতে গেল। মাহমুদ রেস্টুরেন্টের দিকে যাওয়ার সময় যা দেখলো তা দেখে মাহমুদের রাগ একদম চলে গেল। অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে। সানুর মা খাবার পার্সেল করে একটা আসহায় মানুষ কে দিচ্ছে। সত্যই অবাক না হয়ে পারছে না মাহমুদ। আজকাল এত ভালো মানুষ ও আছে।
সানুর মা ফিরে আসলে মাহমুদ বলে কোথায় গিয়েছিলেন আপনি।
এইতো একটু এদিকে গিয়েছিলাম। তেমন কিছু না। একটু শহর ঘুরে দেখলাম। বসেই তো ছিলাম একটু হাঁটা হলো।
মাহমুদ হাসতে হাসতে বলে আপনি আমার সাথে মিথ্যা কেন বলছেন?
কই মিথ্যা তো বলি নাই।
আমি দেখেছি আপনি রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার নিয়ে একজন আসহায় মানুষ কে দিলেন।
আমি কোনো মিথ্যা বলি নাই বাবা। কারণ তুমি যদি কাউকে কিছু দান করো তাহলে ডান হাত দিয়ে দান করলে বা হাত যেন না জানতে পারে। আর সে জন্যই আমি দানের বিষয়ে কাউকে কিছু বলি না। তুমি যখন দেখেই ফেললে কিছু তো আর করার নেই। সত্য লুকিয়ে রাখতে পারলাম না।
কিছুক্ষণের মধ্যেই দুজন বাসায় চলে আসে। সানু তার মাকে অনেকদিন পরে কাছে পেয়ে অনেক খুশি। যা বলে বোঝানো সম্ভব না।
সবাই খাবার টেবিলে বসে আছে । সানু সবাইকে খাবার দিচ্ছে। প্রথমেই মাহমুদের মায়ের প্লেটে মাছের একটা বড় মাথা দেয়। এটা দেখে বেশ অবাক হয়েছে মাহমুদ। কিন্ত মাহমুদের মা বরাবর এর মতো মাহমুদের প্লেটে মাছের মাথা তুলে দিয়ে বলে আমি খাবো না মাথা , ভালো লাগে না আমার।
সানু তখন মাহমুদ কে আবাক করে দিয়ে মাছের তরকারি টা মাহমুদের সামনে রাখে। সানু আজকে সবগুলো মাছের মাথা রান্না করেছে। সানু বলে আজ আমি কত কষ্ট করে রান্না করলাম আর আপনি যদি এই মাছ না খান আমার অনেক খারাপ লাগবে।
মাহমুদের মা হাসতে হাসতে বলে, পাগলি মেয়ে একটা, দাও তাহলে। আমি আমার মেয়েকে কখনও কষ্ট দিতে পারি না।
সবাই একসাথে বসে গল্প করছে খাওয়া দাওয়া শেষে। তখন মাহমুদ ইশারা করে সানুকে বলে শাড়ি দুটা নিয়ে এসে দুজনকে দিতে।
দ্বিতীয় বারের মতো আবার অবাক করে দেয় সানু মাহমুদকে।
সবথেকে দামি শাড়িটা নিজের মাকে না দিয়ে শ্বাশুড়িকে দেয় আর কম দামের শাড়িটা নিজের মাকে দেয়। কিন্ত মাহমুদ বলেছিল দামি শাড়িটা সানুর মাকে আর কম দামের শাড়িটা মাহমুদের মাকে দিতে। এক দৃষ্টিতে মাহমুদ সানুর দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে যেন স্বপ্ন দেখছে।
Wohad Mahmud
চলবে,,,,
Hasibul hasan santo, Abul basar, Sk sagor, Sk imran, Raihan khan, Badol hasan, Mr faruk and লেখাটি পছন্দ করেছে
- indraniনবাগত
- Posts : 8
স্বর্ণমুদ্রা : 1162
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-06-05
Re: তোমার প্রতি আসক্তি
Sat Jun 05, 2021 9:18 pm
পর্ব ০২
Wohad Mahmud
দ্বিতীয় বারের মতো আবার অবাক করে দেয় সানু মাহমুদকে।
সবথেকে দামি শাড়িটা নিজের মাকে না দিয়ে শ্বাশুড়িকে দেয় আর কম দামের শাড়িটা নিজের মাকে দেয়। কিন্ত মাহমুদ বলেছিল দামি শাড়িটা সানুর মাকে আর কম দামের শাড়িটা মাহমুদের মাকে দিতে। এক দৃষ্টিতে মাহমুদ সানুর দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে যেন স্বপ্ন দেখছে।
মাহমুদের মা বলে আমার জন্য আবার শাড়ি কিনতে গেলে কেন? আমার তো শাড়ি আছে অনেক।
সানু তখন বলে, আমার দুই মায়ের জন্য দুটা শাড়ি কিনেছি। একটা কিনলে কী ভালো, দেখাই।
আরে কি যে বলো তুমি।তোমার মা তো এই প্রথম আসছে।
মাহমুদ তখন বলে মা তোমার বউমা শখ করে দিয়েছে। পছন্দ করে তোমাকে দিয়েছে। এটা পরবে তুমি আর কোনো কথা না।
মাহমুদের মা তখন হাসতে হাসতে বলে, আচ্ছা ঠিক আছে বাবা।
মাহমুদের মা আর শ্বাশুড়ি এক জায়গায় বসে গল্প করছে। মাহমুদ তখন সানুকে ডেকে অন্য ঘরে নিয়ে যায়।
কী হলো মাহমুদ এভাবে আমাকে ডেকে নিয়ে আসলে আমাকে। মায়েরা একা আছে। তারা কী ভাববে বলো তো।
যা ভাবে ভাবুক। তুমি আমার বিয়ে করা বউ। কে কী ভাবলো এখনে সমস্যা নেই।
আচ্ছা ঠিক আছে এবার বলো কেন আমাকে ডাকলে।
কেন, নিজের বউকে ডাকতে আবার কোনো কারণ লাগে কি?
না কিন্ত এখন তো কোনো কারণ ছাড়া ডাকবে না। তাহলে আমি চলে গেলাম।
আমি তো তোমাকে বলেছিলাম দামি শাড়িটা তোমার মাকে দিতে আর কম দামের শাড়িটা আমার মাকে দিতে। কিন্ত তুমি উল্টা কেন করলে?
আগে বলো আমি যখন বলেছিলাম তোমার মায়ের শাড়ির দাম কত আর আমার মায়ের শাড়ির দাম কত। তখন তুমি কী ভেবেছিলে?
কী আর ভাববো কিছু ভাবি নাই তো।
আমি জানি তুমি কী ভেবেছিলে। আমাকে অনেক খারাপ ভেবেছিলে। এটা যে, আমি তোমার আর আমার মায়ের মধ্যে সমান ভাগ করতে চেয়েছি। তোমার থেকে হিসাব নেওয়া শুরু করে দিয়েছি।
মাহমুদ মাথা নিচু করে বলে আমাকে মাফ করে দিও প্লিজ সানু। আমি বুঝতে পারি নাই। আমি তোমাকে খারাপ ভেবেছিলাম। আমার এমনটা করা একদম উচিত হয়নি।
এই কয়দিনে আমি তোমাকে অনেকটা চিনে ফেলেছি মাহমুদ। আমি জানতাম তুমি আমার মায়ের জন্য দামি শাড়ি আর তোমার মায়ের জন্য কম দামের শাড়ি নিয়ে আসবে। সেই জন্যই আমি দাম জিজ্ঞেস করেছিলাম। আমি কখনও চাই না তুমি তোমার থেকে আমার মায়ের বেশি গুরুত্ব দাও। আমি চাই আগের মতো করে তুমি তোমার মাকে বেশি গুরুত্ব দিবে তারপর আমার মাকে। তুমি সব থেকে তোমার আত্মীয়দের বেশি গুরুত্ব দিবে তারপর আমার আত্মীয়ের।
বিষয়টা এমন না সানু। তোমার মা প্রথম আসছে আমাদের বাড়িতে। আমার তো একটা দায়িত্ব আছে। আমি শুধু সেই দায়িত্ব পালন করেছি।
তুমি এমন কিছু করবে না যাতে তোমার মা ভাবে তুমি তাকে আর গুরুত্ব দাও না। এমন কিছু করবে না যাতে তোমার মা ভাবে বিয়ের পরে আমার ছেলে অনেকটা বদলে গেছে আগের থেকে।
আমার মা এমন কখনও ভাববে না। তুমি এখনও আমার মাকে চিনতে পারো নাই।
তুমিই তো বলেছিলে মাহমুদ, মায়েরা সবথেকে মিথ্যা কথা বলে। মায়েরা সবকিছুই নিজের মাঝে গোপন রাখে। কষ্ট পেলেও বলে না।
আমি যা বলেছি তাই করবে।
মাহমুদ হাসতে হাসতে বলে আচ্ছা ঠিক আছে তুমি যা বললে তাই হবে।
আজ কী হয়েছে জানো সানু?
কী হয়েছে?
আজ তোমার আম্মুকে নিয়ে আসার সময় রাস্তায় রিকশা থামিয়ে বললাম, মা আপনি থাকেন আমি ঔষধ নিয়ে আসি। কিন্ত এসে দেখি সেখানে নেই?
নেই মানে, একা একা কোথায় গিয়েছিল মা?
আরে আগে উত্তেজিত না হয়ে আমার কথা শুনো। একটু পরে দেখলাম কিছু খাবার নিয়ে এসে একজন অসহায় মানুষকে দিচ্ছে।
প্রথমে মনে করেছিল আমি দেখি নাই। কোথায় গিয়েছিল জানতে চাইলে বলে একটু হাটছিলাম বসে থাকতে ভালো লাগছিল না। তোমার মা কাউকে কিছু দান করলে সেটা গোপন রাখে। বিষয়টা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।
আমার মা এমনই। পৃথিবীতে সবার একটা স্মৃতি আছে। সেটা হোক ভালো বা খারাপ। যদি তুমি শুনতে চাও তাহলে আমি বলবো।
হ্যাঁ অবশ্যই বলো।
মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান আমি। আমাদের আর্থিক অবস্থা অনেকটা খারাপ। কিন্ত আমাদের প্রতিবেশীর অবস্থা আমাদের থেকে আরো বেশি খারাপ ছিল।তাদের একটা মেয়ে ছিল আমার বয়সের। ঈদের দিন মেয়েকে একটা নতুন পোশাক কিনে দিবে সেই সামর্থ ছিল না।
ঈদের দিন সকালে আমি খুব আনন্দিত। নতুন পোশাক পরবো। কিন্ত আমি পোশাক কোথাও খুজে পাচ্ছি না। মন খারাপ করে দৌড়ে রান্না ঘরে গিয়ে বললাম আমার ঈদের নতুন জামা কোথায় মা? খুঁজে পাচ্ছি না।
মা তখন বলল, তোর পোশাক পাশের বাসার নীলাকে দিয়ে দিয়েছি।
আমার পোশাক নীলাকে কেন দিলে মা? তাহলে আমি কী পরবো।
তোর তো এর আগের ঈদেও কিনে দিয়েছিলাম। সেটা দিয়ে এবার ঈদ পার কর। আমি তোকে পরে আরো সুন্দর পোশাক কিনে দিব।
আমি সারাদিন কান্না করেছিলাম আর বলেছিলাম পুরাতন পোশাক দিয়ে আমি ঈদ করব না।
মা তখন ধমক দিয়ে বলেছিল তোর তো যা পোশাক আছে সেটা দিয়ে ভালো করে ঈদ করতে পারবি। কিন্ত নীলা তো সেটাও করতে পারবে না। আর কান্না করলে কিন্ত কোনোদিন নতুন পোশাক কিনে দিব না। আর নীলা তোর বান্ধবী হয়। এমন করিস না আর।
তখন ছোটো ছিলাম তাই অনেক কান্না করেছিলাম। কারণ ছোটো মানুষ ভালো মন্দ কিছু বুঝতে পারতাম না। মাঝে মাঝে আমার মা আমার জিনিস অন্যকাউকে দিয়ে দিত। কিন্ত এখন বুঝি আমার মা অনেক ভালো ছিল। তার প্রতিটা পদক্ষেপ অনেক সুন্দর ও সঠিক ছিল। নিজের কম থাকলেও অন্যকে নিয়ে চিন্তা করতো সব সময়।
মাহমুদ তখন মুচকি হেসে বলল, তোমাদের আর আমাদের পরিবারের মধ্যে একটা জিনিস মিল আছে। সেটা কী জানো সানু?
কী মিল আছে মাহমুদ?
আমরা দুজন মধ্যবিত্ত পরিবারের থেকে বড় হয়েছি। আর সে জন্যই আমরা বাস্তবতা ভালো বুঝি আর অসহায়দের সাহায্য করতে ভালোবাসি আর এটা আমারা আমাদের মায়ের কাছে থেকে শিখেছি। তারা আমাদের এই শিক্ষা দিয়েছে। আমরাও আমাদের সন্তানদের এমন শিক্ষা দিব।
সানু মুচকি হেসে বলে, হ্যাঁ তুমি একদম ঠিক কথা বলছো।
চলো আজ বিকালে দুজন বাইরে থেকে ঘুরে আসি। ভালো লাগবে অনেক।
কিন্ত দুজন একসাথে বাড়িতে থাকবে। আমরা না থাকলে কেমন দেখাবে।
তুমি একটু বেশিই চিন্তা করো। দুজন একসাথে গল্প করুক। ততক্ষণে আমরা বাইরে থেকে ঘুরে আসি। তারাও একটু গল্প করুক। আমরা বাইরে থেকে বেড়িয়ে আসি মন ভালো হবে।
মাহমুদ আর সানু বাইরে যায়। মাহমুদ বলে, একটা কথা বলবো সানু?
হ্যাঁ বলো
মাহমুদ সানুর দিকে তাকিয়ে বলে আজ তোমাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে কিন্তু তোমার সাথে ঘুরতে আমাকে অস্বস্তিকর লাগছে সানু।
সানু মুচকি হেসে বলে , বললে সুন্দর লাগছে আমাকে। অসুন্দর লাগলে না হয় বুঝতাম আমার সাথে ঘুরতে তোমার অস্বস্তিকর লাগছে। কিন্ত সুন্দর লাগার পরেও কেন অস্বস্তিকর লাগছে?
সেটাই তো মেইন সমস্যা। অসুন্দর লাগলে ভালো হতো। সবাই তোমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে। আর সে জন্যই আমার কাছে খারাপ লাগছে।
তাহলে চলো বাসায় ফিরি।
না না থাক, চলে যখন এসেছি এখন আর ফিরে যাচ্ছি না। এরপর থেকে বাইরে আসলে বোরখা পরে আসবে।
দুজন গিয়ে একটা পার্কের বেঞ্চে বসে। কিন্ত মাহমুদ লক্ষ্য করে কিছু বখাটে ছেলে সানুকে দেখে খারাপ ইঙ্গিত করছে। আজেবাজে কথা বলছে। এসব দেখে রাগে মাহমুদের চোখ লাল হয়ে আছে। সানুও বিষয়টা বুঝতে পেরেছে।
মাহমুদ বলে তুমি একটু বসো আমি আসছি। কিন্ত সানু শক্ত করে মাহমুদের হাত ধরে রাখে।
মাহমুদ বলে কী হলো হাত ছাড়ো। বললাম তো আমি আসছি একটু পরে।
না আমি ছাড়বো না। ওরা খারাপ ছেলে প্লিজ ওদের সাথে ঝামেলা করো না।
চলবে,,,,,
Wohad Mahmud
দ্বিতীয় বারের মতো আবার অবাক করে দেয় সানু মাহমুদকে।
সবথেকে দামি শাড়িটা নিজের মাকে না দিয়ে শ্বাশুড়িকে দেয় আর কম দামের শাড়িটা নিজের মাকে দেয়। কিন্ত মাহমুদ বলেছিল দামি শাড়িটা সানুর মাকে আর কম দামের শাড়িটা মাহমুদের মাকে দিতে। এক দৃষ্টিতে মাহমুদ সানুর দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে যেন স্বপ্ন দেখছে।
মাহমুদের মা বলে আমার জন্য আবার শাড়ি কিনতে গেলে কেন? আমার তো শাড়ি আছে অনেক।
সানু তখন বলে, আমার দুই মায়ের জন্য দুটা শাড়ি কিনেছি। একটা কিনলে কী ভালো, দেখাই।
আরে কি যে বলো তুমি।তোমার মা তো এই প্রথম আসছে।
মাহমুদ তখন বলে মা তোমার বউমা শখ করে দিয়েছে। পছন্দ করে তোমাকে দিয়েছে। এটা পরবে তুমি আর কোনো কথা না।
মাহমুদের মা তখন হাসতে হাসতে বলে, আচ্ছা ঠিক আছে বাবা।
মাহমুদের মা আর শ্বাশুড়ি এক জায়গায় বসে গল্প করছে। মাহমুদ তখন সানুকে ডেকে অন্য ঘরে নিয়ে যায়।
কী হলো মাহমুদ এভাবে আমাকে ডেকে নিয়ে আসলে আমাকে। মায়েরা একা আছে। তারা কী ভাববে বলো তো।
যা ভাবে ভাবুক। তুমি আমার বিয়ে করা বউ। কে কী ভাবলো এখনে সমস্যা নেই।
আচ্ছা ঠিক আছে এবার বলো কেন আমাকে ডাকলে।
কেন, নিজের বউকে ডাকতে আবার কোনো কারণ লাগে কি?
না কিন্ত এখন তো কোনো কারণ ছাড়া ডাকবে না। তাহলে আমি চলে গেলাম।
আমি তো তোমাকে বলেছিলাম দামি শাড়িটা তোমার মাকে দিতে আর কম দামের শাড়িটা আমার মাকে দিতে। কিন্ত তুমি উল্টা কেন করলে?
আগে বলো আমি যখন বলেছিলাম তোমার মায়ের শাড়ির দাম কত আর আমার মায়ের শাড়ির দাম কত। তখন তুমি কী ভেবেছিলে?
কী আর ভাববো কিছু ভাবি নাই তো।
আমি জানি তুমি কী ভেবেছিলে। আমাকে অনেক খারাপ ভেবেছিলে। এটা যে, আমি তোমার আর আমার মায়ের মধ্যে সমান ভাগ করতে চেয়েছি। তোমার থেকে হিসাব নেওয়া শুরু করে দিয়েছি।
মাহমুদ মাথা নিচু করে বলে আমাকে মাফ করে দিও প্লিজ সানু। আমি বুঝতে পারি নাই। আমি তোমাকে খারাপ ভেবেছিলাম। আমার এমনটা করা একদম উচিত হয়নি।
এই কয়দিনে আমি তোমাকে অনেকটা চিনে ফেলেছি মাহমুদ। আমি জানতাম তুমি আমার মায়ের জন্য দামি শাড়ি আর তোমার মায়ের জন্য কম দামের শাড়ি নিয়ে আসবে। সেই জন্যই আমি দাম জিজ্ঞেস করেছিলাম। আমি কখনও চাই না তুমি তোমার থেকে আমার মায়ের বেশি গুরুত্ব দাও। আমি চাই আগের মতো করে তুমি তোমার মাকে বেশি গুরুত্ব দিবে তারপর আমার মাকে। তুমি সব থেকে তোমার আত্মীয়দের বেশি গুরুত্ব দিবে তারপর আমার আত্মীয়ের।
বিষয়টা এমন না সানু। তোমার মা প্রথম আসছে আমাদের বাড়িতে। আমার তো একটা দায়িত্ব আছে। আমি শুধু সেই দায়িত্ব পালন করেছি।
তুমি এমন কিছু করবে না যাতে তোমার মা ভাবে তুমি তাকে আর গুরুত্ব দাও না। এমন কিছু করবে না যাতে তোমার মা ভাবে বিয়ের পরে আমার ছেলে অনেকটা বদলে গেছে আগের থেকে।
আমার মা এমন কখনও ভাববে না। তুমি এখনও আমার মাকে চিনতে পারো নাই।
তুমিই তো বলেছিলে মাহমুদ, মায়েরা সবথেকে মিথ্যা কথা বলে। মায়েরা সবকিছুই নিজের মাঝে গোপন রাখে। কষ্ট পেলেও বলে না।
আমি যা বলেছি তাই করবে।
মাহমুদ হাসতে হাসতে বলে আচ্ছা ঠিক আছে তুমি যা বললে তাই হবে।
আজ কী হয়েছে জানো সানু?
কী হয়েছে?
আজ তোমার আম্মুকে নিয়ে আসার সময় রাস্তায় রিকশা থামিয়ে বললাম, মা আপনি থাকেন আমি ঔষধ নিয়ে আসি। কিন্ত এসে দেখি সেখানে নেই?
নেই মানে, একা একা কোথায় গিয়েছিল মা?
আরে আগে উত্তেজিত না হয়ে আমার কথা শুনো। একটু পরে দেখলাম কিছু খাবার নিয়ে এসে একজন অসহায় মানুষকে দিচ্ছে।
প্রথমে মনে করেছিল আমি দেখি নাই। কোথায় গিয়েছিল জানতে চাইলে বলে একটু হাটছিলাম বসে থাকতে ভালো লাগছিল না। তোমার মা কাউকে কিছু দান করলে সেটা গোপন রাখে। বিষয়টা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।
আমার মা এমনই। পৃথিবীতে সবার একটা স্মৃতি আছে। সেটা হোক ভালো বা খারাপ। যদি তুমি শুনতে চাও তাহলে আমি বলবো।
হ্যাঁ অবশ্যই বলো।
মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান আমি। আমাদের আর্থিক অবস্থা অনেকটা খারাপ। কিন্ত আমাদের প্রতিবেশীর অবস্থা আমাদের থেকে আরো বেশি খারাপ ছিল।তাদের একটা মেয়ে ছিল আমার বয়সের। ঈদের দিন মেয়েকে একটা নতুন পোশাক কিনে দিবে সেই সামর্থ ছিল না।
ঈদের দিন সকালে আমি খুব আনন্দিত। নতুন পোশাক পরবো। কিন্ত আমি পোশাক কোথাও খুজে পাচ্ছি না। মন খারাপ করে দৌড়ে রান্না ঘরে গিয়ে বললাম আমার ঈদের নতুন জামা কোথায় মা? খুঁজে পাচ্ছি না।
মা তখন বলল, তোর পোশাক পাশের বাসার নীলাকে দিয়ে দিয়েছি।
আমার পোশাক নীলাকে কেন দিলে মা? তাহলে আমি কী পরবো।
তোর তো এর আগের ঈদেও কিনে দিয়েছিলাম। সেটা দিয়ে এবার ঈদ পার কর। আমি তোকে পরে আরো সুন্দর পোশাক কিনে দিব।
আমি সারাদিন কান্না করেছিলাম আর বলেছিলাম পুরাতন পোশাক দিয়ে আমি ঈদ করব না।
মা তখন ধমক দিয়ে বলেছিল তোর তো যা পোশাক আছে সেটা দিয়ে ভালো করে ঈদ করতে পারবি। কিন্ত নীলা তো সেটাও করতে পারবে না। আর কান্না করলে কিন্ত কোনোদিন নতুন পোশাক কিনে দিব না। আর নীলা তোর বান্ধবী হয়। এমন করিস না আর।
তখন ছোটো ছিলাম তাই অনেক কান্না করেছিলাম। কারণ ছোটো মানুষ ভালো মন্দ কিছু বুঝতে পারতাম না। মাঝে মাঝে আমার মা আমার জিনিস অন্যকাউকে দিয়ে দিত। কিন্ত এখন বুঝি আমার মা অনেক ভালো ছিল। তার প্রতিটা পদক্ষেপ অনেক সুন্দর ও সঠিক ছিল। নিজের কম থাকলেও অন্যকে নিয়ে চিন্তা করতো সব সময়।
মাহমুদ তখন মুচকি হেসে বলল, তোমাদের আর আমাদের পরিবারের মধ্যে একটা জিনিস মিল আছে। সেটা কী জানো সানু?
কী মিল আছে মাহমুদ?
আমরা দুজন মধ্যবিত্ত পরিবারের থেকে বড় হয়েছি। আর সে জন্যই আমরা বাস্তবতা ভালো বুঝি আর অসহায়দের সাহায্য করতে ভালোবাসি আর এটা আমারা আমাদের মায়ের কাছে থেকে শিখেছি। তারা আমাদের এই শিক্ষা দিয়েছে। আমরাও আমাদের সন্তানদের এমন শিক্ষা দিব।
সানু মুচকি হেসে বলে, হ্যাঁ তুমি একদম ঠিক কথা বলছো।
চলো আজ বিকালে দুজন বাইরে থেকে ঘুরে আসি। ভালো লাগবে অনেক।
কিন্ত দুজন একসাথে বাড়িতে থাকবে। আমরা না থাকলে কেমন দেখাবে।
তুমি একটু বেশিই চিন্তা করো। দুজন একসাথে গল্প করুক। ততক্ষণে আমরা বাইরে থেকে ঘুরে আসি। তারাও একটু গল্প করুক। আমরা বাইরে থেকে বেড়িয়ে আসি মন ভালো হবে।
মাহমুদ আর সানু বাইরে যায়। মাহমুদ বলে, একটা কথা বলবো সানু?
হ্যাঁ বলো
মাহমুদ সানুর দিকে তাকিয়ে বলে আজ তোমাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে কিন্তু তোমার সাথে ঘুরতে আমাকে অস্বস্তিকর লাগছে সানু।
সানু মুচকি হেসে বলে , বললে সুন্দর লাগছে আমাকে। অসুন্দর লাগলে না হয় বুঝতাম আমার সাথে ঘুরতে তোমার অস্বস্তিকর লাগছে। কিন্ত সুন্দর লাগার পরেও কেন অস্বস্তিকর লাগছে?
সেটাই তো মেইন সমস্যা। অসুন্দর লাগলে ভালো হতো। সবাই তোমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে। আর সে জন্যই আমার কাছে খারাপ লাগছে।
তাহলে চলো বাসায় ফিরি।
না না থাক, চলে যখন এসেছি এখন আর ফিরে যাচ্ছি না। এরপর থেকে বাইরে আসলে বোরখা পরে আসবে।
দুজন গিয়ে একটা পার্কের বেঞ্চে বসে। কিন্ত মাহমুদ লক্ষ্য করে কিছু বখাটে ছেলে সানুকে দেখে খারাপ ইঙ্গিত করছে। আজেবাজে কথা বলছে। এসব দেখে রাগে মাহমুদের চোখ লাল হয়ে আছে। সানুও বিষয়টা বুঝতে পেরেছে।
মাহমুদ বলে তুমি একটু বসো আমি আসছি। কিন্ত সানু শক্ত করে মাহমুদের হাত ধরে রাখে।
মাহমুদ বলে কী হলো হাত ছাড়ো। বললাম তো আমি আসছি একটু পরে।
না আমি ছাড়বো না। ওরা খারাপ ছেলে প্লিজ ওদের সাথে ঝামেলা করো না।
চলবে,,,,,
Hasibul hasan santo, Abul basar, Sk sagor, Sk imran, Raihan khan, Badol hasan, Saiful Osman and লেখাটি পছন্দ করেছে
- indraniনবাগত
- Posts : 8
স্বর্ণমুদ্রা : 1162
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-06-05
Re: তোমার প্রতি আসক্তি
Sat Jun 05, 2021 9:19 pm
০৩
Wohad Mahmud
মাহমুদ বলে তুমি একটু বসো আমি আসছি। কিন্ত সানু শক্ত করে মাহমুদের হাত ধরে রাখে।
মাহমুদ বলে কী হলো হাত ছাড়ো। বললাম তো আমি আসছি একটু পরে।
না আমি ছাড়বো না। ওরা খারাপ ছেলে প্লিজ ওদের সাথে ঝামেলা করো না। তার থেকে চলো এখান থেকে অন্য কোথাও গিয়ে বসি।
অন্য কোথাও গিয়ে বসার পরেও যদি এদের মতো অমানুষ আবার ঝামেলা সৃষ্টি করে তখন কী করবে? উঠে অন্য কোথাও গিয়ে বসবে?
দরকার হলে তাই করতে হবে। কিন্ত আমি তোমাকে এদের সাথে কোনো ঝামেলা করতে দিব না। যদি তোমার খারাপ কিছু হয়ে যায় তখন আমার কী হবে। মায়ের কী হবে।
কী যে বলো তুমি। আমার এমন বডি দেখে কী মনে হয় আমি মাইর না দিয়ে খেয়ে আসবো।
তাও দরকার নেই।
তারপর ওখান থেকে দুজন চলে গিয়ে ফুসকার দোকানে যায়। দুজন ফুসকে খেয়ে বাইক এর কাছে গিয়ে বলে তুমি একটু থাকো আমি আসছি এখনি।
আবার কোথায় যাবে।
একটু ফুসকার দোকান থেকে গিয়ে ফুসকা কিনে নিয়ে আসবো। বাসায় মায়েরা আছে। নিয়ে গেলে খুশি হবে।
আচ্ছা ঠিক আছে যাও সন্ধ্যা হয়ে আসছে তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে।
কিন্ত মাহমুদ সানুর সাথে মিথ্যা কথা বলে সেই বখাটে ছেলেদের কাছে গিয়ে যেই ছেলেটা বেশি ফাইজলামি করছিল তাকে চালাকি করে একটু দূরে নিয়ে গিয়ে শরীরের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে মুখে একটা ঘুশি মেরে হুসাইন বোল্টের মতো করে দৌড় দেয়।আর বাকিরা মাহমুদের পিছনে দৌড়ে আসে।
মাহমুদের এভাবে জোরে দৌড়ে আসতে দেখে সানু বলে, কী হয়েছে তোমার, এমন করছো কেন?
সব পরে বলছি। জীবন বাঁচাতে হলে আগে বাইকে উঠো। তার দুজন জোরে বাইক টেনে বাসায় চলে আসে।
বাসায় এসে ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়ে মাহমুদ। সানু বলে কী হয়েছে বলো তো এতো জোরে দৌড়ে আসলে কেন? আর তোমার পিছনে যারা দৌড়ে আসছিল তারা কারা ছিল?
ওই যে, যারা সমস্যা করছিল আমাদের ওদের মধ্যে একজনকে মেরে দৌড় দিছি। মাহমুদের কথা শুনে সানু হাসতে হাসতে শেষ। কখনও কল্পনাও করতে পারেনি এমন কিছু করবে।
দুজনের এমন করে হাসতে দেখে মাহমুদের মা বলে তোদের আবার কী হলো এমন করে হাসছিস কেন?
তেমন কিছু হয়নি মা এমনিতেই। কিন্ত তোমাকে এমন চিন্তিত লাগছে কেন মা? এর আগে তো এমন চিন্তিত দেখি নাই। কী হয়েছে?
তোর বোনের বাসায় অনেক ঝামেলা হচ্ছে। তোকে একটু গিয়ে সমাধান করতে হবে।
কেন মা আমার বোনের কী হয়েছে? আর তুমি তো আজকেই ওদের বাসা থেকে আসলে। কিছু বললে নাতো।
তোকে আমি আর এই ঝামেলা কথা বলি নাই। আজ তুই অনেক ক্লান্ত আর খুশির দিন তাই তোকে বলে ঝামেলাই ফেলিনি।
এসব কী বলছো মা। তোমার উচিত ছিল সবকিছু খুলে বলা আমাকে। এবার তাড়াতাড়ি বলো।
তোর দুলাভাই পাঁচ লক্ষ টাকা চেয়েছে। ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে অনেক তাই জরুরি টাকা লাগবে। তোর বোন মাহমুদা আমাকে একবার বলেছিল টাকার কথা।আজ রাতে তোকে বলতাম কিন্ত কিছুক্ষণ আগে মাহমুদা ফোন দিয়ে বলছে দুই দিনের মধ্যে টাকা দিতে না পারলে আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিবে।
মায়ের কথা শুনে মাহমুদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো। মাহমুদ কখনও ভাবে নাই এমন কিছু হবে। এতো তাড়াতাড়ি সবকিছুই এলোমেলো হয়ে গেল।
মাহমুদ বলে কিন্ত আমার কাছে তো এতো টাকা নেই মা। তুমি তো জানো মা আমার কত খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে পার হয়ে আসছি। আমার চাকরির ছয় মাস হয়নি এখনও। আমার সবকিছু এক জায়গায় করে এক লক্ষ টাকা দিতে পারব আমি। নিঃসন্দে আমার বোনের জন্য আমি আমার জীবন দিয়ে দিব।
তাহলে এখন কী হবে বাবা। যদি মাহমুদার ডিভোর্স হয়ে যায় তখন কী হবে।
তুমি চিন্তা করো না মা আমি আমি মারা যায়নি। এখনও বেঁচে আছি। আমি কালকে মাহমুদার বাসায় যাব।
সকালে যখন মাহমুদ মাহমুদার বাসায় যাবে তখন সানু বলে আমি তোমাকে কিছু বলবো।
হ্যাঁ বলো কী বলবে।
আমি তোমার সমস্যা বুঝতে পারছি মাহমুদ। আমার এই গহনা গুলো তুমি বিক্রি করে দিয়ে তোমার ওই টাকাগুলো নিয়ে তোমার বোনের বাসায় দিয়ে আসো।
এসব কী বলছো তুমি। আমি কখনও এমন কিছু করতে পারব না সানু।
আমার গহনার থেকে তোমার বোনের সংসার আগে দরকার। আল্লাহ কপালে রাখলে গহনা আবার কিনা যাবে কিন্ত যেই সংসার একবার নষ্ট হয়ে যাবে সেটা আর ফিরে পাওয়া যাবে না।
মাহমুদ বলে তোমাকে পেয়ে আমি ধন্য। তুমি সব সময় আমার পাশে আছো আর সারাজীবন থাকবে। তবে এখন এগুলো রাখো আগে আমি কথা বলে আসি তারপর ভেবে দেখবো।
আমি তোমার সাথে যাবো।
না তোমাকে যেতে হবে না এই ঝামেলার মধ্যে। আমি আগে কথা বলে আসি।
|
|
মাহমুদ দুলাভাই কে বলে, ব্যবসায় একটু ক্ষতি হবেই তাই বলে কী তার প্রভাব সংসারের উপর ফেলতে হবে দুলাভাই।
দেখো মাহমুদ আমি বিয়ের সময় কিছু দেওয়ার কথা বলি নাই। আমি বলি নাই যে এটা দিতে হবে ওটা দিতে হবে। সবাই তো শ্বশুর বাড়ি থেকে কতকিছু নিয়ে আসে। আমি কিছু নিই নাই।
আপনিই বলেছিলেন আমার কিছু লাগবে না। আমার শুধু সানজিদাকে লাগবে। আর আপনারা দুজন রিলেশন করে বিয়ে করেছিলেন। তখন আপনি বেকার ছিলেন তাও বিশ্বাস করে আমার বোনকে আপনার হাতে দিয়েছিলাম। আর আপনি তার প্রতিদান এভাবে দিচ্ছেন।
একমাত্র বোন যদি এই উপকার না করতে পারো তাহলে বোনকে এই বাসা থেকে নিয়ে যাও।
আমার কাছে আপনাকে দেওয়ার মতো এক লক্ষ টাকা আছে মাত্র। আমি চাকরি করছি বেশিদিন না। এখন এক লক্ষ টাকা রাখেন। আমি যদি পারি তাহলে আবার পরে দিব।
পিছন থেকে মাহমুদা বলে এক টাকাও দিতে হবে না মাহমুদ। দরকার হয় সাংসার করবো না কিন্ত যেই মানুষটা তার আসল চেহারা দেখিয়ে এখন যৌতুক চায় তার সাথে সংসার করা থেকে মরে যাওয়া ভালো।
মাহমুদার হাসব্যন্ড বলে আজেবাজে কথা বলা বন্ধ করো আমি যা করছি আমার একার জন্য না। তোমার জন্য আমাদের সন্তানের জন্য।
মাহমুদ বলে তুই প্রেগন্যান্ট আপু?
মাহমুদা মাথা নেড়ে বলে হ্যাঁ।
তাহলে আগে কেন বলিস নাই?
কালকেই জানতে পারলাম। কিন্ত এসব ঝামেলার জন্য বলতে পারি নাই।
মাহমুদের চিন্তা আর বাড়ি যায়। মাহমুদা এখন প্রেগন্যান্ট বেশি কিছু ঝামেলা করা যাবে না। তারপর আড়ালে দুলাভাইকে বলে আপনি চিন্তা করবেন না প্লিজ আমাকে দুইদিন সময় দেন। আমি টাকা পৌঁছে দিব। তবে আমার বোন তার কোনো ক্ষতি যেন না হয়।
তুমি চিন্তা করো না আমি দেখে রাখবো। এত বছর যখন কোনো সমস্যা হয়নি এখনও হবে না।
পাঁচ লক্ষ টাকা কম না। মাহমুদের জন্য অনেক কিছু। এক লক্ষ টাকা আছে বাকি টাকা কীভাবে দিবে বুঝতে পারছে না।
বাইক টা এক লক্ষ টাকা দিয়ে বিক্রি করে দিয় আর এক লক্ষ টাকা লোন দিয়ে দুদিন পরে মোট তিন লক্ষ টাকা দিয়ে আসে।
পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে না পারলেও তিন লক্ষ টাকা দিয়ে এসে মাহমুদ ভেবেছিল এবার হয়তো এই টাকার সমস্যা সমাধান হবে। কিন্ত মাহমুদ ভুল ছিল সমস্যা আরো বেশি হয়
দুই দিন পরে আবার ঝামেলা তৈরি হয়। মাহমুদা বাসায় এসে মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
চলবে,,,,,,
Wohad Mahmud
মাহমুদ বলে তুমি একটু বসো আমি আসছি। কিন্ত সানু শক্ত করে মাহমুদের হাত ধরে রাখে।
মাহমুদ বলে কী হলো হাত ছাড়ো। বললাম তো আমি আসছি একটু পরে।
না আমি ছাড়বো না। ওরা খারাপ ছেলে প্লিজ ওদের সাথে ঝামেলা করো না। তার থেকে চলো এখান থেকে অন্য কোথাও গিয়ে বসি।
অন্য কোথাও গিয়ে বসার পরেও যদি এদের মতো অমানুষ আবার ঝামেলা সৃষ্টি করে তখন কী করবে? উঠে অন্য কোথাও গিয়ে বসবে?
দরকার হলে তাই করতে হবে। কিন্ত আমি তোমাকে এদের সাথে কোনো ঝামেলা করতে দিব না। যদি তোমার খারাপ কিছু হয়ে যায় তখন আমার কী হবে। মায়ের কী হবে।
কী যে বলো তুমি। আমার এমন বডি দেখে কী মনে হয় আমি মাইর না দিয়ে খেয়ে আসবো।
তাও দরকার নেই।
তারপর ওখান থেকে দুজন চলে গিয়ে ফুসকার দোকানে যায়। দুজন ফুসকে খেয়ে বাইক এর কাছে গিয়ে বলে তুমি একটু থাকো আমি আসছি এখনি।
আবার কোথায় যাবে।
একটু ফুসকার দোকান থেকে গিয়ে ফুসকা কিনে নিয়ে আসবো। বাসায় মায়েরা আছে। নিয়ে গেলে খুশি হবে।
আচ্ছা ঠিক আছে যাও সন্ধ্যা হয়ে আসছে তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে।
কিন্ত মাহমুদ সানুর সাথে মিথ্যা কথা বলে সেই বখাটে ছেলেদের কাছে গিয়ে যেই ছেলেটা বেশি ফাইজলামি করছিল তাকে চালাকি করে একটু দূরে নিয়ে গিয়ে শরীরের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে মুখে একটা ঘুশি মেরে হুসাইন বোল্টের মতো করে দৌড় দেয়।আর বাকিরা মাহমুদের পিছনে দৌড়ে আসে।
মাহমুদের এভাবে জোরে দৌড়ে আসতে দেখে সানু বলে, কী হয়েছে তোমার, এমন করছো কেন?
সব পরে বলছি। জীবন বাঁচাতে হলে আগে বাইকে উঠো। তার দুজন জোরে বাইক টেনে বাসায় চলে আসে।
বাসায় এসে ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়ে মাহমুদ। সানু বলে কী হয়েছে বলো তো এতো জোরে দৌড়ে আসলে কেন? আর তোমার পিছনে যারা দৌড়ে আসছিল তারা কারা ছিল?
ওই যে, যারা সমস্যা করছিল আমাদের ওদের মধ্যে একজনকে মেরে দৌড় দিছি। মাহমুদের কথা শুনে সানু হাসতে হাসতে শেষ। কখনও কল্পনাও করতে পারেনি এমন কিছু করবে।
দুজনের এমন করে হাসতে দেখে মাহমুদের মা বলে তোদের আবার কী হলো এমন করে হাসছিস কেন?
তেমন কিছু হয়নি মা এমনিতেই। কিন্ত তোমাকে এমন চিন্তিত লাগছে কেন মা? এর আগে তো এমন চিন্তিত দেখি নাই। কী হয়েছে?
তোর বোনের বাসায় অনেক ঝামেলা হচ্ছে। তোকে একটু গিয়ে সমাধান করতে হবে।
কেন মা আমার বোনের কী হয়েছে? আর তুমি তো আজকেই ওদের বাসা থেকে আসলে। কিছু বললে নাতো।
তোকে আমি আর এই ঝামেলা কথা বলি নাই। আজ তুই অনেক ক্লান্ত আর খুশির দিন তাই তোকে বলে ঝামেলাই ফেলিনি।
এসব কী বলছো মা। তোমার উচিত ছিল সবকিছু খুলে বলা আমাকে। এবার তাড়াতাড়ি বলো।
তোর দুলাভাই পাঁচ লক্ষ টাকা চেয়েছে। ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে অনেক তাই জরুরি টাকা লাগবে। তোর বোন মাহমুদা আমাকে একবার বলেছিল টাকার কথা।আজ রাতে তোকে বলতাম কিন্ত কিছুক্ষণ আগে মাহমুদা ফোন দিয়ে বলছে দুই দিনের মধ্যে টাকা দিতে না পারলে আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিবে।
মায়ের কথা শুনে মাহমুদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো। মাহমুদ কখনও ভাবে নাই এমন কিছু হবে। এতো তাড়াতাড়ি সবকিছুই এলোমেলো হয়ে গেল।
মাহমুদ বলে কিন্ত আমার কাছে তো এতো টাকা নেই মা। তুমি তো জানো মা আমার কত খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে পার হয়ে আসছি। আমার চাকরির ছয় মাস হয়নি এখনও। আমার সবকিছু এক জায়গায় করে এক লক্ষ টাকা দিতে পারব আমি। নিঃসন্দে আমার বোনের জন্য আমি আমার জীবন দিয়ে দিব।
তাহলে এখন কী হবে বাবা। যদি মাহমুদার ডিভোর্স হয়ে যায় তখন কী হবে।
তুমি চিন্তা করো না মা আমি আমি মারা যায়নি। এখনও বেঁচে আছি। আমি কালকে মাহমুদার বাসায় যাব।
সকালে যখন মাহমুদ মাহমুদার বাসায় যাবে তখন সানু বলে আমি তোমাকে কিছু বলবো।
হ্যাঁ বলো কী বলবে।
আমি তোমার সমস্যা বুঝতে পারছি মাহমুদ। আমার এই গহনা গুলো তুমি বিক্রি করে দিয়ে তোমার ওই টাকাগুলো নিয়ে তোমার বোনের বাসায় দিয়ে আসো।
এসব কী বলছো তুমি। আমি কখনও এমন কিছু করতে পারব না সানু।
আমার গহনার থেকে তোমার বোনের সংসার আগে দরকার। আল্লাহ কপালে রাখলে গহনা আবার কিনা যাবে কিন্ত যেই সংসার একবার নষ্ট হয়ে যাবে সেটা আর ফিরে পাওয়া যাবে না।
মাহমুদ বলে তোমাকে পেয়ে আমি ধন্য। তুমি সব সময় আমার পাশে আছো আর সারাজীবন থাকবে। তবে এখন এগুলো রাখো আগে আমি কথা বলে আসি তারপর ভেবে দেখবো।
আমি তোমার সাথে যাবো।
না তোমাকে যেতে হবে না এই ঝামেলার মধ্যে। আমি আগে কথা বলে আসি।
|
|
মাহমুদ দুলাভাই কে বলে, ব্যবসায় একটু ক্ষতি হবেই তাই বলে কী তার প্রভাব সংসারের উপর ফেলতে হবে দুলাভাই।
দেখো মাহমুদ আমি বিয়ের সময় কিছু দেওয়ার কথা বলি নাই। আমি বলি নাই যে এটা দিতে হবে ওটা দিতে হবে। সবাই তো শ্বশুর বাড়ি থেকে কতকিছু নিয়ে আসে। আমি কিছু নিই নাই।
আপনিই বলেছিলেন আমার কিছু লাগবে না। আমার শুধু সানজিদাকে লাগবে। আর আপনারা দুজন রিলেশন করে বিয়ে করেছিলেন। তখন আপনি বেকার ছিলেন তাও বিশ্বাস করে আমার বোনকে আপনার হাতে দিয়েছিলাম। আর আপনি তার প্রতিদান এভাবে দিচ্ছেন।
একমাত্র বোন যদি এই উপকার না করতে পারো তাহলে বোনকে এই বাসা থেকে নিয়ে যাও।
আমার কাছে আপনাকে দেওয়ার মতো এক লক্ষ টাকা আছে মাত্র। আমি চাকরি করছি বেশিদিন না। এখন এক লক্ষ টাকা রাখেন। আমি যদি পারি তাহলে আবার পরে দিব।
পিছন থেকে মাহমুদা বলে এক টাকাও দিতে হবে না মাহমুদ। দরকার হয় সাংসার করবো না কিন্ত যেই মানুষটা তার আসল চেহারা দেখিয়ে এখন যৌতুক চায় তার সাথে সংসার করা থেকে মরে যাওয়া ভালো।
মাহমুদার হাসব্যন্ড বলে আজেবাজে কথা বলা বন্ধ করো আমি যা করছি আমার একার জন্য না। তোমার জন্য আমাদের সন্তানের জন্য।
মাহমুদ বলে তুই প্রেগন্যান্ট আপু?
মাহমুদা মাথা নেড়ে বলে হ্যাঁ।
তাহলে আগে কেন বলিস নাই?
কালকেই জানতে পারলাম। কিন্ত এসব ঝামেলার জন্য বলতে পারি নাই।
মাহমুদের চিন্তা আর বাড়ি যায়। মাহমুদা এখন প্রেগন্যান্ট বেশি কিছু ঝামেলা করা যাবে না। তারপর আড়ালে দুলাভাইকে বলে আপনি চিন্তা করবেন না প্লিজ আমাকে দুইদিন সময় দেন। আমি টাকা পৌঁছে দিব। তবে আমার বোন তার কোনো ক্ষতি যেন না হয়।
তুমি চিন্তা করো না আমি দেখে রাখবো। এত বছর যখন কোনো সমস্যা হয়নি এখনও হবে না।
পাঁচ লক্ষ টাকা কম না। মাহমুদের জন্য অনেক কিছু। এক লক্ষ টাকা আছে বাকি টাকা কীভাবে দিবে বুঝতে পারছে না।
বাইক টা এক লক্ষ টাকা দিয়ে বিক্রি করে দিয় আর এক লক্ষ টাকা লোন দিয়ে দুদিন পরে মোট তিন লক্ষ টাকা দিয়ে আসে।
পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে না পারলেও তিন লক্ষ টাকা দিয়ে এসে মাহমুদ ভেবেছিল এবার হয়তো এই টাকার সমস্যা সমাধান হবে। কিন্ত মাহমুদ ভুল ছিল সমস্যা আরো বেশি হয়
দুই দিন পরে আবার ঝামেলা তৈরি হয়। মাহমুদা বাসায় এসে মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
চলবে,,,,,,
Hasibul hasan santo, Abul basar, Sk sagor, Sk imran, Raihan khan, Badol hasan, Mr faruk and লেখাটি পছন্দ করেছে
- indraniনবাগত
- Posts : 8
স্বর্ণমুদ্রা : 1162
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-06-05
Re: তোমার প্রতি আসক্তি
Sat Jun 05, 2021 9:19 pm
পর্ব ০৪
Wohad Mahmud
পাঁচ লক্ষ টাকা কম না। মাহমুদের জন্য অনেক কিছু। এক লক্ষ টাকা আছে বাকি টাকা কীভাবে দিবে বুঝতে পারছে না।
বাইক টা এক লক্ষ টাকা দিয়ে বিক্রি করে দিয়ে আর এক লক্ষ টাকা লোন দিয়ে দুদিন পরে মোট তিন লক্ষ টাকা দিয়ে আসে।
পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে না পারলেও তিন লক্ষ টাকা দিয়ে এসে মাহমুদ ভেবেছিল এবার হয়তো এই টাকার সমস্যা সমাধান হবে। কিন্ত মাহমুদ ভুল ছিল সমস্যা আরো বেশি হয়
দুই দিন পরে আবার ঝামেলা তৈরি হয়। মাহমুদা বাসায় এসে মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
কী হয়েছে মাহমুদা তোর?
মাহমুদ যেই তিন লক্ষ টাকা দিয়ে এসেছিল তোমার জামাই জুয়া খেলে সব শেষ করে ফেলেছে। তাই আমি চলে এসেছি। আমি যদি থাকতাম তাহলে আবার বলতো টাকা নিয়ে আসতে বলতো।
সানু এসে মাহমুদার হাত ধরে নিয়ে রুমা যায়। সানু বলে ,
আপু আপনি একদম চিন্তার করবেন না। আপনি প্রেগন্যান্ট আপু আপনাকে ভেঙে পড়লে চলবে না। আপনার হাসব্যন্ড আপনার সন্তানের জন্য হলেও আগের মতো ভালো হয়ে যাবে। শুধু একটু ধৈর্য ধরতে হবে
তাই যেন হয় দোয়া করো।
দুইদিন হয়ে যাচ্ছে। মাহমুদের মা মাহমুদকে বলে, দুইদিন হয়ে গেল কিন্ত তোর দুলাভাইয়ের কোনো খোঁজ নেই। তোর বোন মন খারাপ করে আছে। এভাবে আমার আর ভালো লাগছে না। তুই তো একটা কিছু কর।
একটু অপেক্ষা করো মা এসব মানুষকে কীভাবে শায়েস্তা করতে হয় আমি ভালোভাবে জানি। তুমি দেখে নিও কয়দিন পরে সে ঠিকই খোঁজ নিবে।
ঠিক তিন দিনের মাথায় মাহমুদের দুলাভাই ফোন দিয়ে বলে মাহমুদাকে পাঠিয়ে দিতে।
মাহমুদ বলে, মাহমুদা আর আপনার ওখানে যাবে না।
যাবে না মানে? আমার স্ত্রী আমার বাড়িতে আসবেনা তো কোথায় যাবে।
আমি আপনাকে তিন লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম টাকাগুলো কোথায়।
টাকা সব জুয়া খেলে হেরে গিয়েছি। আমার কাছে আর কোনো টাকা নেই। তোমার টাকাও ফেরত দিতে পারব না এখন আমি। তবে আমি তোমার টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করব।
আমি আপনাকে টাকা দিতে বলি নাই। যেই স্বামী টাকার জন্য নিজের স্ত্রীকে নির্যাতন করে। তার বাসায় আমার বোন যাবে না। এর থেকে ভালো তো আমার বোনকে ঘরে বসিয়ে রাখবো
আর কোনোদিন কী আসবে না?
না কোনোদিন যাবে না।
তোমার বোন প্রেগন্যান্ট এভাবে কী সারাজীবন বসে থাকবে ভাইয়ের বাড়িতে।
না বসে থাকবে না। বিয়ে দিয়ে দিব আমার বোনকে ।
কিহ বিয়ে দিবে মানে। কার সাথে বিয়ে দিবে। মাহমুদা প্রেগন্যান্ট এই অবস্থায় বিয়ে করবে কে?
আছে একজন।
কে সে?
আমাদের এলাকার এক বড় ভাই। অনেক আগে থেকে পছন্দ করতো মাহমুদা কে। কিন্ত মাহমুদা আপনাকে পছন্দ করতো। সেই ভাই আজও বিয়ে করেনি। এখনও মাহমুদাকে ভালোবাসে অনেক। মাহমুদ প্রেগন্যান্ট তাই কী হয়েছ তাও হাসিমুখে মেনে নিবে।
আর কিছু না ফোন কেটে দেয় মাহমুদের দুলাভাই।
মাহমুদ যা অনুমান করেছিল ঠিক তাই হয়েছে। দুই ঘন্টার মধ্যেই মাহমুদের দুলাভাই উপস্থিত। মাহমুদের বাড়িতে চলে এসেছে।
কী হলো আপনি এখানে কেন দুলাভাই?
আমি মাহমুদাকে নিয়ে যেতে এসেছি।
আমি তো বলেছিলাম মাহমুদা যাবে না।
আমি মাহমুদার সাথে কথা বলবো।
মহমুদা আপনার সাথে কথা বলবে না। আপনার সাথে কথা না বলার প্রতিজ্ঞা করেছে ।
সে কোথায় আগে বলো তারপর আমি দেখছি কথা বলে কী না বলে।
ওই যে ওর রুমের মধ্য আছে গিয়ে কথা বলেন।
মাহমুদার হাসব্যন্ড মাহমুদাকে ডাকছে কিন্ত মাহমুদা শুনেও না শোনার ভান করে বসে আছে।
কী হলো আমার সাথে কথা বলবে না?
অবশেষে মাহমুদা বলে আপনি এখানে কেন এসেছেন?
তোমাকে নিয়ে যেতে এসেছি। তোমার ভাই বলছে তোমার বিয়ে দিয়ে দিবে। তোমার বিয়ের আগে থেকে কে যেন তোমাকে পছন্দ করতো তার সাথে।
হ্যাঁ ঠিক বলছে তো। আমিও এই বিয়ের জন্য রাজি আছি।
আমি বেঁচে থাকতে তোমার অন্য কারোর সাথে বিয়ে হতে দিব না। আমার ব্যবসায় ক্ষতি হয়ে আমি অন্য রকম হয়ে গিয়েছিলাম। বন্ধুর পাল্লাই পড়ে আমি জুয়া খেলে সব টাকা হেরে গিয়েছি। আমি আর কখনও এমন কিছু করবো না মাহমুদা। আমি আগের মতো ভালো হয়ে গেছি।
আমি কীভাবে বিশ্বাস করবো আপনি ভালো হয়ে গিয়েছেন। আবার যদি আপনি এমন কাজ করেন।
আবার এমন কাজ করলে তুমি যা বলবে তাই করবো।
ওহ তার মানে আপনি আবার এমন কাজ করবেন? আপনার উত্তর এমন হওয়া উচিত ছিল না। আর কখনও এমন কাজ করবো না , এমন বলা উচিত ছিল।
আমি আপনার সংসার করতে পারি কিন্ত একটা শর্ত আছে।
কী শর্ত বলো। বাচ্চা না হওয়ার আগ পর্যন্ত আমি এখানে থাকবো।
আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোমার সব শর্ত মানতে রাজি আছি।
সাত বছর পর একটা ছোটো ছেলের হাত ধরে একটা কবরের পাশে দাড়িয়ে কবর জিয়ারত করছে মাহমুদ।
হঠাৎ ছোটো বাচ্চাটা বলে এটা কার কবর মামা।
এটা তোমার মামির কবর। বাচ্চা জন্মদানের সময় আমার স্ত্রী সন্তান দুজন মারা যায়।
বাসায় ফিরে আসলে ওয়াহেদের মা বলে এভাবে আর কতদিন এবার তো একটা বিয়ে কর। আর কতদিন একা একা থাকবি।
না মা আমি আর বিয়ে করব না। এভাবেই জীবন পার করে দিব। আমি আর কাউকে আপন করে নিব না। আমি আর কাউকে দূরে চলে যেতে দিব না।
মাহমুদের ঘরের জানালা থেকে স্ত্রীর কবর টা স্পষ্ট দেখা যায়। যখন সময় পাই এক দৃষ্টিকোণ দিয়ে কবরের দিকে তাকিয়ে থাকে।
সমাপ্ত।
শেষ পর্বের জন্য পর্ব টা আজ ছোটো হয়েছে। ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
Wohad Mahmud
পাঁচ লক্ষ টাকা কম না। মাহমুদের জন্য অনেক কিছু। এক লক্ষ টাকা আছে বাকি টাকা কীভাবে দিবে বুঝতে পারছে না।
বাইক টা এক লক্ষ টাকা দিয়ে বিক্রি করে দিয়ে আর এক লক্ষ টাকা লোন দিয়ে দুদিন পরে মোট তিন লক্ষ টাকা দিয়ে আসে।
পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে না পারলেও তিন লক্ষ টাকা দিয়ে এসে মাহমুদ ভেবেছিল এবার হয়তো এই টাকার সমস্যা সমাধান হবে। কিন্ত মাহমুদ ভুল ছিল সমস্যা আরো বেশি হয়
দুই দিন পরে আবার ঝামেলা তৈরি হয়। মাহমুদা বাসায় এসে মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
কী হয়েছে মাহমুদা তোর?
মাহমুদ যেই তিন লক্ষ টাকা দিয়ে এসেছিল তোমার জামাই জুয়া খেলে সব শেষ করে ফেলেছে। তাই আমি চলে এসেছি। আমি যদি থাকতাম তাহলে আবার বলতো টাকা নিয়ে আসতে বলতো।
সানু এসে মাহমুদার হাত ধরে নিয়ে রুমা যায়। সানু বলে ,
আপু আপনি একদম চিন্তার করবেন না। আপনি প্রেগন্যান্ট আপু আপনাকে ভেঙে পড়লে চলবে না। আপনার হাসব্যন্ড আপনার সন্তানের জন্য হলেও আগের মতো ভালো হয়ে যাবে। শুধু একটু ধৈর্য ধরতে হবে
তাই যেন হয় দোয়া করো।
দুইদিন হয়ে যাচ্ছে। মাহমুদের মা মাহমুদকে বলে, দুইদিন হয়ে গেল কিন্ত তোর দুলাভাইয়ের কোনো খোঁজ নেই। তোর বোন মন খারাপ করে আছে। এভাবে আমার আর ভালো লাগছে না। তুই তো একটা কিছু কর।
একটু অপেক্ষা করো মা এসব মানুষকে কীভাবে শায়েস্তা করতে হয় আমি ভালোভাবে জানি। তুমি দেখে নিও কয়দিন পরে সে ঠিকই খোঁজ নিবে।
ঠিক তিন দিনের মাথায় মাহমুদের দুলাভাই ফোন দিয়ে বলে মাহমুদাকে পাঠিয়ে দিতে।
মাহমুদ বলে, মাহমুদা আর আপনার ওখানে যাবে না।
যাবে না মানে? আমার স্ত্রী আমার বাড়িতে আসবেনা তো কোথায় যাবে।
আমি আপনাকে তিন লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম টাকাগুলো কোথায়।
টাকা সব জুয়া খেলে হেরে গিয়েছি। আমার কাছে আর কোনো টাকা নেই। তোমার টাকাও ফেরত দিতে পারব না এখন আমি। তবে আমি তোমার টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করব।
আমি আপনাকে টাকা দিতে বলি নাই। যেই স্বামী টাকার জন্য নিজের স্ত্রীকে নির্যাতন করে। তার বাসায় আমার বোন যাবে না। এর থেকে ভালো তো আমার বোনকে ঘরে বসিয়ে রাখবো
আর কোনোদিন কী আসবে না?
না কোনোদিন যাবে না।
তোমার বোন প্রেগন্যান্ট এভাবে কী সারাজীবন বসে থাকবে ভাইয়ের বাড়িতে।
না বসে থাকবে না। বিয়ে দিয়ে দিব আমার বোনকে ।
কিহ বিয়ে দিবে মানে। কার সাথে বিয়ে দিবে। মাহমুদা প্রেগন্যান্ট এই অবস্থায় বিয়ে করবে কে?
আছে একজন।
কে সে?
আমাদের এলাকার এক বড় ভাই। অনেক আগে থেকে পছন্দ করতো মাহমুদা কে। কিন্ত মাহমুদা আপনাকে পছন্দ করতো। সেই ভাই আজও বিয়ে করেনি। এখনও মাহমুদাকে ভালোবাসে অনেক। মাহমুদ প্রেগন্যান্ট তাই কী হয়েছ তাও হাসিমুখে মেনে নিবে।
আর কিছু না ফোন কেটে দেয় মাহমুদের দুলাভাই।
মাহমুদ যা অনুমান করেছিল ঠিক তাই হয়েছে। দুই ঘন্টার মধ্যেই মাহমুদের দুলাভাই উপস্থিত। মাহমুদের বাড়িতে চলে এসেছে।
কী হলো আপনি এখানে কেন দুলাভাই?
আমি মাহমুদাকে নিয়ে যেতে এসেছি।
আমি তো বলেছিলাম মাহমুদা যাবে না।
আমি মাহমুদার সাথে কথা বলবো।
মহমুদা আপনার সাথে কথা বলবে না। আপনার সাথে কথা না বলার প্রতিজ্ঞা করেছে ।
সে কোথায় আগে বলো তারপর আমি দেখছি কথা বলে কী না বলে।
ওই যে ওর রুমের মধ্য আছে গিয়ে কথা বলেন।
মাহমুদার হাসব্যন্ড মাহমুদাকে ডাকছে কিন্ত মাহমুদা শুনেও না শোনার ভান করে বসে আছে।
কী হলো আমার সাথে কথা বলবে না?
অবশেষে মাহমুদা বলে আপনি এখানে কেন এসেছেন?
তোমাকে নিয়ে যেতে এসেছি। তোমার ভাই বলছে তোমার বিয়ে দিয়ে দিবে। তোমার বিয়ের আগে থেকে কে যেন তোমাকে পছন্দ করতো তার সাথে।
হ্যাঁ ঠিক বলছে তো। আমিও এই বিয়ের জন্য রাজি আছি।
আমি বেঁচে থাকতে তোমার অন্য কারোর সাথে বিয়ে হতে দিব না। আমার ব্যবসায় ক্ষতি হয়ে আমি অন্য রকম হয়ে গিয়েছিলাম। বন্ধুর পাল্লাই পড়ে আমি জুয়া খেলে সব টাকা হেরে গিয়েছি। আমি আর কখনও এমন কিছু করবো না মাহমুদা। আমি আগের মতো ভালো হয়ে গেছি।
আমি কীভাবে বিশ্বাস করবো আপনি ভালো হয়ে গিয়েছেন। আবার যদি আপনি এমন কাজ করেন।
আবার এমন কাজ করলে তুমি যা বলবে তাই করবো।
ওহ তার মানে আপনি আবার এমন কাজ করবেন? আপনার উত্তর এমন হওয়া উচিত ছিল না। আর কখনও এমন কাজ করবো না , এমন বলা উচিত ছিল।
আমি আপনার সংসার করতে পারি কিন্ত একটা শর্ত আছে।
কী শর্ত বলো। বাচ্চা না হওয়ার আগ পর্যন্ত আমি এখানে থাকবো।
আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোমার সব শর্ত মানতে রাজি আছি।
সাত বছর পর একটা ছোটো ছেলের হাত ধরে একটা কবরের পাশে দাড়িয়ে কবর জিয়ারত করছে মাহমুদ।
হঠাৎ ছোটো বাচ্চাটা বলে এটা কার কবর মামা।
এটা তোমার মামির কবর। বাচ্চা জন্মদানের সময় আমার স্ত্রী সন্তান দুজন মারা যায়।
বাসায় ফিরে আসলে ওয়াহেদের মা বলে এভাবে আর কতদিন এবার তো একটা বিয়ে কর। আর কতদিন একা একা থাকবি।
না মা আমি আর বিয়ে করব না। এভাবেই জীবন পার করে দিব। আমি আর কাউকে আপন করে নিব না। আমি আর কাউকে দূরে চলে যেতে দিব না।
মাহমুদের ঘরের জানালা থেকে স্ত্রীর কবর টা স্পষ্ট দেখা যায়। যখন সময় পাই এক দৃষ্টিকোণ দিয়ে কবরের দিকে তাকিয়ে থাকে।
সমাপ্ত।
শেষ পর্বের জন্য পর্ব টা আজ ছোটো হয়েছে। ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
Hasibul hasan santo, Abul basar, Sk sagor, Sk imran, Raihan khan, Badol hasan, Mr faruk and লেখাটি পছন্দ করেছে
Permissions in this forum:
You cannot reply to topics in this forum
|
|