সাদা কাগজ
Would you like to react to this message? Create an account in a few clicks or log in to continue.

Go down
Omore Faruk Raul
Omore Faruk Raul
নবাগত
নবাগত
Posts : 5
স্বর্ণমুদ্রা : 1232
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-05-31
Age : 22
Location : Dhaka
https://facebook.com/jujuthelucifer

 আমি! অসুস্থ! Empty আমি! অসুস্থ!

Sun Jun 06, 2021 12:03 am
বংশানুক্রমে আমরা পিশাচ ! খুব ভয়ংকর রকমের পিশাচ । জি না , কোন সাধারণ ভুত প্রেত কিংবা অশুভ কিছু নই । মানুষের চামড়া পড়া বিকৃত মগজের পিশাচ আমরা । হয়ত তার থেকেও বেশি কিছু ।



আমার জন্ম হয় সুন্দরবনে । বোধশক্তি হওয়ার পর থেকে আমি মাকে দেখিনি । মাঝে মাঝে মনে হয় আমি বেজন্মা নই তো? হতেও পারে । আব্বা ছিলেন সুন্দরবনের জলদস্যু । আচ্ছা , আমি তাকে আব্বা ডাকি কেন? জানি না । পশুর থেকেও নিকৃষ্ট জাত ইবলিস ছিল সে । এই পশুর কাছে আমি আমার শৈশব কাঁটাই । তাকে আমি কালেভদ্রে জমিনে নামতে দেখতাম । পানিতেই থাকতেন । পুরো সুন্দরবন চষে বেড়াতেন তার বহর নিয়ে পানিতে পানিতে । জলদস্যুদের অন্য দলের সাথে যুদ্ধ লাগে প্রায়ই ।এক দল আরেক দলের সাথে গোলাগুলি করে টিকে থাকে , এটাই বনের নিয়ম । কিন্তু আব্বার সামনে দাঁড়ানোর ক্ষমতা কারো ছিল না । যেখানে নজর দিতেন, সর্বস্ব চুষে নিঃশেষ করে দিতেন । ক্ষমতা, টাকা কিংবা অস্ত্র সবই ভরপুর ছিল তার । এতোটাই ভয়ংকর ছিলেন যে তাকে ধরতে সরকারের বিশেষ বাহিনী পাঠানো হয় দুবার । কিন্তু তার টিকিটাও ছুতে পারেনি কেউ । শুধু তার নামটাই ,মানুষ চিনতো ; চেহারা নয় । আমি চিনি । প্রায় ৬ ফুটের মানুষটা অনেকাংশে দানব । কাঁধের উপর নেমে আসা ঝাঁকড়া চুল আর সৌম্য দৃষ্টি দেখে কে বলবে এই লোকটা অবলীলায় মানুষ খুন করতে পারে চোখ বুজে । নিষ্প্রভ চোখগুলো হঠাৎ হঠাৎ জ্বলে উঠতো । মুহূর্তের মধ্যে ভয়ঙ্কর হওয়ার ক্ষমতা তার ছিল । ঘাড় চেপে ধরে মধ্যমা আর তর্জনী আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিয়ে চোখ গেলে কোটর থেকে বের করে আনতে দেখেছি । বহুবার ! আব্বার সবচেয়ে কাছের এক লোক যখন তাকে একবার ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলো , আব্বা সেদিন খুব রেগেছিলেন । বিশ্বাসঘাতকতার শাস্তিস্বরূপ তার চোখ বের করে আনেন । আমার সামনে লোকটা কাঁটা গাছের মতন পড়ে যায় । রক্তে ভেসে যায় আমার সামনের জায়গা । বাম চোখটা তখনো কোটর থেকে অর্ধেক বেরিয়ে ঝুলতে থাকে । রক্তবাহিকা তখনো ছিন্ন হয়নি কোটর থেকে ! আমার ততদিনে এগুলা সহ্য হয়ে গেছে । ছোট থেকেই লাশের পর লাশ দেখেছি । এখানে শুধু লাশ পরতো এমন না , আনন্দ উল্লাস ও হতো । প্রতি সোমবার নর্তকী আনা হত । উঁচু বুক আর সরু কটি দেখে বাছাই করে বিভিন্ন জায়গা থেকে নর্তকী আনা হত ।আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু তো ছিল ভরাট বুক । এদের নিয়ে রাতভর নাচগান চলতো । সস্তা মদে সয়লাব হয়ে যেতো সে রাতে । গ্লাস এর পর গ্লাস মদ, আফিম আর গাঁজা চলতো ভরপুর । এগুলা বসে বসে দেখা লাগতো । অশ্লীল নাচ আর নাচের ফাঁকে ফাঁকে নর্তকীদের শরীরের খাঁজে খাঁজে হাত চালানো সব হতো , সব ! বলাবাহুল্য সবথেকে আকর্ষণীয় নর্তকী আব্বার অন্তরঙ্গ স্পর্শ ছাড়া যেতে পারতো না । একবার এক মেয়ে রাজি হয়নি আব্বার কাছে যেতে ।সে রাতে সেই মেয়েকে ছাড়াই অন্য মেয়েদের চলে যেতে হয় । পরেরদিন সকালে পানিতে মেয়েটির লাশ ফেলে দেয়া হয় ; রক্তমাখা নগ্ন । নগ্ন লাশটা শেষমেশ কুমীরের পেটেই যায় ।

আমার পড়ালেখার ব্যাপারে কেউ মাথা ঘামায়নি । কে ঘামাবে? নরপশুরা পড়ালেখা করে নাকি? তাদের মত মানুষ মারতে পারলেই হত । রক্তের মাঝে বড় হয়েছি । প্রচুর রক্ত । গুলি চালানো শিখানো হয় ছোট থাকতেই । ছুরি মারা শিখেছি । হাতের সই বেশ ভাল ছিল আমার । পাখি মারতাম আমি ; ছোট একটা বন্দুক দিয়ে । যৌনতা , হিংস্রতা আর অমানুষিকতার মাঝে ডুবে যাওয়ার অবস্থা হচ্ছিল আস্তে আস্তে । কি করবো জানিনা । আমি একা একা থাকতাম । আব্বার কাছে যেতাম না , আড়ালে আবডালে থাকতাম । এটা তার চোখে পড়ে । এক সময় আমাকে তার বাহিনীর প্রধান বানানো হবে । এজন্য আব্বা আমাকে সেইভাবে প্রস্তুত করতে চেয়েছিলেন । জোর করে আমাকে তার পাশে পাশে রাখতেন । আমার সামনেই মানুষ মারতেন যাতে আমি কিছু শিখতে পারি । আমার বয়স তখন ১৩ চলে । কয়েকদিন পর ১৪ হবে । আব্বা তখন থেকেই আমাকে চোখে চোখে রাখতেন বেশি করে । যেদিন আমার ১৫ তে পা পড়লো আমার সেদিনের সব মনে আছে । খুব ভোরে আমাকে উঠানো হয় । নাস্তার পরে আব্বা আমাকে নিয়ে শিকারে যান । আমি পাখি ছাড়া কিছু মারতে পারতাম না । আব্বা কয়েকজনকে সাথে নিয়ে আমাকে সহ বনের ভিতরে গেলেন সেদিন । উদ্দেশ্য হরিণ মারবেন । বনের যেদিকে জলাশয় সেদিকে কিছু হরিণ থাকে । হাঁটতে হাঁটতে সেদিকেই গেলাম । কাছাকাছি গিয়ে থামলাম । আমরা সবাই ঝোপের আড়ালেই থাকলাম । আব্বা তখন একটা রাইফেল নিয়ে তাক করলেন । এরপর আমার আঙ্গুল ট্রিগার এ রেখে সই করে গুলি ছুঁড়লেন । একটা হরিণ পরে গেলো । বাকি সব দৌড়ে পালালো । সেই মরা হরিণ উঠিয়ে নৌকায় নেয়া হল । হরিণের মাথা কেটে সেখানের কতকখানি রক্ত আমার গালে লাগানো হল । কেন করলো জানি না , হয়তো কোন বিশ্বাস আছে আব্বার । আমি কিছুই জিজ্ঞাসা করিনি । সেদিন সারাদিন অনেক আয়োজন চললো । হরিণটা ঝলসে পুড়ানো হল । রুটি গোস্ত আর মদ নিয়ে সন্ধ্যার পর আনন্দ উল্লাস শুরু হয় । এর আগে আব্বা আমাকে একটা নতুন রাইফেল উপহার দেয় । আমার সামনের দিনগুলো যেন ভালো কাটে সে নিয়ে প্রার্থনা করা হয় । সেরাতে প্রথম আমি মদ খাই । ভাত পচানো বাংলা মদ । গা গুলিয়ে উঠেছিলো আমার । একপ্রকার ঘোরে চলে গিয়েছিলাম আমি । চুপচাপ এক কোনায় পরে ছিলাম । অপরদিকে উচ্চস্বরে গান আর নাচ চলছে । এক ফাঁকে আমার জায়গা হয় আমার কামরায় । কে এনেছে খেয়াল নেই । মরার মতন পরে ছিলাম আমার খাটে । হঠাৎ কেউ একজন কামরায় ঢুকে । অন্ধকারে সে আমার কাছে এসে আমার গায়ে হাত দেয় । নরম একটা হাত ! একটা মেয়ের হাত! ঘোরের মধ্যে আমি খালি টের পেলাম একটা নগ্ন শরীর আমার শরীরের সাথে লেপটে যাচ্ছে । সেই রাতে আমি প্রথম আদিম অনুভূতির স্বাদ পেলাম । শরীরের ভাঁজে ভাঁজে লুকানো উষ্ণতা যে কতটা ঐশ্বরিক , কতটা নিষিদ্ধ আমি টের পাই । গোলাপের দেহ নিয়ে সমস্ত রাতভর নিজের ঘোরলাগা অনুভুতি সুরভিত করে ক্ষণে ক্ষণে কেঁপে উঠছিলাম আমি । আব্বাই সেরাতে মেয়েটাকে পাঠিয়েছিলেন শরীরী আবেশে বশ করতে । এবং আমি সেদিন নষ্ট হলাম ।



কয়েক মাস পর আমি অসুস্থ হই । পুলিশের কোন এক টিকটিকি আমাদের ডেরা চিনে ফেলে । কিভাবে যেন আমাদের সাথে মিশেও যায় ।লোকটার সাহস আছে বলতে হয় । কিন্তু একদিন টুপ করে সে ধরা পরে যায় । আব্বার হাত থেকে বাঁচা দায় । দিনদুপুরে জ্যান্ত লোকটার চামড়া ছিলানো হয় । যন্ত্রণার অসুরিক চিৎকারে সেদিন সুন্দরবনের এক অংশ কেঁপে উঠছিল মনে হয় । সেই চিৎকার এতোটাই তীব্র ছিল , মনে হচ্ছিল স্বয়ং খোদা সেই চিৎকার শুনে ফেলবে । চামড়া ছিলার পরে লোকটার মাথা কাঁটা হয় । মাথা কাঁটার পরে ছিলানো দেহটাকে অদ্ভুত এক মাংসপিণ্ড লাগছিল । চামড়ার নিচের রগগুলো দেখে আমার মাথা ঝিম ঝিম করতে থাকে । কি পরিমাণ জানোয়ার হলে হাসিমুখে আব্বা সেই কাঁটা মাথা নিজের হাতে গরম পানিতে ডুবিয়ে সিদ্ধ করতে থাকে । তারপর সেই সিদ্ধ মাথা লোহার শিকে ঢুকিয়ে একপাশে ঝুলিয়ে রাখা হয় । আর এক পাশে রক্ত মাখা চামড়া পরে থাকে । আমার সহ্য ক্ষমতা এতো ছিল না । আমি অজ্ঞান হই । কোথা থেকে এক ডাক্তার ধরে আনা হয় । আমার জ্ঞান ফেরে ঠিকই কিন্তু এরপর শুরু হয় রক্ত বমি । মনে হচ্ছিল সেই লোকটার মতন কেউ আমার কলিজা বের করে কেটে কেটে রক্ত বের করছে । আমার অবস্থা এতোটাই খারাপ হয় যে আমাকে হাসপাতালে পাঠানো লাগে ; আর সাথে পাঠানো হয় কয়েকজনকে পাহারার জন্য । আমি অনেকদিন লাগিয়ে সুস্থ হই ঠিকই কিন্তু আমি ফিরিনি আর । আমি পালাই । কিভাবে পালিয়েছিলাম জানি না , মনেও নেই , মনে করতেও চাই না । কিংবা বলা যায় আমি বলতে চাচ্ছি না । সবকিছু জানা ভালো না ।

আমার এরপরের জীবন শুরু হয় ঢাকায় । এক মানবাধিকার কর্মীর বরাতে সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে আমার জীবন চলে । পড়ালেখার বন্দোবস্ত সেই করে দেয় । অতীত লুকিয়ে গা বাঁচিয়ে চলে এসেছি সবসময় । তেমন মিশিনি কারো সাথে । এমনিতেই বয়স অনেক হয়ে গিয়েছিল , পড়ালেখা পারতাম না । তাই পড়ালেখা নিয়েই পরে থাকতাম । এইদিকে আমার ভাগ্য সহায় ছিল একেবারেই । বয়স কমিয়ে আমার জন্ম সনদ করাই । ম্যাট্রিক পরীক্ষার পর একটা সরকারি কলেজে ঠাই হয় ভালোয় ভালোয় । ততদিনে পুরো ঢাকা শহর চষিয়ে বেরিয়েছি । দিনে দরজা লাগিয়ে পড়তাম পুরোটা সময় আর রাতে ঘুরতাম । আমাকে কলেজ পড়ুয়া মনে হয়নি কখনো , আমার বয়স বেশি ছিল । রাতে দেদারসে ঘুরতাম । রাতের বাতাসে আমার ফুসফুস ভরে যেতো । সিগারেট খেতাম ; গোল্ডলিফ । ওটা পকেটে থাকা বাধ্যতামূলক । একটা বিষয়ে সাবধান থাকতাম । আমার আব্বার লোকেরা যেন কোনোভাবে আমাকে খুঁজে না পায় । এই ভয়েও আমি দিনে কম বের হতাম । ঐ অতীতে আমি ফিরতে চাই না । কোনভাবেই না । তবে এই ভয় আমার বেশিদিন সহ্য করা লাগেনি । আমি তখন ইন্টার পরীক্ষার্থী । দৈনিক পত্রিকায় একদিন সকালে আমি আমার জন্মদাতার মৃত্যুর সংবাদ পাই । গোলাগুলি তে সে নিহত হয় পুলিশের সাথে । আমি তখন পুরোপুরি মুক্ত । এই খুশিতেই কিনা আমার পরীক্ষাগুলো খুবই ভালো হয় । এবারো আমার ভাগ্য সহায় হয় । আমি সরকারি একটা ভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ পাই । জিনিসটা অনেকটা রূপকথার মতন আমার কাছে । আমি কিভাবে কি করেছি বুঝিনি । ধরেই নিয়েছি আমার জীবনের মোড় ঘুরানো দিক এগুলা । আমি এবার মানুষের সাথে মিশি । ভার্সিটি লাইফ মানে হাজারো মতের , হাজারো চরিত্রের মানুষের সাথে মেলামেশা আর অবাধ একটা অভিজ্ঞতার জায়গা । আমি মিশি হাজারো মানুষের সাথে । বই পড়ি , সারাদিন পরে থাকি লাইব্রেরিতে । আড্ডা দেই , চা খাই । প্রেম , রাজনীতি, দার্শনিক আলাপ সব শুনি । ভালো লাগে আমার । কিন্তু কি যেন নেই নেই লাগে । মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেই , কিন্তু তাও ফাঁকা ফাঁকা লাগে । এই ফাঁকা ভাব হঠাৎ বদলে যায় । আমার জীবনে প্রেমিকা নামের একটা জিনিস আসে । প্রেম ! প্রেমিকা ! আমি পিশাচ শ্রেণির মানুষের কাছে বড় হওয়া একজন । আমার জীবনে প্রেম ভালবাসার কিছুই ছিল না । কোনোদিন এর মূল্যও বুঝিনি । তাই যখন বিথির সামনে আমি এক রাশ আবেগ নিয়ে দাঁড়াই ,আমার মনে হত আমি এক গিরিখাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে ; নিচে নিশ্চিত মৃত্যু । সেই গিরিখাদ হল বিথি ! আমরা প্রচুর হাঁটতাম । হেঁটে হেঁটে প্রেম করতাম । দুজনেই ধোঁয়া ঊরাতাম । চায়ের সাথে ধোঁয়া উড়িয়ে ভেজা ঠোঁটে আমরা চুমু খেতাম । আমি যখন ওর পিছু পিছু হাঁটতাম , আমার মনে স্বর্গীয় অনুভূতি জাগতো । ও যখন পাশে বসতো , আমি ছুঁয়ে দেখতাম ওর হাত , মনে হত কোন গ্রিক দেবী আমার পাশে বসে আছে যাকে ছোঁয়া যাবে না , পাওয়া যাবে না । আমার মতন বিথি এতো পাগল ছিল না প্রেমে । বিথি ছিল উগ্র । উগ্র ভালবাসার সাধক সে ।আমার জীবনের যৌনতার দ্বিতীয় ধাপের দরজা ছিল বিথি । যাকে আমি ভালোবাসি তাকে আমি অবৈধভাবে ভোগ করতে চাইনি । চেয়েছি শূন্য আকাশে ভরা চোখে চেয়ে থাকতে । আমরা দুজনে মিলে একান্তে অবসর কাটাতাম । রাধা-কৃষ্ণের মিলন তত্ত্ব , মিথুন তত্ত্ব, উতলা তত্ত্ব , উতলা রাধিকা , নির্জন নিরালার নিশীথের কদম্ব তলা , ঘনঘোর বর্ষার অভিসার কাহিনী পড়তাম একসাথে ।
……রাধার মনত তবেঁ জাগিল মদন ।
উরস্থলে কৈল রাধা দৃঢ় আলিঙ্গন ।
ধীরে ধীরে পরসিয়া রাধার জঘন ।
সরূপেসফল কাহ্নাঞি মানিল জীবন । ।
“ রাধার নিতম্বে কাহ্নাঞি দিল ঘন নখে ,
চমকি করিল রাধা আতি রতি সুখে । “


আমরা মিলে একাকার হয়ে যেতাম । ভালবাসা শুধু মনে হয় এটা বিথি মানতো না , শরীরী ভালবাসায় পূর্ণতা এটাই ছিল ওর মনোভাব । আমি গলে যেতাম বারবার । ও যা বলতো তাই মানতাম । দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ এমন করতেই পারে , হ্যাঁ তাই তো । আচ্ছা আমার এগুলা কি খুব খারাপ লাগছে শুনতে? লাগুক , আমরা খারাপই । প্রচণ্ড ঘামের মাঝেও আমরা শরীরে শরীর মেলাতাম , মিশে যেতাম একজন আরেকজনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে । আমি অন্তত এটুকু ভাবতাম বিথি আমার সব । আমার এক মাত্র অবলম্বন সামনে আগানোর । বিথিও বোধহয় এটাই মনে করতো । কিন্তু না । আমি ভুল ছিলাম । বিথি আমাকে ভালোবাসতো না । কোনোদিন ও না । আমার পাশাপাশি তার আরেকজন ছিল , সে তার সাথেও রতি লীলায় মশগুল থাকতো । আরও একটা ছেলের সাথে সে যে প্রেম করতো , আমি প্রথমে জানিনি । কেউ জানায়নি । ছেলেটা সরকারদলীয় ছাত্র নেতা ছিল , কেউ আমাকে ভয়ে কিছু বলেনি । আর বলবে কি? আমি কি কিছু করতে পারতাম? বোধহয় পারতাম না । না ছেলেটা সরে দাঁড়াবে, না আমি বিথিকে ছাড়তে পারবো । বেশ কয়েকদিন একা থাকতাম , বুক ফেটে কান্না আসতো । আমি এতদিন দেখা করিনি । বিথি জানতো না আমি সব জেনে গেছি , ওকে বলে রেখেছি আমার শরীর ভালো নেই । এখন আমার কি করা উচিৎ? ওর ধোঁকাবাজি নিয়ে ঝগড়া করবো? কৈফিয়ত চাইবো? জি না । আমি এমন না । আমার পিতা পিশাচ , আমার বংশধর পিশাচ , আমরা পশু । তাহলে আমি কীভাবে না হই? পশুত্ব আমার ভিতরেও ছিল ; শুধু দরকার পড়েনি কখনো ।ধোঁকাবাজি আর বিশ্বাসঘাতকতা আমিও সহ্য করতে পারিনা । পশুর ঔরসে পশুই জন্মায় , মানুষ না !

বিথির অন্য প্রেমিকা আমার ফ্লাটের এক রুমে পরে আছে । নিশ্চল , জ্ঞানহীন । আমি এখন যা করবো আমার আব্বা দেখতে পারলে খুশি হতেন । দেখতেন তার ছেলে তার মতন হয়েছে । বিথির প্রেমিকের নাম আনিস । কিছুক্ষণ পর আনিস নামের মানুষটার অস্তিত্ব থাকবে না আশা করা যায় । হাতলওয়ালা চেয়ারে আনিসকে বেঁধে রেখেছি , হাত দুটো দুই হাতলে বাঁধা – পা দুটোও শক্ত করে চেয়ারের পায়ার সাথে বাঁধা । আমি পাশে আরেকটা চেয়ার নিয়ে বসলাম । আমার হাতে থাকা সার্জিকাল নাইফ নিয়ে আমি আনিসের বাম হাতে বসালাম । আস্তে করে টান দিতেই রক্তের ফোয়ারা বের হতে লাগলো । এতো সহজে আনিস জাগবে না । বেশ ভালো পরিমানে কেটামিন খাইয়ে দিয়েছি ।ছোটোখাটো টর্চার এ জ্ঞান ফিরবে না । এবার কনুই এর ভাঁজ থেকে শুরু করে কব্জি পর্যন্ত নাইফ দিয়ে চামড়া আস্তে আস্তে কেটে নিচ্ছি ।আনিস এর মুখ বন্ধ ; মুখে কাপড় ঢুকিয়ে স্কচটেপ মেরে দিয়েছি । চর্বি স্তর কেটে চামড়া উঠিয়ে নিতে নিতে আনিসের জ্ঞান ফিরে । প্রচণ্ড যন্ত্রণায় আনিসের চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে । বেচারা ! কিছুই করতে পারছে না । হাত পা সব আটকানো । দুই হাতের চামড়া খুলে নিয়ে আমি এক গাদা লবন মাখিয়ে দিলাম । লাল কাটা মাংসের উপর লবন পড়তেই কেমন যেন ছটফটানি বেড়ে গেলো আনিসের । আনিস আবার জ্ঞান হারাল । আমি উঠে গিয়ে রান্না ঘরে গেলাম । নুডুলস খাবো , খুদা লেগেছে । ২০ মিনিট পর ফিরে এসে দেখলাম তখনো আনিসের জ্ঞান ফিরেনি । দুটো পাতিলে ফুটানো টগবগে গরম পানি এনে আনিসের পায়ের পাশে রাখলাম । ওর পা দুটো দুই পাতিলে টগবগে গরম পানিতে চুবিয়ে দিলাম । আহ ! ৫ মিনিটে পা পুরো সিদ্ধ হয়ে গেলো যেন ! উহ , শান্তি পাচ্ছি না তবুও । অন্য কিছু করা দরকার । গায়ের জ্বালা মিটানো দরকার । সাইকেলের চেইন হাতে পেঁচিয়ে নিলাম এইবার । এক ঘুষিতে ম্যান্ডিবল গুঁড়িয়ে দিলাম । চোয়াল ঝুলছে আনিসের । দেখেই শান্তি লাগছে ।এবার পাঁজর বরাবর লাগাতার মারতেই থাকলাম , যন্ত্রণায় কুঁচকে উঠছিল আনিস । দুই পাঁজরের ২৪ টা হাড়ের বেশ কয়েকটা ভেঙ্গে গেছে বোধহয় । দারোয়ানের কাছ থেকে একটা হাতুড়ি নিয়েছি ; মাঝারি । ওইটা দিয়ে এবার হাঁটুতে সজোরে আঘাত করলাম । টাস করে একটা শব্দ হল , আর হাঁটুর প্যাটেলা ভেঙ্গে চৌচির হতে সময় লাগলো না । আনিস একটু গুঙিয়ে উঠলো । ঝলসানো সিদ্ধ হওয়া পা আর চুরমার হওয়া হাঁটু , উফ কলিজা ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে আমার । রান্না ঘরের বড় ছুরিটা এনে পাঁজরের পাশ দিয়ে কোপাতে লাগলাম । রক্তের বন্যায় আনিসের পুরো শরীর ভিজে গেছে। হাতুড়িটা এর মধ্যেই নামিয়ে রাখতে মন চাচ্ছে না । আনিসকে উপুড় করলাম । মেরুদণ্ডের থেসারিক কশেরুকা বরাবর হাতুড়ি মারতে লাগলাম এবার । হাড় ভাঙ্গার মট মট আওয়াজ হচ্ছে খালি। পুরো মেরুদণ্ড থেতলে দেয়া শেষ । মনে হচ্ছে আমার বিথির প্রেমিকের প্রাণ পাখি বের হয়ে গেছে । নাকের সামনে আঙ্গুল ধরলাম । আমাকে ভুল প্রমাণ করে আনিস তখনো শ্বাস নিচ্ছে আস্তে আস্তে । বিরক্তিতে নাক কুচকালাম । কই মাছের প্রাণ বড় শক্ত ! তবে যেকোনো সময় মরে যেতে পারে । খাটের তলা থেকে এক বোতল এসিড বের করলাম । এটা কালকে অনেক টাকা দিয়ে জোগাড় করেছি । এসিডের বোতলের মুখটা খুলে একবার থামলাম । থেমে আনিসের দিকে তাকিয়ে ধীরস্বরে বললাম – বিথি আমার রাধিকা , আমার একান্ত নগ্নিকা।আমার রাধিকার শরীরে অন্য পুরুষের শিশ্ন দণ্ড ছোঁয়ানো পাপ । ঘোরতর পাপ !
আমি একটু একটু করে আনিসের জননাঙ্গে এসিড ঢালতে লাগলাম । পুরুষত্বের প্রমাণ ঝলসে যাচ্ছে , ঝলসানো একটা ধোঁয়া সাই করে উঠলো , বার কয়েক চক্কর খেয়ে বাতাসে মিলিয়ে গেলো । দুই পায়ের মাঝের জায়গা গলে গেছে । আনিস ও আর নেই । আজরাইলের পিছু হয়ে সে ঊর্ধ্বআসমানে পগারপার ।

বিথির সাথে দেখা করা দরকার । অনেকদিন দেখা হয় না । আগে দেখা না হলে অসহ্য লাগতো , খারাপ লাগতো কেমন যেন । এখন লাগছে না ; এখন ঘৃণা হচ্ছে । ভালোবাসার বদলে ঘৃণা আস্তে আস্তে নিংড়ে নিচ্ছে সব । আজকে বাসায় দেখা করবো । বিথি আজ আবারো উগ্র ! হালকা কিছু কথা শেষ করে আমরা আদিম হতে শুরু করলাম । পোড়া ঠোঁটের কামড়ে আজকে অন্য অনুভূতি হচ্ছে । বিথির কালো বডিস এর উপর আরোহণ করে অ্যাপোলো পর্বতের কামাতুর দেবরাজ জিউস মনে হচ্ছে নিজেকে । শাণিত নখের আঁচড়ে আমার পিঠ থেকে রক্ত ঝড়াতে লাগলো বিথি । শরীরী ভালবাসায় ঘিন ধরে যাচ্ছে আমার । তবুও সহ্য করে যাচ্ছি । পাশের লক করা রুম এ আনিসের চুরমার হওয়া লাশ এখনো আছে , বিথি জানে না । আগে ভোগপর্ব শেষ হোক । দুইহাতের সমস্ত শক্তি দিয়ে বিথির মাথা দেয়ালে চেপে ধরে রোমাঞ্চিত যমুনার উপকূলে যখন আজন্ম আচ্ছাদিত স্বাদ নেয়া শেষ হয়ে যাচ্ছে প্রায় – আমি তখন ডান হাত দিয়ে বিথির গলা চেপে ধরলাম । উত্তেজনার আতিশয্যে বিভোর বিথি এটাকে রতি লীলার অংশ হিসেবেই নিচ্ছিল । কিন্তু আমার হাত যখন ওর গলা ডেবে দিতে শুরু করলো তখন ওর হুশ হল । কিন্তু লাভ নেই , আমার সাথে ওর পারার কথা না । আমার অসুরের মতন হাত বিথির গলার কণ্ঠনালী চেপে গুঁড়িয়ে দিলো, গলার সামনের নরম হাড় তখন আর নেই । বিথি ধপাস করে আমার কোল থেকে পরে গেলো । বড় বড় ৩ টা পেরেক এনে ওর মাথার কপালের উপরে ফ্রন্টালে ঢুকিয়ে দিলাম । ঘ্যাৎ করে কপাল ভেদ করে ভিতরে চলে গেলো। বাকি পেরেকগুলো মাথার পিছনে পারাইটাল এ গাঁথলাম । ছিটকে কতোখানি কাঁচা মগজ আমার শরীরে এসে পড়লো । শেষ !আমার নরপশু আব্বার মতন আমিও বিথির চোখদুটো বের করে আনলাম অনায়াসে ।

আমি বসে আছি শূন্য চোখে । হিস্টিরিয়া রোগীর মতন অসহায় হয়ে পরে আছি আমি । হেঁচকি উঠছে এখন । ছোটবেলায় যে নরক থেকে আমি বের হতে চেয়েছিলাম , যে পশু আমি হতে চাইনি কখনো সেই একই নরপিশাচ হয়ে গেছি । অমানুষ হওয়ার অতলান্তিক খাদে আমি নিজেই নিজেকে ধাক্কা দিয়েছি । অদ্ভুত ভাবে আমার কোন অনুশোচনা হচ্ছে না । আমি রক্ত মাখা হাতে একটা গোল্ডলিফ ধরিয়ে ৬ তলার বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম । রাতের বাতাস অতিরিক্ত সুন্দর । মাথায় একটা সুর বাজছে –
‘বিমূর্ত এই রাত্রি আমার,
মৌনতার সুতোয় বোনা ,
একটি রঙিন চাদর,
সেই চাদরের ভাঁজে ভাঁজে নিঃশ্বাসেরই ছোঁয়া,
আছে ভালোবাসার চাদর। ‘


লেখকঃ ওমর ফারুক

Rasel islam, Badol hasan, Mr faruk, Sumaiya akter, Rokeya hoq, Asha islam, Rohan Ahmed and লেখাটি পছন্দ করেছে

Back to top
Permissions in this forum:
You cannot reply to topics in this forum