সাদা কাগজ
Would you like to react to this message? Create an account in a few clicks or log in to continue.

Go down
avatar
Sadik rahman
নবাগত
নবাগত
Posts : 2
স্বর্ণমুদ্রা : 1148
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-05-25

গল্পঃ দাগ  Empty গল্পঃ দাগ

Tue May 25, 2021 11:47 pm
১|
একে একে দুজন অচেনা ব্যাক্তি আমার উপর শারীরিক নির্যাতন চালানোর পর যখন তৃতীয় ব্যাক্তিটি রুমে প্রবেশ করলো তখন আমি একটুও নরা চরা করতে পারছিলাম না।
চোখের পাতা গুলো একটার সাথে আর একটা লেপ্টে আছে চোখের জলে ভিজে যাওয়ার কারণে।
সবকিছু ঝাপসা দেখছিলাম আমি।

লোকটা আসতে আসতে এগিয়ে আসছে আমার দিকে আর আমি নিথর দেহটাকে একটু টেনে নিয়ে গুটি সুটি করে বসলাম।

আসতে আসতে লোকটা যখন আমার সামনে আসলো তখন জানাল দিয়ে রুমে প্রবেশ করা হালকা আলোয় তার মুখটা দেখে চমকে গেলাম।

কারণ লোকটাকে আমি চিনি ওর নাম নোমান।
আমার এক্স।
তাহলে এসবের পিছনে নোমান...?
মনকে প্রশ্ন করলাম কিন্তু কোন উত্তর নেই।
কারণ আমার দেহ মন সব কিছুই চাইছে এই নরক থেকে মুক্তি পেতে।

নোমান ধীরে ধীরে আমার সামনে এসে বসলো।
তারপর আমার চোখের উপর থাকা চুল গুলো বাম হাত দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বললো
কেমন লাগছে মীম..??

নোমানের কথার উত্তর না দিয়ে আমি বললাম
আমার সর্বনাশ কেন করলে তুমি...?
তুমি তো এমন ছিলে না নোমান।

আমার কথা শুনে নোমার তার আঙ্গুল ঠোঁটের উপরে রেখে চোখ গুলো বড় বড় করে ইশারায় বললো চুপ করতে।

আমি ভয়ে আরো চুপসে গেলাম।

তারপর নোমান উঠে চলে গেলো।
কেন চলে গেলো বুঝতে পারলাম না।

মেডাম আপনার চা.....

পিয়ন রহিম চাচার কথায় বাস্তবে ফিরে এলাম।
আর রহিম চাচাকে বললাম জ্বী রেখে চলে যান।

রহিম চাচা চা রেখে পিছনে ফিরতে গিয়ে আবার আমার দিকে তাকালো।
আর বললো,,,
আপনার মন খারাপ...?

কেন বলুন তো

না মানে আপনাকে কেমন যেন উদাসিন লাগছে।
আর এসির মধ্যে বসে থেকেও ঘামছেন।

না তেমন কিছু না।
আপনি আসুন।

আচ্ছা।
বলে চলে গেলেন রহিম চাচা,,,,

আমি চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ দুটো বন্ধ করে একটা দির্ঘ শ্বাস ফেলতেই মোবাইলের রিংটোন বেজে উঠলো।

মোবাইল হতে নিতেই মিশুর হাসি মাখা মুখটা দেখতে পেলাম।
মিশু আমার মেয়ে তিন বছরের।
আমার আর সুজনের মানে মিশুর বাবার বিয়ে হয়েছে প্রায় আট বছর আগে।
আর উপরে যে আংশিক ঘটনাটা বললাম সেটা আমার সাথে ঘটেছে আজ থেকে দুই বছর আগে।
চলুন গল্পটা আগে বাড়াই সময় করে সবকিছুই বলবো আপনাদের। গল্পটার সাথে থাকুন সব জানতে পারবেন।

কলটা পিক করে
হ্যালো

হ্যালো আম্মু তুমি কখন আসছো...?

এই তো মা আসতেছি।
বাবা কোথায়...?

এবার একটু অভিমানের সুরে মিশু বললো বাবাও এখনো আসে নি।

ওকে মামনি আমি এক্ষুনি আসছি ওকে।

এক্ষুনি মানে এক্ষুনি আসো।

ওকে বাবা ওকে তুমি কলটা কেটে দিয়ে বুয়াকে বলো আম্মু আসতেছে ওকে..?

ওকে।
বলে কলটা কেটে দিলো মিশু
আমিও আর দেরি না করে বসকে জানিয়ে বেরিয়ে পড়লাম অফিস থেকে।

আমার বাসা অফিস থেকে খুব বেশি দুরে নয় তাই বেশিক্ষণ লাগলো না বাসায় আসতে।

আমি বাসায় এসে ফ্রেশ হতে হতে মেহমানরা আসতে শুরু করলো।

ওহহহহ আপনাদের তো বলাই হয় নি
আজ আমার মেয়ে মিশুর তৃতীয় জন্মদিন।
সেই উপলক্ষে কাছের কিছু আত্নীয় স্বজনদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছিলো আর ওরাই আসতে শুরু করছে।

মেহমান রা আসবে আর আমি নতুন কিছু পড়বো না সেটা কি হয় বলুন।
তাই আমিও আলমিরা খুলে সুজন মানে মিশুর বাবার গত মাসে কিনে দেওয়া শারীটা বের করে পড়ে নিলাম।

শারী পড়ে সবার সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছি এমন সময় মায়া আমার ছোট বোন এসে বললো কিরে আপু তুই ওই শারীটা না পড়ে এটা কোন শারী পড়েছিস।

মায়ার কথায় অবাক হয়ে গেলাম ও আবার কোন শারীর কথা বলছে।
তাই আমিও একটু রসিকতা করে বললাম।
ও আচ্ছা গত ঈদে তুই যে শাড়ীটা আমাকে দিয়েছিস সেটা....?
।।
মজা নিচ্ছিস কেন...?
আমি তোকে কখন শারী দিয়েছি..?

তাহলে কোন শাড়ী পড়বো শুনি...?

আরে কাল তোর জন্য দুলাভাই যে শাড়ীটা কিনেছে সেটা।

এবার মায়ার কথায় পুরো অবাক হয়ে গেলাম।
আর বললাম তোর দুলাভাই শাড়ী কিনেছে আমার জন্য।

হ্যা...?

কোথা থেকে...?

আরে চৌরাস্তার মোড়ের ঐ দোকান থেকে তখন আমি ওনার পিছনে ছিলাম ওনি জানতো না।
জানিস শাড়ীটা ভিশন সুন্দর এই দেখ আমি ছবি তুলে নিয়েছিলাম।।
বলে মায়া ওর মেবাইলটা আমার দিকে এগিয়ে দিলো।
আমি মোবাইলটা নিয়ে শাড়ীটা দেখলাম আসলেই সুন্দর।
কিন্তু সুজনতো আমাকে কাল রাতে বা আজ সকালে শাড়ী নিয়ে কিছু বলে নি।
কিন্তু আমি মায়াকে সেসব কিছু না বলে কথা ঘুরিয়ে বললাম আরে এটা কোন শাড়ী হলো আমার পছন্দ হয়নল নি তাই পড়িনি।
কেন এটাতে তোর বোনকে কি খারাপ লাগছে...?

নাহ তবে ঐ শাড়ীটা তোমার পছন্দ হয়নি মানতে পারলাম না।
যাক যদি তোমার পছন্দ না হয় তো তাহলে আমাকে দাও আমি পড়ি।
আমার খুব পছন্দ হয়েছে।

মায়ার শাড়ী পড়ার কথা শুনে পড়লাম মহা বিপদে।
তাই ওকে ধমক দিয়ে বললাম চুপ কর তো তখন শাড়ী শাড়ী করছিস।
তোর শাড়ী নেই।
যাহ এখান থেকে।

আমার ধমক শুনে মিশু মন খারাপ করে চলে গেলো।
আমি আবার আড্ডায় মনোযোগ দিলাম।
কিন্তু সবসময় শাড়ীটার কথা মনে হচ্ছে তাহলে কি সুজন সত্যি শাড়ী কিনেছে।
যদি কিনে থাকে তাহলে শাড়ী গেলো কোথায়...?

রাত প্রায় ৮ টা ইতিমধ্যে সবাই এসে উপস্থিত হয়েছে যতজনকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিলো।
আর সুজনও এসে পড়েছে অফিস থেকে। আমরা সবাই মিলে বসে আড্ডা দিচ্ছি।

কিন্তু সুজন আসার পর লক্ষ করছি কেমন যেন ছটফট করেছে আর বারবার গেটের দিকে তাকাচ্ছে।

এমন সময় হঠাৎ করে একটা মেয়ে বয়স ২২-২৫ এর মধ্যে হবে সুন্দর একটা শাড়ী পরে বাসায় প্রবেশ করলো। বলার অপেক্ষা রাখে না এটা সেই শাড়ী যেটা একটু আগে মায়া আমাকে দেখিয়ে বলেছি কাল সুজন এই শাড়ীটা কিনেছে।
মেয়েটা রুমে প্রবেশ করেই আমাদের দিকে আসতে লাগলো।

এবং সোজা আমার সামনে এসে দাড়িয়ে আামর দিকে তার হাত বারিয়ে দিয়ে বললো
hiii...im sadia
.
আমি পানষে একটা হাসি দিয়ে বললাম আমি মীম।

তারপর মেয়েটা সুজনের পাশে বসতে বসতে বললো।
হুমমম জানি তুমি সুজন ভাইয়ার স্ত্রী তাই তো।

আমি আবারো পানষে এটা হাসি দিয়ে বললাম হুমমম।
কিন্তু আপনি কে
আপনাকে তো চিনলাম না।

বললাম তো আমি সাদিয়া।

ওহহহহহ
আমি আর কিছু বললাম না কারণ বাসায় এখন অনেক মানুষ আমি চাই না এই বিষয়টা নিয়ে সিন ক্রিয়েট হোক।

এরপর
আমি শুধু অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখলাম দুজনের দিকে।
নিজের চোখকে নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।
একে অন্যের সাথে হেসে কথা বলা,
হাসার সময় গায়ে পরা এসব আমি দেখে না দেখার ভান করলেও বাসার মানুষদের চোখে ঠিক ই পরলো।
আর সবাই এসে আমাকে বলতে লাগলো মেয়েটা কে।।।।?
আর সুজনের সাথে ও কি এমন সম্পর্ক যে ওরা এভাবে কথা বলছে...?

ওরা দুজন ভালো বন্ধু তাই এতোটা ক্লোজ এসব বলেই সবাইকে থামানোর চেষ্টা করছিলাম আমি।

মুশুর জন্মদিনের পার্টি শেষ হলো প্রায় রাত ১ টার দিকে।
মেহমানরা যেহেতু সবাই কাছের তাই সবাই চলে গেলো যে যার বাসায়।
শুধু সেই মেয়েটা ছাড়া।

আমি মিশুকে তার রুমে রেখে নিজের রুমে এসে বসে আছি সুজনের আসার অপেক্ষায়।
সুজন সেই মেয়েটাকে তার রুমে নিয়ে গেছে রেখে আসতে।

কিছুক্ষণ পর সুজন আসলো।
এসে আয়নার সামনে দাড়িয়ে পাঞ্জাবির বোতাম খুলছে আমি একটু এগিয়ে গিয়ে সুজনকে জরিয়ে ধরে বললাম।

আমাকে ঠকাচ্ছো না তো...?

আমার কথায় সুজন একটু রাগের সুরে বললো রাতে এসব নাটকের মানে কি..?
আর ঠকাচ্ছি মানে...?

ঐ মেয়েটা কে...?

সেটা সময় হলে জানবে।
বলে আমার হাত ছাড়িয়ে ধপাশ করে শুয়ে পরলো।

আমি আবার বললাম।
কে ঐ মেয়েটা...?

এবার আরো রেগে গিয়ে সুজন বললো বললাম তো সময় হলে জানবে আর ঠাকানোর কথা মুখেও আানবে না।
কারণ বড় ঠকবাজ তো তুমি...?


।।

আদিল খান

Sahin, Santo, Shuvo, Hasibul hasan, Akash, Onik, Babul jalaluddin and লেখাটি পছন্দ করেছে

Back to top
Permissions in this forum:
You cannot reply to topics in this forum