- Raiveনবাগত
- Posts : 5
স্বর্ণমুদ্রা : 1155
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-05-29
লওনা - তরিকুল ইসলাম
Sat May 29, 2021 2:06 am
ঘটনাটি আমার একটা ছোটো বোন আলোহাকে উৎসর্গ করে লেখা....যার সাথে রক্তের কোনো সম্পর্ক না থাকলেও মনের অনেক মিল আছে।
ঘটনাটি আমার বড়ো ভাবির ছোটো ভাইয়ের সাথে ঘটে যাওয়া ১০০ % সত্যি ঘটনা।
লওনা মানে হলো শয়তানের আছড়.....
ভূতে ভয় পায় না এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।
ভুত প্রেত নিয়ে মানুষের মনে অজানা ভয় আর আতংক কাজ করে।
আর এই ভয় ও আতংকের সুযোগ নিয়ে মানুষকে বিপদে ফেলে শয়তান।
কেউ যদি আকস্মিক কোনো দেখে ভয় পেয়ে মন চমকে যায়.....ঠিক তখনই তার সাথে ভুতের আছড় বা লওনা হয়।
পৃথিবী সৃষ্টি থেকে এখন প্রযন্ত যতো মানুষ আসছে গেছে আরো যারা আসবে তাদের সবাই বিতারিত শয়তান ধোকা দিয়েছে.....আর ভবিষ্যতে ও দিবে।
শুধু সর্বোশ্রেষ্ঠ মহা মানব মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে শয়তান কোনো দিন ধোকা দিতে পারে নি.....
আর পৃথিবীর ধ্বংসের আগে কোনো শয়তান তার রুপ ও ধারন করতে পারবে ও না।
শয়তানের মুল কাজ ই হলো মানব জাতিকে ধোকা দেয়া........আর ভয় দেখানো।
ভুত প্রেত চলাচলে প্রধান সময় হলো সাঝের বেলা।
এই সাঝের বেলা যদি কোনো মানুষ কোনো কিছু দেখে ভয় পায় বা মন চমকে যায় তাহলেই তার সাথে ভাতের আছড় বা লওনা হয়ে যায়।
তেমনই একটা সত্যি ঘটনা নিয়ে আমার আজকের লেখা।
[Only admins are allowed to see this link]্ব ১
ঝালকাঠি সদর উপজেলার ছোট্ট একটা গ্রাম বিনয়কাঠি।
ছবির মতো সুন্দর গ্রামটি।
এক পাশে প্রবাহিত নদী আর অন্য পাশে বিস্তৃত ফসলের মাঠ।
কালের বিবর্তনে সেই নদি এখন আর নেই।
শুকিয়ে মরা খাল হয়ে গেছে।
ঘটনার কেন্দ্র যেই গ্রামটাকে নিয়ে সেই গ্রামে ঢুকার পথে এক পাশে গ্রামীণ ব্যাংক আর অন্য পাশে প্রবাহিত শুকিয়ে যাওয়া সেই নদী......
তো বিনয়কাঠি গ্রামের সরদার বাড়ি ঘটনার কেন্দ্রস্থল।
সরদার বাড়ি আমার বড়ো ভাবির বাবার বাড়ি।
ভাবিরা হলো তিন বোন এক ভাই.....
ভাইটা সবার ছোটো.....নাম নোমান।
ভাবির বাবার বাড়ির সামনে মস্তো বড়ো একটা উঠোন।
সেই উঠোন পেরিয়ে সামনে একটা তেতুল গাছ।
এই তেতুল গাছের অনেক পুরনো ইতিহাস আছে।
গায়ের লোকজন বলাবলি করে বা লোক মুখে প্রচলিত আছে তেতুল গাছটা নাকি ভালো না...খারাপ কিছু বসবাস করে সেই গাছে।
গাছটার বেড়ে ওঠাও নাকি একটা ইতিহাস.....
কেউ নাকি তেতুল গাছটা লাগায় নি...ওটা নিজে নিজেই ওখানে বেড়ে উঠেছে।
অনেক আগে গ্রামের অনেকে অনেক কিছু দেখেছে ওই গাছটায় বা গাছের নিচে।
ভাবির বাবা মানে আমার তালই ও নাকি বেশ কিছু বছর আগে কোনো এক রাতে একটা ছোটো মেয়েকে ওই গাছের নিচে বসে কাদতে দেখেছিলেন.........
তো যা হোক বাড়ির উঠোনের পর সেই তেতুল গাছটা......
এরপরই সেই শুকিয়ে যাওয়া নদি বা এখন খাল বলাই শ্রেয়।
তো গরমের দিন সরদার বাড়ির সবাই শেষ বিকেলে সেই খাল পাড়ে বসে সময় কাটায় গল্প গুজব করে।
তো৷ আসি মুল ঘটনায়......
সাল ২০০৫/০৬
নোমান তখন ৮ম শ্রেণিতে পরে।
পড়াশুনা আর খেলাধুলা এই নিয়ে ওর দিন ভালোই কাটছিলো।
বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে তাই আদর ও বেশি ওর জন্য।
তো ২০০৫ এর শেষ দিকে একদিন সন্ধ্যার পর নোমান রা সবাই যখন ঘরের ভিতরে।
সবাই যে যায় মতো কাজ করছিলো.....
হঠাৎই ওদের গোয়াল ঘর থেকে গরু গুলো জোরে ডেকে উঠলো।
বলে রাখা ভালো......
নোমানদের তখন চারটা গরু ছিলো।
আর নোমানের মা নিজে গিয়ে সন্ধ্যায় গরু গুলো গোয়ালে বেধে রেখে এসেছে।
তো যাই হোক।
গরু গুলো ডাকাডাকিতে নোমান আর ওর বাবা ঘর থেকে বাইরে বের হয়ে আসেন...গরু গুলো কেনো ডাকছে এটা দখার জন্য বাবা ছেলে গোয়াল ঘরের দিকে এগিয়ে যায়।
নোমানের বাবা তখন ভাবছেন চোর টোর আসলো না তো আবার।
ওদের গোয়াল ঘরের কোনায় একটা লাইট ছিলো ওটা জ্বলছিলো সন্ধ্যা থেকে।
কিন্তু নোমান আর ওর বাবা ঘর থেকে বের হয়ে গোয়াল ঘরের দিকে গিয়ে দেখেন গোয়াল ঘরের সামনের লাইটটা জ্বলছে না.....
নোমানের ছোট্টো মনে তখন একটু খটকা লাগলো।
সামনে অন্ধকার দেখে ভয়ে নোমান ওর বাবার হাতটা ধরে ফেলে।
নোমান ওর বাবার হাত ধরে সামনে এগুতে থাকে।
ওরা গোয়ান ঘরের সামনে গিয়ে দেখে গোয়াল ঘরে তিনটা গরু ভয়ার্ত ভাবে দাপাদাপি করছে আর ডাকছে।
মানে দড়িতে বাধা ছিলো.....সেই দড়ি নিয়ে টানাটানি করছে গরু গুলো।
নোমানের বাবা মানে ফজলু সরদার দেখলো একটা গরু নেই সেখানে......
সে বিষম একটা ধাক্কা খেলেন।
তখন মনে মনে ভাবছেন গরুটা গেলো কোথায়?
কেউ নিয়ে গেলো না তো.....
ভাবলেন আশপাশটা একটু খুজে দেখবেন.....
তো যাহোক তিনি নোমানকে নিয়ে ছুটে বাসায় গিয়ে একটা টর্চ লাইট নিয়ে আসলেন।
বাড়িতে তখন পুরুষ সে একা..... আর নোমানকে তো ছোটোই বলা যায়।
এরপর লাইট নিয়ে আশেপাশে খোজাখুজির পর গরুটাকে পাওয়া গেলো.......
সেই তেতুল গাছের নিচের শুকিয়ে যাওয়া নদিতে মরে পরে আছে গরুটা।
মানে বাড়ির সামনের মরা সেই খালটায় গরুটাকে কেউ ঘাড় মটকে মেরে ফেলে রেখে গেছে।
খালের পানিতে গরুটা তখন ভাসছে।
মৃত গরুটাকে ঘাড় উল্টে ভাসতে দেখে নোমানের কিশোর মনে কেমন একটা ভয় ঢুকে যায়।
নোমান সঙ্গে সঙ্গে ওর বাবার হাতটা জোরে আকড়ে ধরে।
ওই দিন ওই যে নোমানের মন চমকেছিলো গরুর লাশটা দেখে.....
সেইটাই নোমানের জন্য কাল হয়ে দাড়ায়।
ওইদিন সেই খাল পাড়েই লওনা হয় নোমানের সাথে।
আর নোমানের মন চমকাবেই না কেনো?
মৃত গরুটার ঘাড়টা এমন ভাবে ভাঙ্গা হয়েছিলো।
যে গরুর শরির একদিকে মাথা শরিরের উল্টো মানে বিপরিত দিকে।
নোমান তখন ওর বাবার হাত ধরে ভয়ে থর থর করে কাপছে।
আর ফজলু সরদার তখন ভাবছে তার এতো বড়ো ক্ষতি টা কে করলো?
এতো বড়ো একটা গরুকে টেনে নিয়ে এসে মেরে খালে ফেলে রাখা চারটি খানি কথা নয়।
কে করতে পারে এই কাজ......
একটা কথা বলে রাখা ভালো তারা কিন্তু তখনো মনের ভুলেও ভাবেনি যে এটা অশরীরী কিছুর কাজ??
তো ওই রাতটা কোনো ভাবে পার করে....... পর দিন গরুটাকে খাল থেকে তোলা হয়।
গ্রামে তখন ফজলু সরদারের বাড়ির গরু মরার কথা মুখে মুখে ফিরছে।
তো সরদার বাড়ির কেউ কিছু ভেবে কুল কিনারা করতে পারলো না আর.....কে করতে পারে এমন কাজ?
এদিকে নোমার সারাদিন ভয়ে সিটিয়ে ছিলো।
ওই রাতের পর কেউ ওকে ডাক দিলেও ভয় পাচ্ছে যেনো।
তো দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলো।
নোমান ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করে নি সেই দিন।
চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে রাত নেমে এলো।
আজ সন্ধ্যার পর থেকেই তেতুল গাছটা কেমন যেনো নোমানকে টানছে।
সন্ধ্যার পর প্রচুর ভয় ভয় করছে তারপরও তেতুল গাছটা দেখতে নোমানের খুব ইচ্ছে করছে আজ......
তো বাসার সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত এই ফাকে নোমান হাতে একটা টর্চ নিয়ে চুপি চুপি ঘরের দরজা খুলে বাইরে বের হয়ে আসে।
উঠোনে এসে মাঝামাঝি দাড়ায়।
ভয় ভয় ও করছে তখন ওর।।
তাই তেতুল গাছের কাছে যায় নি.......
চোখের সামনে কাল রাতের মৃত গরুর মুখটা ভাসছে।
অন্ধকারে সামনে তাকিয়ে আছে.....ঠিক তখন ওর কেমন যেনো মনে হলো আরে আজব তো??
তেতুল গাছটা তো ওখানে নেই !
গাছটা হাওয়া হয়ে গেলো নাকি?
বিকেলে ও তো দেখলাম !!
উটোনের পর সামনাটা পুরো ফাকা লাগছে।
চোখের ভুল ভেবে গাছটা টর্চের আলো মারতেই...... নোমানের চোখ কপালে উঠলো।
মাগো বলে জোড়ে একটা চিৎকার দিলো।
নোমান যা দেখলো......
তেতুল গাছের একটা মোটা ডালের সাথে একজন মহিলা গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে আছে....
নোমান গাছের দিকে আলো ফেলতে দেখলো বাতাসে মহিলার লাশটা একটু একটু করে নড়ছে আর লাশটা ওর দিকে ঘুরতে শুরু করেছে।
মহিলার লাশটা পুরোপুরি ঘুরতেই নোমান দেখলো গাছের সাথে যে মহিলা ঝুলছে সেটা আর কেউ নয় এই গায়েরই ছলিমা বানুর লাশ।
ছলিমা বানুকে দেখে নোমান থরথর করে কাপতে থাকে।
নোমানের কাপতে থাকার আরো একটা কারন হলো।ছলিমা বানু ১ বছর আগে মারা গেছেন.......
ও মাগো বলে চিৎকার দিয়ে ওখানেই অজ্ঞান হয়ে পরে যায় নোমান।
হাতে ধরে থাকা টর্চ লাইটটা হাত থেকে ছিটকে পরে যায়।
অজ্ঞান হবার আগে নোমান ওর হাতের টর্চের আলোতে এই টুকুই দেখেছে।
টর্চের আলো ছলিমার মুখে পড়তেই....
ছলিমা বিবির লাশটা মুখে বিদঘুটে একটা হাসি নিয়ে নোমানের দিকে তাকিয়ে আছে।
আর এটা দেখে নোমান ওখানে জ্ঞান হারিয়ে পরে যায়.....আর নোমানের হাতে ধরা টর্চটা ছিটকে পরে যায় মাটিতে.................................চলবে।
ঘটনাটি আমার বড়ো ভাবির ছোটো ভাইয়ের সাথে ঘটে যাওয়া ১০০ % সত্যি ঘটনা।
লওনা মানে হলো শয়তানের আছড়.....
ভূতে ভয় পায় না এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।
ভুত প্রেত নিয়ে মানুষের মনে অজানা ভয় আর আতংক কাজ করে।
আর এই ভয় ও আতংকের সুযোগ নিয়ে মানুষকে বিপদে ফেলে শয়তান।
কেউ যদি আকস্মিক কোনো দেখে ভয় পেয়ে মন চমকে যায়.....ঠিক তখনই তার সাথে ভুতের আছড় বা লওনা হয়।
পৃথিবী সৃষ্টি থেকে এখন প্রযন্ত যতো মানুষ আসছে গেছে আরো যারা আসবে তাদের সবাই বিতারিত শয়তান ধোকা দিয়েছে.....আর ভবিষ্যতে ও দিবে।
শুধু সর্বোশ্রেষ্ঠ মহা মানব মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে শয়তান কোনো দিন ধোকা দিতে পারে নি.....
আর পৃথিবীর ধ্বংসের আগে কোনো শয়তান তার রুপ ও ধারন করতে পারবে ও না।
শয়তানের মুল কাজ ই হলো মানব জাতিকে ধোকা দেয়া........আর ভয় দেখানো।
ভুত প্রেত চলাচলে প্রধান সময় হলো সাঝের বেলা।
এই সাঝের বেলা যদি কোনো মানুষ কোনো কিছু দেখে ভয় পায় বা মন চমকে যায় তাহলেই তার সাথে ভাতের আছড় বা লওনা হয়ে যায়।
তেমনই একটা সত্যি ঘটনা নিয়ে আমার আজকের লেখা।
[Only admins are allowed to see this link]্ব ১
ঝালকাঠি সদর উপজেলার ছোট্ট একটা গ্রাম বিনয়কাঠি।
ছবির মতো সুন্দর গ্রামটি।
এক পাশে প্রবাহিত নদী আর অন্য পাশে বিস্তৃত ফসলের মাঠ।
কালের বিবর্তনে সেই নদি এখন আর নেই।
শুকিয়ে মরা খাল হয়ে গেছে।
ঘটনার কেন্দ্র যেই গ্রামটাকে নিয়ে সেই গ্রামে ঢুকার পথে এক পাশে গ্রামীণ ব্যাংক আর অন্য পাশে প্রবাহিত শুকিয়ে যাওয়া সেই নদী......
তো বিনয়কাঠি গ্রামের সরদার বাড়ি ঘটনার কেন্দ্রস্থল।
সরদার বাড়ি আমার বড়ো ভাবির বাবার বাড়ি।
ভাবিরা হলো তিন বোন এক ভাই.....
ভাইটা সবার ছোটো.....নাম নোমান।
ভাবির বাবার বাড়ির সামনে মস্তো বড়ো একটা উঠোন।
সেই উঠোন পেরিয়ে সামনে একটা তেতুল গাছ।
এই তেতুল গাছের অনেক পুরনো ইতিহাস আছে।
গায়ের লোকজন বলাবলি করে বা লোক মুখে প্রচলিত আছে তেতুল গাছটা নাকি ভালো না...খারাপ কিছু বসবাস করে সেই গাছে।
গাছটার বেড়ে ওঠাও নাকি একটা ইতিহাস.....
কেউ নাকি তেতুল গাছটা লাগায় নি...ওটা নিজে নিজেই ওখানে বেড়ে উঠেছে।
অনেক আগে গ্রামের অনেকে অনেক কিছু দেখেছে ওই গাছটায় বা গাছের নিচে।
ভাবির বাবা মানে আমার তালই ও নাকি বেশ কিছু বছর আগে কোনো এক রাতে একটা ছোটো মেয়েকে ওই গাছের নিচে বসে কাদতে দেখেছিলেন.........
তো যা হোক বাড়ির উঠোনের পর সেই তেতুল গাছটা......
এরপরই সেই শুকিয়ে যাওয়া নদি বা এখন খাল বলাই শ্রেয়।
তো গরমের দিন সরদার বাড়ির সবাই শেষ বিকেলে সেই খাল পাড়ে বসে সময় কাটায় গল্প গুজব করে।
তো৷ আসি মুল ঘটনায়......
সাল ২০০৫/০৬
নোমান তখন ৮ম শ্রেণিতে পরে।
পড়াশুনা আর খেলাধুলা এই নিয়ে ওর দিন ভালোই কাটছিলো।
বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে তাই আদর ও বেশি ওর জন্য।
তো ২০০৫ এর শেষ দিকে একদিন সন্ধ্যার পর নোমান রা সবাই যখন ঘরের ভিতরে।
সবাই যে যায় মতো কাজ করছিলো.....
হঠাৎই ওদের গোয়াল ঘর থেকে গরু গুলো জোরে ডেকে উঠলো।
বলে রাখা ভালো......
নোমানদের তখন চারটা গরু ছিলো।
আর নোমানের মা নিজে গিয়ে সন্ধ্যায় গরু গুলো গোয়ালে বেধে রেখে এসেছে।
তো যাই হোক।
গরু গুলো ডাকাডাকিতে নোমান আর ওর বাবা ঘর থেকে বাইরে বের হয়ে আসেন...গরু গুলো কেনো ডাকছে এটা দখার জন্য বাবা ছেলে গোয়াল ঘরের দিকে এগিয়ে যায়।
নোমানের বাবা তখন ভাবছেন চোর টোর আসলো না তো আবার।
ওদের গোয়াল ঘরের কোনায় একটা লাইট ছিলো ওটা জ্বলছিলো সন্ধ্যা থেকে।
কিন্তু নোমান আর ওর বাবা ঘর থেকে বের হয়ে গোয়াল ঘরের দিকে গিয়ে দেখেন গোয়াল ঘরের সামনের লাইটটা জ্বলছে না.....
নোমানের ছোট্টো মনে তখন একটু খটকা লাগলো।
সামনে অন্ধকার দেখে ভয়ে নোমান ওর বাবার হাতটা ধরে ফেলে।
নোমান ওর বাবার হাত ধরে সামনে এগুতে থাকে।
ওরা গোয়ান ঘরের সামনে গিয়ে দেখে গোয়াল ঘরে তিনটা গরু ভয়ার্ত ভাবে দাপাদাপি করছে আর ডাকছে।
মানে দড়িতে বাধা ছিলো.....সেই দড়ি নিয়ে টানাটানি করছে গরু গুলো।
নোমানের বাবা মানে ফজলু সরদার দেখলো একটা গরু নেই সেখানে......
সে বিষম একটা ধাক্কা খেলেন।
তখন মনে মনে ভাবছেন গরুটা গেলো কোথায়?
কেউ নিয়ে গেলো না তো.....
ভাবলেন আশপাশটা একটু খুজে দেখবেন.....
তো যাহোক তিনি নোমানকে নিয়ে ছুটে বাসায় গিয়ে একটা টর্চ লাইট নিয়ে আসলেন।
বাড়িতে তখন পুরুষ সে একা..... আর নোমানকে তো ছোটোই বলা যায়।
এরপর লাইট নিয়ে আশেপাশে খোজাখুজির পর গরুটাকে পাওয়া গেলো.......
সেই তেতুল গাছের নিচের শুকিয়ে যাওয়া নদিতে মরে পরে আছে গরুটা।
মানে বাড়ির সামনের মরা সেই খালটায় গরুটাকে কেউ ঘাড় মটকে মেরে ফেলে রেখে গেছে।
খালের পানিতে গরুটা তখন ভাসছে।
মৃত গরুটাকে ঘাড় উল্টে ভাসতে দেখে নোমানের কিশোর মনে কেমন একটা ভয় ঢুকে যায়।
নোমান সঙ্গে সঙ্গে ওর বাবার হাতটা জোরে আকড়ে ধরে।
ওই দিন ওই যে নোমানের মন চমকেছিলো গরুর লাশটা দেখে.....
সেইটাই নোমানের জন্য কাল হয়ে দাড়ায়।
ওইদিন সেই খাল পাড়েই লওনা হয় নোমানের সাথে।
আর নোমানের মন চমকাবেই না কেনো?
মৃত গরুটার ঘাড়টা এমন ভাবে ভাঙ্গা হয়েছিলো।
যে গরুর শরির একদিকে মাথা শরিরের উল্টো মানে বিপরিত দিকে।
নোমান তখন ওর বাবার হাত ধরে ভয়ে থর থর করে কাপছে।
আর ফজলু সরদার তখন ভাবছে তার এতো বড়ো ক্ষতি টা কে করলো?
এতো বড়ো একটা গরুকে টেনে নিয়ে এসে মেরে খালে ফেলে রাখা চারটি খানি কথা নয়।
কে করতে পারে এই কাজ......
একটা কথা বলে রাখা ভালো তারা কিন্তু তখনো মনের ভুলেও ভাবেনি যে এটা অশরীরী কিছুর কাজ??
তো ওই রাতটা কোনো ভাবে পার করে....... পর দিন গরুটাকে খাল থেকে তোলা হয়।
গ্রামে তখন ফজলু সরদারের বাড়ির গরু মরার কথা মুখে মুখে ফিরছে।
তো সরদার বাড়ির কেউ কিছু ভেবে কুল কিনারা করতে পারলো না আর.....কে করতে পারে এমন কাজ?
এদিকে নোমার সারাদিন ভয়ে সিটিয়ে ছিলো।
ওই রাতের পর কেউ ওকে ডাক দিলেও ভয় পাচ্ছে যেনো।
তো দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলো।
নোমান ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করে নি সেই দিন।
চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে রাত নেমে এলো।
আজ সন্ধ্যার পর থেকেই তেতুল গাছটা কেমন যেনো নোমানকে টানছে।
সন্ধ্যার পর প্রচুর ভয় ভয় করছে তারপরও তেতুল গাছটা দেখতে নোমানের খুব ইচ্ছে করছে আজ......
তো বাসার সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত এই ফাকে নোমান হাতে একটা টর্চ নিয়ে চুপি চুপি ঘরের দরজা খুলে বাইরে বের হয়ে আসে।
উঠোনে এসে মাঝামাঝি দাড়ায়।
ভয় ভয় ও করছে তখন ওর।।
তাই তেতুল গাছের কাছে যায় নি.......
চোখের সামনে কাল রাতের মৃত গরুর মুখটা ভাসছে।
অন্ধকারে সামনে তাকিয়ে আছে.....ঠিক তখন ওর কেমন যেনো মনে হলো আরে আজব তো??
তেতুল গাছটা তো ওখানে নেই !
গাছটা হাওয়া হয়ে গেলো নাকি?
বিকেলে ও তো দেখলাম !!
উটোনের পর সামনাটা পুরো ফাকা লাগছে।
চোখের ভুল ভেবে গাছটা টর্চের আলো মারতেই...... নোমানের চোখ কপালে উঠলো।
মাগো বলে জোড়ে একটা চিৎকার দিলো।
নোমান যা দেখলো......
তেতুল গাছের একটা মোটা ডালের সাথে একজন মহিলা গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে আছে....
নোমান গাছের দিকে আলো ফেলতে দেখলো বাতাসে মহিলার লাশটা একটু একটু করে নড়ছে আর লাশটা ওর দিকে ঘুরতে শুরু করেছে।
মহিলার লাশটা পুরোপুরি ঘুরতেই নোমান দেখলো গাছের সাথে যে মহিলা ঝুলছে সেটা আর কেউ নয় এই গায়েরই ছলিমা বানুর লাশ।
ছলিমা বানুকে দেখে নোমান থরথর করে কাপতে থাকে।
নোমানের কাপতে থাকার আরো একটা কারন হলো।ছলিমা বানু ১ বছর আগে মারা গেছেন.......
ও মাগো বলে চিৎকার দিয়ে ওখানেই অজ্ঞান হয়ে পরে যায় নোমান।
হাতে ধরে থাকা টর্চ লাইটটা হাত থেকে ছিটকে পরে যায়।
অজ্ঞান হবার আগে নোমান ওর হাতের টর্চের আলোতে এই টুকুই দেখেছে।
টর্চের আলো ছলিমার মুখে পড়তেই....
ছলিমা বিবির লাশটা মুখে বিদঘুটে একটা হাসি নিয়ে নোমানের দিকে তাকিয়ে আছে।
আর এটা দেখে নোমান ওখানে জ্ঞান হারিয়ে পরে যায়.....আর নোমানের হাতে ধরা টর্চটা ছিটকে পরে যায় মাটিতে.................................চলবে।
Nasim, Mr.twist, Mr kiddo, Mahmud, Akash, Asraf, Onik and লেখাটি পছন্দ করেছে
- Raiveনবাগত
- Posts : 5
স্বর্ণমুদ্রা : 1155
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-05-29
Re: লওনা - তরিকুল ইসলাম
Sat May 29, 2021 2:07 am
ঘটনাটি আমার বড়ো ভাবির ছোটো ভাইয়ের সাথে ঘটে যাওয়া ১০০ % সত্যি ঘটনা।
লওনা মানে হলো শয়তানের আছড়.....
ভূতে ভয় পায় না এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।
ভুত প্রেত নিয়ে মানুষের মনে অজানা ভয় আর আতংক কাজ করে।
আর এই ভয় ও আতংকের সুযোগ নিয়ে মানুষকে বিপদে ফেলে শয়তান।
২|
নোমান ছলিমা বানুর লাশ তেতুল গাছে ঝুলতে দেখে মাগো বলে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে......
নোমানের চিৎকার শুনে ঘর থেকে সবাই বের হয়ে আসে.....তারা বাইরে এসে দেখে নোমান উঠানে পরে আছে।
আর টর্চটা নোমানের শরীর থেকে কিছুটা দুরে মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
নোমানের মা আর ওর বোনেরা নোমানের এই অবস্থা দেখে কান্নাকাঠি শুরু করে দেয়....
এরপর ফজলুর সরদার মানে নোমানের বাবা আর নোমানের বোনেরা ধরাধরি করে নোমানকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যায়।
এখন আসি কে এই ছলিমা বানু..........
ছলিমা বানু গায়ের গরিব নিরিহ এক মহিলা।
স্বামী মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন।
স্বামী মারা গেছেন বেশ কিছু বছর আগে।
এরপর ছলিমা বানু গ্রামের বাজার থেকে অল্প কিছু মাছ কিনে এনে.......ঝুড়িতে করে নিয়ে মানুষের বাসায় বাসায় ফেরী করতেন।
এভাবেই নিজের ভরন পোষণ করতেন।
ছলিমা বানুর বাম পায়ে একটু সমস্যা ছিলো।
তার ছিলো পা ফোলা রোগ।
মানে তার বাম পা টা ডান পায়ের তুলনায় অস্বাভাবিক ফোলা।
তাকে দেখলে গায়ের বাচ্চারা ভয় পেতো।
তো সেই ছলিমা বানুকে বছর খানেক আগে এক সকালে গ্রামের সেইই খালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
তার লাশটা পাওয়া যায় গ্রামের ওই মাথায় মানে খালের ওই মাথায়।
লাশটা খালের পানিতে ভাসছিলো।
আর সেই ছলিমা বানুর লাশ আজ রাতে তেতুল গাছে ঝুলতে দেখেছে নোমান........
নোমানকে বাসা নিয়ে এসে নোমানের চোখেমুখে পানির ছিটা দিলে পর নোমানের জ্ঞান ফিরে।
জ্ঞান ফিরে পেয়ে নোমান ভয়ে কাপতে থাকে।
এরপর চারদিকে তাকিয়ে আপনজন সবাইকে দেখতে পেয়ে তোতলাতে থাকে।
আর ওর বাবার দিকে ফিরে বলে আব্বা আব্বা ওই তেতুল গাছটায় একটা লাশ ঝুলছে.....তোমরা গিয়ে দেখো??
ফজলু সরদার ছেলের এই কথা শুনে প্রথমে ধাক্কা খায়।
তিনি ছেলের দিকে ভালো করে তাকিয়ে বোজার চেষ্ঠা করেন......ছেলে কি বলছে।
তিনি বুজলেন নোমান কিছু দেখে ভয় পেয়ে থাকতে পারে হয়তো।
এরপর জানতে চায় কার লাশ বাবা?
নোমান তখন বলে আব্বা ওটা ছলিমা বানুর লাশ.......
ফজলু সরদার মুহুর্তে থমকে যায়।
তিনি নোমানকে অভয় দিয়ে বলেন।
কি বলছিস বাবা......কোন ছলিমা?
গ্রামে যে ছলিমা ছিলো.......সে তো অনেক দিন আগেই মারা গেছে।
এরপর একটু থেমে আবার বলেন।
এটা তোর চোখের বা মনের ভুল বাবা।
তুই অন্ধকার এ কিছু দেখে ভয় পেয়েছিস হয়তো।
নোমান তখন গলায় জোর দিয়ে বলে জানো আব্বা ছলিমা বানু আমার দিকে চোখ খুলে তাকিয়ে ছিলো আর হাসছিলো।
নোমানের বাবা তখন নোমানের মায়ের মুখে তাকালো
তারা যা বোজার বুজলো.......ছেলে হয়তো ভয় পেয়েছে প্রচুর।
এরপর তারা নোমানকে অভয় দিলো.....
বললো ও সব কিছুই নয় বাবা......সবটা তোর মনের ভুল।
এরপর নোমান কিছুটা স্বভাবিক হলে ফজলু সরদার ওই রাতেই মসজিদে ইমাম সাহেবকে ডেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
মসজিদের ইমাম সাহেব নোমানকে দেখে তেমন কিছু বুজতে পারলেন না।
আর হুজুর এইসব ব্যাপারে অতোটা পটু ও ছিলেন না।
তো সেই হুজুর শুধু বললেন ছেলে মানুষ তো.... অন্ধকারে কিছু দেখে ভয় পেয়েছে।
আমি দোয়া পরে ফু দিয়ে দিচ্ছি সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমি দোয়া পরে ফু দিয়ে পানি পড়ে দিচ্ছি.....পানি পরা টুকু খাইয়ে দিবেন।
আর সবাই লক্ষ্য রাখবেন ও যেনো রাতে একা বাইরে বের না হয়.......
আর ওকে একা রাখা যাবে না।
এই বলে হুজুর চলে যায়.......
ওই রাতে হুজুরের দোয়ার বরকতে আর কোনো সমস্যা হয়ে নি।
এরপর বেশ কয়েক দিন ভালোই কেটে যায়...নোমান তখন পুরোই স্বভাবিক।
নোমান ঠিক মতো চলাফেরা খাওয়া দাওয়া করছে।
এরপর........
১৬/১৭ দিন পর একদিন রাত ১০ টার কিছু পর...... নোমান পড়া শেষ করে ঘুমাতে যাবে।
তো ওর বাথরুম পেলো...মানে শুতে যাবার আগে ফ্রেশ হতে যাবে।
নোমানদের বাথরুমটা ছিলো বাসার বাইরে.....
তো বাথরুমে গিয়ে বাথরুম থেকে ফিরে যখন ঘরে ঢুকবে তখন........ওর চোখ হঠাৎ তেতুল গাছের দিকে যায়।
আজ ও নোমানের চোখ আর মন কেমন যেনো তেতুল গাছের দিকে টানছে।
নোমান মন্ত্রমুগ্ধের মতো এক দৃষ্টিতে তখন সেই তেতুল গাছের দিকে তাকিয়ে থাকে....হঠাৎ ও দুর থেকে লক্ষ্য করলো তেতুল গাছে কিছু একটা নড়ছে।
নোমান ওই নড়াচড়া লক্ষ্য করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়......
উঠোন পেরিয়ে সেই গাছের কাছাকছি যেতেই দেখলো....
নোমানের চাচাতো বোন মানে কচি আপু তেতুল গাছের একটা ডালে সাথে পা বাজিয়ে উল্টো হয়ে ঝুলে আছে......
মানে তেতুল গাছে একটা মোটা ডালে পা উপরের দিকে দিয়ে...দুই পা দিয়ে ডালটা কেচকি করে ধরে ঝুলে আছে মাথা নিচের দিকে দিয়ে ঝুলে আছে কচি আপু।
পা দিয়ে ডাল আকড়ে থাকায় কচি আপু নিচে পরছে না......
নোমান ওই ভাবে কচি আপুকে উল্টো ঝুলতে দেখে ভয় পেয়ে যায়....
ও তখন মনে মনে ভাবে এই ভাবে কি কোনো মানুষ ঝুলে থাকতে পারে।
নোমান তখন ওর কচি আপু কে ডাক দেয়....
আর ওর তখন একটু একটু ভয় লাগলেও.....নিজের চাচাতো বোনকে দেখে মনে সাহস নিয়ে ওর আপুকে ডাক দিলো।
কচি আপুদের বাসা নোমানদের বাসার কয়েকটা বাসার পরই।
নোমান কিন্তু তখনো ভুলেও ভাবে নি যে......এতো রাতে কচি আপু গাছে কেনো??
বা কি করছে সে ওখানে......
আসলে গাছের ওইটা কচি আপু ছিলো না!!
ওইটা ছিলো অশরীরী কিছু......
যে কচি আপুর রুপ ধরে নোমানের সামনে হাজির হয়েছে।
এদিকে নোমান তো নিচে দাড়িয়ে সমানে ডেকে যাচ্ছে আপু এই আপু...তুমি ওখানে কি করতেছো?
নেমে আসো.......
তুমি উল্টো হয়ে আছো কেনো......পরে যাবা তো!!
কিন্তু উপরে থাকা কচি আপুর রুপি অশরীরী কোনো উওর দিচ্ছে না......
শুধু নোমানের দিকে তাকিয়ে হিহি করে হাসছে।
এদিকে নোমানের মা নোমান বাথরুম এ যাওয়ার পর থেকেই অপেক্ষা করছিলো ছেলের জন্য।
ছেলের দেরি দেখে সে তখন বাইরে বেরিয়ে আসেন। নোমানকে খুজতে থাকেন তিনি।
ডাক দেন নোমানের নাম ধরে.....
বাথরুম প্রযন্ত গিয়ে খুজে না পেয়ে যখন ফিরে যাচ্ছিলেন....তখন তিনি শুনলেন।
দুর থেকে কোথাও নোমানের গলার ভয়েস আসছে।
এরপর নোমানের মা ছেলের কন্ঠ লক্ষ্য করে সামনে উঠোনের দিকে এগিয়ে যায়।
একটু সামনে এগুতেই তিনি দেখলেন নোমান তেতুল গাছের দিকে তাকিয়ে কারো সাথে কথা বলছে??
কিন্তু কে বা কার সাথে কথা বলছে সেটা দুর বুজতে পারছেন না।
আর নোমানের মা আশেপাশে নোমান ছাড়া কাউকে দেখতে পাচ্ছেন না।
চারপাশটা ভালো করে দেখলেন।
আরো একটু এগিয়ে ডাক দিলেন নোমানের নাম ধরে।
কিন্তু আশ্চর্য নোমানের এতো কাছে গিয়ে ডাক দিতেও নোমান তার দিকে ফিরে তাকাচ্ছে না।
বা তার ডাকে নোমানের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
নোমানের মা এইবার ছেলের মুখের দিকে তাকালেন।
তিনি দেখেন নোমান সেই তেতুলগাছের উপরে দিকে তাকিয়ে কারো সাথে কথা বলছে একমনে......
এটা দেখে নোমানের মা তেতুল গাছের দিকে তাকায়.....
কিন্তু সেই গাছে কেউ নেই।
পুরো তেতুল গাছ ফাকা??
আজব তো ভাবলেন....এরপর তার মনে অজানা একটা ভয় ভর করে???
আতংক প্রচন্ড ভয়ে তিনি আর্তচিৎকর দিয়ে ওঠেন ????
নোমানের মা তাকিয়ে আছেন ছেলের দিকে......দেখেন কেউ নাই ওর সামনে।
আর নোমান উপরের দিকে তাকিয়ে একমনে কথা বলছে কারো সাথে........................চলবে।
লওনা মানে হলো শয়তানের আছড়.....
ভূতে ভয় পায় না এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।
ভুত প্রেত নিয়ে মানুষের মনে অজানা ভয় আর আতংক কাজ করে।
আর এই ভয় ও আতংকের সুযোগ নিয়ে মানুষকে বিপদে ফেলে শয়তান।
২|
নোমান ছলিমা বানুর লাশ তেতুল গাছে ঝুলতে দেখে মাগো বলে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে......
নোমানের চিৎকার শুনে ঘর থেকে সবাই বের হয়ে আসে.....তারা বাইরে এসে দেখে নোমান উঠানে পরে আছে।
আর টর্চটা নোমানের শরীর থেকে কিছুটা দুরে মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
নোমানের মা আর ওর বোনেরা নোমানের এই অবস্থা দেখে কান্নাকাঠি শুরু করে দেয়....
এরপর ফজলুর সরদার মানে নোমানের বাবা আর নোমানের বোনেরা ধরাধরি করে নোমানকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যায়।
এখন আসি কে এই ছলিমা বানু..........
ছলিমা বানু গায়ের গরিব নিরিহ এক মহিলা।
স্বামী মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন।
স্বামী মারা গেছেন বেশ কিছু বছর আগে।
এরপর ছলিমা বানু গ্রামের বাজার থেকে অল্প কিছু মাছ কিনে এনে.......ঝুড়িতে করে নিয়ে মানুষের বাসায় বাসায় ফেরী করতেন।
এভাবেই নিজের ভরন পোষণ করতেন।
ছলিমা বানুর বাম পায়ে একটু সমস্যা ছিলো।
তার ছিলো পা ফোলা রোগ।
মানে তার বাম পা টা ডান পায়ের তুলনায় অস্বাভাবিক ফোলা।
তাকে দেখলে গায়ের বাচ্চারা ভয় পেতো।
তো সেই ছলিমা বানুকে বছর খানেক আগে এক সকালে গ্রামের সেইই খালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
তার লাশটা পাওয়া যায় গ্রামের ওই মাথায় মানে খালের ওই মাথায়।
লাশটা খালের পানিতে ভাসছিলো।
আর সেই ছলিমা বানুর লাশ আজ রাতে তেতুল গাছে ঝুলতে দেখেছে নোমান........
নোমানকে বাসা নিয়ে এসে নোমানের চোখেমুখে পানির ছিটা দিলে পর নোমানের জ্ঞান ফিরে।
জ্ঞান ফিরে পেয়ে নোমান ভয়ে কাপতে থাকে।
এরপর চারদিকে তাকিয়ে আপনজন সবাইকে দেখতে পেয়ে তোতলাতে থাকে।
আর ওর বাবার দিকে ফিরে বলে আব্বা আব্বা ওই তেতুল গাছটায় একটা লাশ ঝুলছে.....তোমরা গিয়ে দেখো??
ফজলু সরদার ছেলের এই কথা শুনে প্রথমে ধাক্কা খায়।
তিনি ছেলের দিকে ভালো করে তাকিয়ে বোজার চেষ্ঠা করেন......ছেলে কি বলছে।
তিনি বুজলেন নোমান কিছু দেখে ভয় পেয়ে থাকতে পারে হয়তো।
এরপর জানতে চায় কার লাশ বাবা?
নোমান তখন বলে আব্বা ওটা ছলিমা বানুর লাশ.......
ফজলু সরদার মুহুর্তে থমকে যায়।
তিনি নোমানকে অভয় দিয়ে বলেন।
কি বলছিস বাবা......কোন ছলিমা?
গ্রামে যে ছলিমা ছিলো.......সে তো অনেক দিন আগেই মারা গেছে।
এরপর একটু থেমে আবার বলেন।
এটা তোর চোখের বা মনের ভুল বাবা।
তুই অন্ধকার এ কিছু দেখে ভয় পেয়েছিস হয়তো।
নোমান তখন গলায় জোর দিয়ে বলে জানো আব্বা ছলিমা বানু আমার দিকে চোখ খুলে তাকিয়ে ছিলো আর হাসছিলো।
নোমানের বাবা তখন নোমানের মায়ের মুখে তাকালো
তারা যা বোজার বুজলো.......ছেলে হয়তো ভয় পেয়েছে প্রচুর।
এরপর তারা নোমানকে অভয় দিলো.....
বললো ও সব কিছুই নয় বাবা......সবটা তোর মনের ভুল।
এরপর নোমান কিছুটা স্বভাবিক হলে ফজলু সরদার ওই রাতেই মসজিদে ইমাম সাহেবকে ডেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
মসজিদের ইমাম সাহেব নোমানকে দেখে তেমন কিছু বুজতে পারলেন না।
আর হুজুর এইসব ব্যাপারে অতোটা পটু ও ছিলেন না।
তো সেই হুজুর শুধু বললেন ছেলে মানুষ তো.... অন্ধকারে কিছু দেখে ভয় পেয়েছে।
আমি দোয়া পরে ফু দিয়ে দিচ্ছি সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমি দোয়া পরে ফু দিয়ে পানি পড়ে দিচ্ছি.....পানি পরা টুকু খাইয়ে দিবেন।
আর সবাই লক্ষ্য রাখবেন ও যেনো রাতে একা বাইরে বের না হয়.......
আর ওকে একা রাখা যাবে না।
এই বলে হুজুর চলে যায়.......
ওই রাতে হুজুরের দোয়ার বরকতে আর কোনো সমস্যা হয়ে নি।
এরপর বেশ কয়েক দিন ভালোই কেটে যায়...নোমান তখন পুরোই স্বভাবিক।
নোমান ঠিক মতো চলাফেরা খাওয়া দাওয়া করছে।
এরপর........
১৬/১৭ দিন পর একদিন রাত ১০ টার কিছু পর...... নোমান পড়া শেষ করে ঘুমাতে যাবে।
তো ওর বাথরুম পেলো...মানে শুতে যাবার আগে ফ্রেশ হতে যাবে।
নোমানদের বাথরুমটা ছিলো বাসার বাইরে.....
তো বাথরুমে গিয়ে বাথরুম থেকে ফিরে যখন ঘরে ঢুকবে তখন........ওর চোখ হঠাৎ তেতুল গাছের দিকে যায়।
আজ ও নোমানের চোখ আর মন কেমন যেনো তেতুল গাছের দিকে টানছে।
নোমান মন্ত্রমুগ্ধের মতো এক দৃষ্টিতে তখন সেই তেতুল গাছের দিকে তাকিয়ে থাকে....হঠাৎ ও দুর থেকে লক্ষ্য করলো তেতুল গাছে কিছু একটা নড়ছে।
নোমান ওই নড়াচড়া লক্ষ্য করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়......
উঠোন পেরিয়ে সেই গাছের কাছাকছি যেতেই দেখলো....
নোমানের চাচাতো বোন মানে কচি আপু তেতুল গাছের একটা ডালে সাথে পা বাজিয়ে উল্টো হয়ে ঝুলে আছে......
মানে তেতুল গাছে একটা মোটা ডালে পা উপরের দিকে দিয়ে...দুই পা দিয়ে ডালটা কেচকি করে ধরে ঝুলে আছে মাথা নিচের দিকে দিয়ে ঝুলে আছে কচি আপু।
পা দিয়ে ডাল আকড়ে থাকায় কচি আপু নিচে পরছে না......
নোমান ওই ভাবে কচি আপুকে উল্টো ঝুলতে দেখে ভয় পেয়ে যায়....
ও তখন মনে মনে ভাবে এই ভাবে কি কোনো মানুষ ঝুলে থাকতে পারে।
নোমান তখন ওর কচি আপু কে ডাক দেয়....
আর ওর তখন একটু একটু ভয় লাগলেও.....নিজের চাচাতো বোনকে দেখে মনে সাহস নিয়ে ওর আপুকে ডাক দিলো।
কচি আপুদের বাসা নোমানদের বাসার কয়েকটা বাসার পরই।
নোমান কিন্তু তখনো ভুলেও ভাবে নি যে......এতো রাতে কচি আপু গাছে কেনো??
বা কি করছে সে ওখানে......
আসলে গাছের ওইটা কচি আপু ছিলো না!!
ওইটা ছিলো অশরীরী কিছু......
যে কচি আপুর রুপ ধরে নোমানের সামনে হাজির হয়েছে।
এদিকে নোমান তো নিচে দাড়িয়ে সমানে ডেকে যাচ্ছে আপু এই আপু...তুমি ওখানে কি করতেছো?
নেমে আসো.......
তুমি উল্টো হয়ে আছো কেনো......পরে যাবা তো!!
কিন্তু উপরে থাকা কচি আপুর রুপি অশরীরী কোনো উওর দিচ্ছে না......
শুধু নোমানের দিকে তাকিয়ে হিহি করে হাসছে।
এদিকে নোমানের মা নোমান বাথরুম এ যাওয়ার পর থেকেই অপেক্ষা করছিলো ছেলের জন্য।
ছেলের দেরি দেখে সে তখন বাইরে বেরিয়ে আসেন। নোমানকে খুজতে থাকেন তিনি।
ডাক দেন নোমানের নাম ধরে.....
বাথরুম প্রযন্ত গিয়ে খুজে না পেয়ে যখন ফিরে যাচ্ছিলেন....তখন তিনি শুনলেন।
দুর থেকে কোথাও নোমানের গলার ভয়েস আসছে।
এরপর নোমানের মা ছেলের কন্ঠ লক্ষ্য করে সামনে উঠোনের দিকে এগিয়ে যায়।
একটু সামনে এগুতেই তিনি দেখলেন নোমান তেতুল গাছের দিকে তাকিয়ে কারো সাথে কথা বলছে??
কিন্তু কে বা কার সাথে কথা বলছে সেটা দুর বুজতে পারছেন না।
আর নোমানের মা আশেপাশে নোমান ছাড়া কাউকে দেখতে পাচ্ছেন না।
চারপাশটা ভালো করে দেখলেন।
আরো একটু এগিয়ে ডাক দিলেন নোমানের নাম ধরে।
কিন্তু আশ্চর্য নোমানের এতো কাছে গিয়ে ডাক দিতেও নোমান তার দিকে ফিরে তাকাচ্ছে না।
বা তার ডাকে নোমানের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
নোমানের মা এইবার ছেলের মুখের দিকে তাকালেন।
তিনি দেখেন নোমান সেই তেতুলগাছের উপরে দিকে তাকিয়ে কারো সাথে কথা বলছে একমনে......
এটা দেখে নোমানের মা তেতুল গাছের দিকে তাকায়.....
কিন্তু সেই গাছে কেউ নেই।
পুরো তেতুল গাছ ফাকা??
আজব তো ভাবলেন....এরপর তার মনে অজানা একটা ভয় ভর করে???
আতংক প্রচন্ড ভয়ে তিনি আর্তচিৎকর দিয়ে ওঠেন ????
নোমানের মা তাকিয়ে আছেন ছেলের দিকে......দেখেন কেউ নাই ওর সামনে।
আর নোমান উপরের দিকে তাকিয়ে একমনে কথা বলছে কারো সাথে........................চলবে।
Shuvo, Nasim, Mr.twist, Mr kiddo, Mahmud, Akash, Onik and লেখাটি পছন্দ করেছে
- Raiveনবাগত
- Posts : 5
স্বর্ণমুদ্রা : 1155
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-05-29
Re: লওনা - তরিকুল ইসলাম
Sat May 29, 2021 2:11 am
৩|
ঘটনাটি আমার বড়ো ভাবির ছোটো ভাইয়ের সাথে ঘটে যাওয়া ১০০ % সত্যি ঘটনা।
লওনা মানে হলো শয়তানের আছড়.....
ভূতে ভয় পায় না এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।
ভুত প্রেত নিয়ে মানুষের মনে অজানা ভয় আর আতংক কাজ করে।
আর এই ভয় ও আতংকের সুযোগ নিয়ে মানুষকে বিপদে ফেলে শয়তান।
নোমান কে তেতুল গাছের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে দেখে নোমানের মা ভয়ে আর্তচিৎকার দেয়....
নোমানের মায়ের চিৎকার এ ঘরের মধ্যে থাকা সবাই ছুটে আসে গাছের গোড়ায়......কিন্তু নোমানের সেই দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নোই।
মানে নোমান এর কানে ওর মায়ের চিৎকার পৌছায় নি।
নোমান তখনো তেতুল গাছের দিকে তাকিয়ে কথা বলছে।
নোমানের বড়ো বোন......মানে আমার বড়ো ভাবি যার নাম শিরিন.... সে ছুটে এসে দেখলো নোমান একা একা উপরে তাকিয়ে কথা বলছে।
নোমানকে দেখে মনে হচ্ছিল কেউ যেনো ওকে সম্মোহিত করেছে।
শিরিন ভাবি এটা দেখে দৌড়ে গিয়ে নোমাকে সজোড়ে ধাক্কা মারে।
নোমান সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে যায়......
এরপর সবাই মিলে নোমাকে ঘরে নিয়ে আসে।
সবাই যখন ধরাধরি করে নোমানকে ঘরে নিয়ে আসছিলো.....
তখন নাকি নোমানের সারা শরীর আগুনের মতো উতপ্ত ছিলো।
নোমানের বাবা আগের দিনের লোক.....তাই তিনি তখন বুজতে পারলেন তার ছেলের সাথে খারাপ কিছু ভর করেছে.......বা লওনা হয়েছে।
তিনি মনে মনে ভাবলেন লক্ষন তো সুবিধার নয়।
তিনি তখন আল্লাহকে ডাকতে থাকেন।
আর ভাবছেন কোনো রকম রাত টুকু পার করতে পারলে হয়......
নোমানের মা কে পুরো ব্যাপারটা তিনি বুজিয়ে বললেন তখন।
নোমানের জ্ঞান ফিরলে ও কার সাথে কথা বলছিলো তখন....নোমানকে জিজ্ঞেস করা হয়।
নোমান তখন বলে ওর নাকি কিছুই মনে নেই??
আর ও নাকি উঠোন পেরিয়ে সেই তেতুল গাছের নিচে ও যায় নি।
এই শুনে নোমানের বাসার সবাই ভড়কে যায়।
এরপর নোমানের মা ছেলেকে দোয়া পরে ফু দেন।
লোহা দাগিয়ে পানি খাওয়ানো হয়।
এরপর নোমান কিছু সময় স্বভাবিক থকলেও।
রাত ১২ টার পর ওর মধ্যে অস্থিরতা শুরু হয়...
মনে হচ্ছিলো অশুভ কিছু ভর করেছে নোমানের ভিতর।
কেমন ছটফট করছে।
আর ঘরের চারদিকে তাকাচ্ছে।
এটা দেখে ঘরের মুল দরজা বন্ধ করে রাখা হয়।
কিন্তু নোমান মাঝ রাতে কেমন করে যেনো ঘর থেকে বের হয়ে যায়।
রাতে নোমানের বাবা ছেলেকে দেখার জন্য নোমানের রুমে উকি দিলে দেখে ছেলে রুমে নেই।
পুরো খাট খালি......পরে আছে।
এরপর নোমানের বাবা ডাকাডাকি করে সারা বাড়ি মাথায় তোলেন।
তার ডাকা চিৎকারে সবার ঘুম ভেঙ্গে যায়।
সবাই বাইরে বেরিয়ে খুজাখুজি করতে দেখলো নোমান ওদের ঘরের চালের উপরে আসে আছে।
আর সামনের দিকে তাকিয়ে কারো সাথে কথা বলছে.....
নোমানের সামনে যেই থাক তাকে নোমান.....বার বার বলছে তেতুল গাছটা দেখে আসবে????
ওখানে নাকি কচি আপু একা আছে।
এই দৃশ্য দেখে নোমানের বাবা মা চোখ বের হয়ে যাওয়ার জোগার হয়।
একে তো এতো রাত?
রাত উপর নোমান চালে উঠলো কি ভাবে?
আর ও কথাই বা বলছে কার সাথে??
তারা নিচে দাড়িয়ে নোমানের নাম ধরে ডাকাডাকি করেও কাজ হচ্ছে না।
তখন নোমানের বাবা উপরে উঠে ওকে ধরে সাবধানে নিচে নামিয়ে নিয়ে আসেন....
কিন্তু নিচে নেমে নোমানের সেই এক কথা আমি তেতুল গাছের ওখানে যাবোই।
নোমানকে ওর মা এতো বোজায় যে তোর কচি আপু বাসায়......
কিন্তু ও কিছুই বুজছে না।
পরে ওকে বুজিয়ে শুনিয়ে শান্ত করা হয়.....
রুমে এসে এক সময় শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পরে নোমান।
শেষ রাতের দিকে হঠাৎ আবার ঘুম ভেঙ্গে নোমানের.... চিৎকার দিয়ে ওঠে।
ঘুমের ঘোরে বলে ওঠে আপু পরে যাবা তো!!
এরপর নোমানকে ওর মা জিজ্ঞেস করে কি দেখে চিৎকার করলি??
কি দেখেছে স্বপ্নে তা নাকি নোমান মনে করতে পারছে না.......
এরপর কোনো রকম রাত শেষে ভোর হয়।
ফজলু সরদার খুব ভোরেই ছুটে যায়......নাম করা এক হুজুর ফকিরের কাছে।
আর তাকে নিয়ে বাসায় আসেন।
ফকির বাসায় এসে নোমানকে দেখেন....আর ওর সাথে ঘটে যাওয়া লক্ষণ গুলো শুনেন??
এরপর নোমানের বাবাকে ফকির বলেন.......
আপনার ছেলের সাথে লাওনা হয়েছে।
ওই তেতুল গাছ থেকেই অনেক খারাপ কিছু আপনার ছেলের উপরে ভর করেছে।
আর এটা ওকে এতো তাড়াতাড়ি ছাড়বে না....
এই বলে একটু থামেন......আবার বলা শুরু করেন।
ছেলেকে সাবধানে রাখবেন।
আমি কিছু ব্যবস্থা দিয়ে যাচ্ছি...... আমার কথা মতো চললে ওই খারাপ লওনা আপনার ছেলের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না......
যাওয়ার আগে বলে যায়....ছেলেকে কোনো সময় একা রাখবেন না।
আর ওকে ওই তেতুল গাছের কাছে এক দমই যেতে দিবেন না।
এরপর সেই হুজুর তার কিছু ফিকির দিয়ে চলে যায়।
সেইদিন থেকেই নোমান ও ধিরে ধিরে স্বাভাবিক আচরন করে সবার সাথে...
বলে রাখা ভালো...সেই হুজুর নাকি চলে যাবার সময় বাড়ির সবার অলক্ষ্যে একটা তাবিজ সেই তেতুল গাছের গোড়ায় পুতে রাখে।
এই তাবিজ যে পুতে রেখেছিলো সেটা সেই হুজুর আর নোমানের বাবা ই শুধু জানতো।
এরপর দিন ভালোই যাচ্ছিলো।
দিন গড়িয়ে মাস..আর মাস গড়িয়ে বছর যায়.......
নোমান এসএসসি পাস করলো।
ইন্টার এ ভর্তি হলো বরিশালে।
বাসা থেকে এসে গিয়ে ক্লাস করতো।
সময়ে বিবর্তনে কেনো এক সময় সেই গাছের নিচে পুতে রাখা তাবিজ টা কেউ হয়তো অসাবধানে তুলে ফেলে???
ব্যাস এরপর আর যায় কই?
আবার শয়তানে দাগা শুরু হয়......
এরপরের ঘটনা......
একদিন ক্লাস শেষ করে বরিশাল চৌমাথা থেকে বাসায় দিকে ফিরছিলো.......
তখন দুপুর আনুমানিক ৩ টা বাজে।
সারাদিনের ক্লান্তি ভর করেছে তখন নেমানের শরিরের।
ক্ষুদাও লেগেছে প্রচুর.....
আটোতে করে বিনয়কাঠি গ্রামীন ব্যাংক প্রযন্ত এসেছে।
এরপর হাটার পথ.....
মানে বাকি পথ টুকু হেটেই যেতে হবে।
এমনিতেই তখন ভর দুপুর তাই পথে মানুষ জন একেবারে কম।
গ্রামীন ব্যাংক পার হয়েই পথের একটা বাশঝার পরে।
নোমান হেটে সেই বাশঝারের পাশ দিয়ে পার হচ্ছিল।
তখন শুলনো কেউ বাশঝারের নিচে বসে কাদছে।
কারো কান্নার শব্দ শুনে নোমান একটু থমকে দাড়ায়।
কি ব্যাপার মনে মনে ভাবে নোমান ??
এই ভর দুপুরে এখানে কে কান্না করে?
চার পাশ ভালো করে খুজে.....
কিন্তু আজব কোথাও তো কেউ নেই?
একটু পর কান্নার শব্দটা যেনো হঠাৎই থেমে যায়।
এর কিছু সময় পর হঠাৎ জোড়ে হাসি শব্দ আসতে থাকে।
এইবার নোমান ভয় পেয়ে যায়.....
মনে মনে ভাবলো লক্ষন ভালো নয়।
একবার ভাবলো ছুটে দৌড় দিবে কিনা?
এরপর হঠাৎই উপরে থেকে কেউ ওকে ওর নাম ডাক দিলো...
নোমান এই নোমান????
নোমান তখন চারদিকে খুজতে থাকে...... তখন উপর থেকে শব্দটা আসে......
এই যে নোমান এই দিকে....??
নোমান উপরে চোখ তুলে তাকায়???
তাকিয়ে যা দেখলো.....
একটা ২ বছরের বাচ্চা বাশ ঝাড়ের একবারে মাথায় মানে উপরে।
একটা চিকন বাশের উপরে উপুড় হয়ে শুয়ে...... নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
নোমাকে নাম ধরে ডাকছে আর মিটিমিটি হাসছে!!
নোমান বাচ্চাটাকে শুধু একটা চিকন বাশের মাথায় ওই ভাবে শোয়া দেখে ভয়ে থরথর করে কাপতে থাকে।
হিতাহিত জ্ঞান শুন্য নোমান তখন কি করবে ভেবে পাচ্ছে না।
আল্লাহর নাম নিয়ে বুকে ফু দিয়ে বইখাতা ওই বাশঝাড়ের নিচে ফেলে রেখে সোজা দৌড় দেয় বাড়ির দিকে।
পুরো পথ ভয়ে আর ভুলেও পিছনে ফিরে তাকায় নি.......
নোমান ছুটছে আর ওর কাছে তখন মনে হচ্ছে ওর পিছন পিছন বাচ্চাটা ওকে ধাওয়া করছে...
পিছন ফিরছে না ভয়ে.....নোমানের তখন মনে হচ্ছে পিছন ফিরলেই হয়তো ধরে ফেলবে ওকে.........চলবে।
[Only admins are allowed to see this link]েখক.....তরিকুল ইসলাম রাইভী।
[Only admins are allowed to see this link]িদ্রঃ ঘটনাটা কেমন লাগলো অবশ্য ই আপনাকে মুল্যবান মন্তব্য জানাবেন।
ঘটনাটি আমার বড়ো ভাবির ছোটো ভাইয়ের সাথে ঘটে যাওয়া ১০০ % সত্যি ঘটনা।
লওনা মানে হলো শয়তানের আছড়.....
ভূতে ভয় পায় না এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।
ভুত প্রেত নিয়ে মানুষের মনে অজানা ভয় আর আতংক কাজ করে।
আর এই ভয় ও আতংকের সুযোগ নিয়ে মানুষকে বিপদে ফেলে শয়তান।
নোমান কে তেতুল গাছের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে দেখে নোমানের মা ভয়ে আর্তচিৎকার দেয়....
নোমানের মায়ের চিৎকার এ ঘরের মধ্যে থাকা সবাই ছুটে আসে গাছের গোড়ায়......কিন্তু নোমানের সেই দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নোই।
মানে নোমান এর কানে ওর মায়ের চিৎকার পৌছায় নি।
নোমান তখনো তেতুল গাছের দিকে তাকিয়ে কথা বলছে।
নোমানের বড়ো বোন......মানে আমার বড়ো ভাবি যার নাম শিরিন.... সে ছুটে এসে দেখলো নোমান একা একা উপরে তাকিয়ে কথা বলছে।
নোমানকে দেখে মনে হচ্ছিল কেউ যেনো ওকে সম্মোহিত করেছে।
শিরিন ভাবি এটা দেখে দৌড়ে গিয়ে নোমাকে সজোড়ে ধাক্কা মারে।
নোমান সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে যায়......
এরপর সবাই মিলে নোমাকে ঘরে নিয়ে আসে।
সবাই যখন ধরাধরি করে নোমানকে ঘরে নিয়ে আসছিলো.....
তখন নাকি নোমানের সারা শরীর আগুনের মতো উতপ্ত ছিলো।
নোমানের বাবা আগের দিনের লোক.....তাই তিনি তখন বুজতে পারলেন তার ছেলের সাথে খারাপ কিছু ভর করেছে.......বা লওনা হয়েছে।
তিনি মনে মনে ভাবলেন লক্ষন তো সুবিধার নয়।
তিনি তখন আল্লাহকে ডাকতে থাকেন।
আর ভাবছেন কোনো রকম রাত টুকু পার করতে পারলে হয়......
নোমানের মা কে পুরো ব্যাপারটা তিনি বুজিয়ে বললেন তখন।
নোমানের জ্ঞান ফিরলে ও কার সাথে কথা বলছিলো তখন....নোমানকে জিজ্ঞেস করা হয়।
নোমান তখন বলে ওর নাকি কিছুই মনে নেই??
আর ও নাকি উঠোন পেরিয়ে সেই তেতুল গাছের নিচে ও যায় নি।
এই শুনে নোমানের বাসার সবাই ভড়কে যায়।
এরপর নোমানের মা ছেলেকে দোয়া পরে ফু দেন।
লোহা দাগিয়ে পানি খাওয়ানো হয়।
এরপর নোমান কিছু সময় স্বভাবিক থকলেও।
রাত ১২ টার পর ওর মধ্যে অস্থিরতা শুরু হয়...
মনে হচ্ছিলো অশুভ কিছু ভর করেছে নোমানের ভিতর।
কেমন ছটফট করছে।
আর ঘরের চারদিকে তাকাচ্ছে।
এটা দেখে ঘরের মুল দরজা বন্ধ করে রাখা হয়।
কিন্তু নোমান মাঝ রাতে কেমন করে যেনো ঘর থেকে বের হয়ে যায়।
রাতে নোমানের বাবা ছেলেকে দেখার জন্য নোমানের রুমে উকি দিলে দেখে ছেলে রুমে নেই।
পুরো খাট খালি......পরে আছে।
এরপর নোমানের বাবা ডাকাডাকি করে সারা বাড়ি মাথায় তোলেন।
তার ডাকা চিৎকারে সবার ঘুম ভেঙ্গে যায়।
সবাই বাইরে বেরিয়ে খুজাখুজি করতে দেখলো নোমান ওদের ঘরের চালের উপরে আসে আছে।
আর সামনের দিকে তাকিয়ে কারো সাথে কথা বলছে.....
নোমানের সামনে যেই থাক তাকে নোমান.....বার বার বলছে তেতুল গাছটা দেখে আসবে????
ওখানে নাকি কচি আপু একা আছে।
এই দৃশ্য দেখে নোমানের বাবা মা চোখ বের হয়ে যাওয়ার জোগার হয়।
একে তো এতো রাত?
রাত উপর নোমান চালে উঠলো কি ভাবে?
আর ও কথাই বা বলছে কার সাথে??
তারা নিচে দাড়িয়ে নোমানের নাম ধরে ডাকাডাকি করেও কাজ হচ্ছে না।
তখন নোমানের বাবা উপরে উঠে ওকে ধরে সাবধানে নিচে নামিয়ে নিয়ে আসেন....
কিন্তু নিচে নেমে নোমানের সেই এক কথা আমি তেতুল গাছের ওখানে যাবোই।
নোমানকে ওর মা এতো বোজায় যে তোর কচি আপু বাসায়......
কিন্তু ও কিছুই বুজছে না।
পরে ওকে বুজিয়ে শুনিয়ে শান্ত করা হয়.....
রুমে এসে এক সময় শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পরে নোমান।
শেষ রাতের দিকে হঠাৎ আবার ঘুম ভেঙ্গে নোমানের.... চিৎকার দিয়ে ওঠে।
ঘুমের ঘোরে বলে ওঠে আপু পরে যাবা তো!!
এরপর নোমানকে ওর মা জিজ্ঞেস করে কি দেখে চিৎকার করলি??
কি দেখেছে স্বপ্নে তা নাকি নোমান মনে করতে পারছে না.......
এরপর কোনো রকম রাত শেষে ভোর হয়।
ফজলু সরদার খুব ভোরেই ছুটে যায়......নাম করা এক হুজুর ফকিরের কাছে।
আর তাকে নিয়ে বাসায় আসেন।
ফকির বাসায় এসে নোমানকে দেখেন....আর ওর সাথে ঘটে যাওয়া লক্ষণ গুলো শুনেন??
এরপর নোমানের বাবাকে ফকির বলেন.......
আপনার ছেলের সাথে লাওনা হয়েছে।
ওই তেতুল গাছ থেকেই অনেক খারাপ কিছু আপনার ছেলের উপরে ভর করেছে।
আর এটা ওকে এতো তাড়াতাড়ি ছাড়বে না....
এই বলে একটু থামেন......আবার বলা শুরু করেন।
ছেলেকে সাবধানে রাখবেন।
আমি কিছু ব্যবস্থা দিয়ে যাচ্ছি...... আমার কথা মতো চললে ওই খারাপ লওনা আপনার ছেলের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না......
যাওয়ার আগে বলে যায়....ছেলেকে কোনো সময় একা রাখবেন না।
আর ওকে ওই তেতুল গাছের কাছে এক দমই যেতে দিবেন না।
এরপর সেই হুজুর তার কিছু ফিকির দিয়ে চলে যায়।
সেইদিন থেকেই নোমান ও ধিরে ধিরে স্বাভাবিক আচরন করে সবার সাথে...
বলে রাখা ভালো...সেই হুজুর নাকি চলে যাবার সময় বাড়ির সবার অলক্ষ্যে একটা তাবিজ সেই তেতুল গাছের গোড়ায় পুতে রাখে।
এই তাবিজ যে পুতে রেখেছিলো সেটা সেই হুজুর আর নোমানের বাবা ই শুধু জানতো।
এরপর দিন ভালোই যাচ্ছিলো।
দিন গড়িয়ে মাস..আর মাস গড়িয়ে বছর যায়.......
নোমান এসএসসি পাস করলো।
ইন্টার এ ভর্তি হলো বরিশালে।
বাসা থেকে এসে গিয়ে ক্লাস করতো।
সময়ে বিবর্তনে কেনো এক সময় সেই গাছের নিচে পুতে রাখা তাবিজ টা কেউ হয়তো অসাবধানে তুলে ফেলে???
ব্যাস এরপর আর যায় কই?
আবার শয়তানে দাগা শুরু হয়......
এরপরের ঘটনা......
একদিন ক্লাস শেষ করে বরিশাল চৌমাথা থেকে বাসায় দিকে ফিরছিলো.......
তখন দুপুর আনুমানিক ৩ টা বাজে।
সারাদিনের ক্লান্তি ভর করেছে তখন নেমানের শরিরের।
ক্ষুদাও লেগেছে প্রচুর.....
আটোতে করে বিনয়কাঠি গ্রামীন ব্যাংক প্রযন্ত এসেছে।
এরপর হাটার পথ.....
মানে বাকি পথ টুকু হেটেই যেতে হবে।
এমনিতেই তখন ভর দুপুর তাই পথে মানুষ জন একেবারে কম।
গ্রামীন ব্যাংক পার হয়েই পথের একটা বাশঝার পরে।
নোমান হেটে সেই বাশঝারের পাশ দিয়ে পার হচ্ছিল।
তখন শুলনো কেউ বাশঝারের নিচে বসে কাদছে।
কারো কান্নার শব্দ শুনে নোমান একটু থমকে দাড়ায়।
কি ব্যাপার মনে মনে ভাবে নোমান ??
এই ভর দুপুরে এখানে কে কান্না করে?
চার পাশ ভালো করে খুজে.....
কিন্তু আজব কোথাও তো কেউ নেই?
একটু পর কান্নার শব্দটা যেনো হঠাৎই থেমে যায়।
এর কিছু সময় পর হঠাৎ জোড়ে হাসি শব্দ আসতে থাকে।
এইবার নোমান ভয় পেয়ে যায়.....
মনে মনে ভাবলো লক্ষন ভালো নয়।
একবার ভাবলো ছুটে দৌড় দিবে কিনা?
এরপর হঠাৎই উপরে থেকে কেউ ওকে ওর নাম ডাক দিলো...
নোমান এই নোমান????
নোমান তখন চারদিকে খুজতে থাকে...... তখন উপর থেকে শব্দটা আসে......
এই যে নোমান এই দিকে....??
নোমান উপরে চোখ তুলে তাকায়???
তাকিয়ে যা দেখলো.....
একটা ২ বছরের বাচ্চা বাশ ঝাড়ের একবারে মাথায় মানে উপরে।
একটা চিকন বাশের উপরে উপুড় হয়ে শুয়ে...... নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
নোমাকে নাম ধরে ডাকছে আর মিটিমিটি হাসছে!!
নোমান বাচ্চাটাকে শুধু একটা চিকন বাশের মাথায় ওই ভাবে শোয়া দেখে ভয়ে থরথর করে কাপতে থাকে।
হিতাহিত জ্ঞান শুন্য নোমান তখন কি করবে ভেবে পাচ্ছে না।
আল্লাহর নাম নিয়ে বুকে ফু দিয়ে বইখাতা ওই বাশঝাড়ের নিচে ফেলে রেখে সোজা দৌড় দেয় বাড়ির দিকে।
পুরো পথ ভয়ে আর ভুলেও পিছনে ফিরে তাকায় নি.......
নোমান ছুটছে আর ওর কাছে তখন মনে হচ্ছে ওর পিছন পিছন বাচ্চাটা ওকে ধাওয়া করছে...
পিছন ফিরছে না ভয়ে.....নোমানের তখন মনে হচ্ছে পিছন ফিরলেই হয়তো ধরে ফেলবে ওকে.........চলবে।
[Only admins are allowed to see this link]েখক.....তরিকুল ইসলাম রাইভী।
[Only admins are allowed to see this link]িদ্রঃ ঘটনাটা কেমন লাগলো অবশ্য ই আপনাকে মুল্যবান মন্তব্য জানাবেন।
Shuvo, Nasim, Mr.twist, Mr kiddo, Mahmud, Akash, Onik and লেখাটি পছন্দ করেছে
- Raiveনবাগত
- Posts : 5
স্বর্ণমুদ্রা : 1155
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-05-29
Re: লওনা - তরিকুল ইসলাম
Sat May 29, 2021 2:11 am
৪|
নোমান বাশঝারের বাশের উপরে সেই বাচ্চা শিশুটিকে দেখে...
ভয়ে ছুটতে ছুটতে বাড়ির দোর গোড়ায় চলে আসে..........
নোমানের মাথা তখন হিতাহিত জ্ঞানশূন্য।
ঠিক তখন নোমানের ছোট বোন মিতু দুপুরের খাবার শেষে জানালা পাশে বসে আনমনে বাইরের দিকে তাকিয়ে ছিলো.....
মিতু তখন দেখলো ওর নোমান ভাইয়া রাস্তা দিয়ে ছুটতে ছুটতে বাড়ির দিকে আসছে।
নোমানকে দেখে তখন মনে হচ্ছিল কেউ যেনো ওকে তাড়া করছে।
এই ভাবে নোমানকে ছুটতে দেখে মিতু কিছুটা ঘাবড়ে যায় বা ভড়কে যায়।
মিতু মনে মনে ভাবছে নোমান তো সকালে কলেজে গেলো কিন্তু ওর হোলোটা কি?
আর ওর বই খাতাই বা কই?
এরপর মিতু জানালার সাথে সেটে থেকে ভালো করে বাইরেটা দেখার চেস্টা করলো.....
ওদিকে নোমান দৌড়ে বাড়ির ভিতরে না ঢুকে সোজা সেই নদীর পাড়ের দিকে এগিয়ে যায়।
মানে......
নোমান বাড়ির কাছাকাছি আসার পরই বাড়িতে না ঢুকে.....সোজা তেতুল গাছের দিকে চলে যায়।
উঠোন পেরিয়ে সেই তেতুল গাছে গোড়ায় গিয়ে হাটু গেড়ে বসে পরে.....
নোমান তখন থরথর করে কাপছে।
এই দৃশ্য দেখে মিতু ভয়ে চিৎকার করে ওর মাকে।ডাকতে থাকে।
বলে.....
ওমা ওমা নোমান ভাইয়া যেনো কেমন করছে দেখে যাও মা।
মিতু ডাক চিৎকারে ওর মায়ের ঘুম ভেঙ্গে যায়।
সে দৌড়ে এসে মিতুর পাশে দাড়িয়ে দেখে...যে বাইরে কি হচ্ছে ?
বলে রাখা ভালো নোমানের বাবা কিন্তু তখন ঘরে ছিলো না।
তো নোমানের মা এবং মিতু আর আমার ভাবি শিরিন তারা ছুটে ঘর থেকে বেরিয়ে নোমানের কাছে যায়।
নোমানের কাছাকাছি গিয়ে দেখে নোমান হাটু গেড়ে বসে আছে আর জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিচ্ছে।
ওদের তখন মনে হচ্ছিল নোমানের হয়তো শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।
এই ভেবে নোমানের মা নোমাকে ধরে শান্ত করতে যায়।
তারপর ঘটলো তা ছিলো আরো ভয়ংকর ঘটনা......
মানে তাদের কথা অনুযায়ি ভয়ংকর ছিলো।।।
নোমানের মা নেমানকে ধরতেই তার গায়ে হাই ভোল্টের কারেন্টের শট লাগে..... যেনো মনে হলো।
আমার ভাবি শিরিন এর কথা এইটা...
শিরিন ভাবি বললো মা নোমানকে ধরতেই এক ঝটকায় ছিটকে গিয়ে....মা কয়েক হাত দুরে গিয়ে পরলো।
আর মিতুর কথা হলো।
এখানে বলে রাখা ভালে মিতুও কিন্তু সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী।
তাই মিতু বললো।
ওর মা নাকি নোমানকে ধরতে যেতেই নোমান হাত দিয়ে একটা ঝাপটা দিলে ওর মা ছিটকে দুরে গিয়ে পরে।
মিতু কথা হলো এতো শক্তি নোমানের শরীরে আসলো কোথা থেকে?
এরপর শিরিন ভাবি আর মিতু ছুটে গিয়ে তাদের মাকে ধরে মাটি থেকে তুলে।
ছিটকে পরে গিয়ে নেমানের মা প্রচন্ড আঘাত পায়।
ছিটকে পরে গিয়ে যতেটা আঘাত সে পেয়েছেন তিনি...তার চেয়ে বেশি আঘাত লেগেছে তার মনে ছেলের এই অবস্থা দেখে।
যেই ছেলে তাকে এতো শ্রদ্ধা করে ভালোবাসে সেই ছেলের আজ এই অবস্থা।
দুরে বসে নোমানকে আবার সে বাবা বলে ডাক দেয়.....
হাজার হলেও ছেলে তো...তাও আবার একমাত্র ছেলে।
নোমান বাবা আমার?
আমি তোর মা!
মা বলতেই নোমান এইবার মুখ তুলে তাকায়।
নোমান চোখ তুলে তাকানো টা ছিলো সবচেয়ে ভয়ার্ত।
নোমানের চক্ষু দুইটা রক্ত লাল ছিলো......
আর গলা থেকে নাকি কেমন একটা গজ গজ শব্দ বের হচ্ছিলো।
এরপর নোমানের মা ওখানে বসেই ছেলের জন্য দোয়া দরূদ পড়তে থাকেন।
এরপর তার মনে পড়ে তাদের ঘরে থাকা জমজম কুপের পানির কথা।
জমজম কুপের পানি পাশের বাসার এক মুরুব্বি হজ্জে গিয়ে নিয়ে আসছিলো.....
সেই মুরুব্বি হজ্জ শেষে এসে তাদেরকে এই পবিত্র পানি দিয়েছিলো।
তো সেই পানির কথা মনে পরতেই নোমানের মা মিতুকে বললো পানির বোতলটা নিয়ে আয় তো মা ঘর থেকে।
মিতু ছুটে গিয়ে বোতলটা নিয়ে আসে।
এরপর নোমানের মা বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে আল্লাহর নাম নিয়ে বিসমিল্লাহ বলে সেই পবিত্র পানি তিনবার নোমানের গায়ে আর মাথায় ছিটিয়ে দেন।
এরপরই আস্তে আস্তে নোমান শান্ত হয়.... আর নিস্তেজ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে।
এরপর নোমাকে ঘরে নিয়ে শোয়ানো হয়।
তবে একটা ব্যাপার অজ্ঞান নোমানের সারা শরির তখন আগুনের মতে গরম ছিলো ?
নোমানের বাবা বিকেলে বাসায় ফিরলে তাকে সব জানানো হয়।
পুরো ঘটনা শুনে নোমানের বাবা ছুটে যায় সেই ফকিরের কাছে।
ছেলের কথা ফকিরকে সব খুলে বলেন।
ফকির সব শুনে কিছু সময় চুপ থাকেন।
একটু চিন্তা করে তারপর বলেন....
নোমানকে খুব সাবধানে রাখতে বলেন।
আর বলেন সেই তেতুল গাছের নিচের পুতে রাখা তাবিজটা কেউ হয়তো তুলে ফেলেছে....
যার জন্য আবার সেই জিনিস টা লওনা হয়েছে নোমানের সাথে।
নোমাকে বাড়িতে না রেখে অন্য কোথাও ওর কোনো আত্মীয়র বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে বলেন আজই.....
ফকির বাবা বলেন যতো যা হচ্ছে ওই তেতুল গাছটা কে নিয়েই হচ্ছে।
তখন নোমানের বাবা বলে ওঠে..... এক কাজ করি তেতুল গাছটাই কেটে ফেলি।
ফকির বাবা বলেন না...এটা ভুলেও করবেন না।
ওটা কাটলে আপনার ছেলের ক্ষতি হবে আরো বেশি।
কারন ওটাকে যে থাকতো সে এখন পুরোপুরি নোমানের সাথে লওনা হয়ে আছে।
ওটা কাটলে আর কোনো দিন নোমানকে ছাড়বে না খারাপ লওনা টা।
নোমানের বাবা তখন বললো তাহলে এখন এর সমাধান কি ??
ফকির বাবা তখন বললেন আর কয়দিন পর আমাবস্যা ওই রাতে আমি নিজে গিয়ে তেতুল গাছে নোমানের নাম নিয়ে তিনটা সুতো বেধে দিয়ে আসবো!
আর গাছের গোড়ায় ওই রাতেই একটা তাবিজ পুতে আসবো।।
এরপর দেখি কি হয় ?
এরপর বলেন এই কয়টা দিন নোমানকে একটু গ্রামের বাইরে রাখুন।
তো যেই কথা সেই কাজ....
নোমানকে ওইদিন সন্ধ্যার পর ই বরিশালে ওর এক খালার বাসায় নিয়ে আসা হয়।
ওকে নিয়ে আসার সময় বা পরে তেমন কোনো সমস্যা হয় নি।
ওই দিন ভালোই কেটে যায়।
পর দিন সন্ধ্যায় নোমান ওর খালার বাসায় একটা পড়ার টেবিলে বসে পড়তে ছিলো।
ঘরের একমাত্র লাইটটা নোমানের বিপরিত দিকে।
মানে ও যেই দিকে ফিরে পরতে বসেছে লাইটটা ওর পিছনে.... শরিরের ছায়া টেবিলের উপরে পরছিলো।
নোমান হঠাৎ লক্ষ করলো ওর রুমের ফ্যানের সাথে কেউ একজন ঝুলছে।
মানে কেউ ফ্যানের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে থাকলে যেমন ভাবে ঝুলে থাকে.....ঠিক তেমন ভাবে ঝুলছে।
তেমন একটা ঝুলন্ত ছায়া ওর সামনের টেবিলে পড়লো.....
নোমান ওই সাংঘাতিক ভয়ংকর ছায়া দেখেই ভয়ে থরথর করে কাপতে থাকে।
ভয়ে আর আতংকে ওর সারা শরীরের পশম দাড়িয়ে যায়।
পিছনে ফিরে যে তাকাবে... তখন সেই সাহস ও পাচ্ছে না।
পিছন ফিরলে কি দেখবে এটা ভাবছে?
কার লাশ ঝুলছে ফ্যানের সাথে ?
কিছু একটা ভেবে ভয়ে আর্তচিৎকার দিয়ে ওঠে নোমান......................................চলবে।
নোমান বাশঝারের বাশের উপরে সেই বাচ্চা শিশুটিকে দেখে...
ভয়ে ছুটতে ছুটতে বাড়ির দোর গোড়ায় চলে আসে..........
নোমানের মাথা তখন হিতাহিত জ্ঞানশূন্য।
ঠিক তখন নোমানের ছোট বোন মিতু দুপুরের খাবার শেষে জানালা পাশে বসে আনমনে বাইরের দিকে তাকিয়ে ছিলো.....
মিতু তখন দেখলো ওর নোমান ভাইয়া রাস্তা দিয়ে ছুটতে ছুটতে বাড়ির দিকে আসছে।
নোমানকে দেখে তখন মনে হচ্ছিল কেউ যেনো ওকে তাড়া করছে।
এই ভাবে নোমানকে ছুটতে দেখে মিতু কিছুটা ঘাবড়ে যায় বা ভড়কে যায়।
মিতু মনে মনে ভাবছে নোমান তো সকালে কলেজে গেলো কিন্তু ওর হোলোটা কি?
আর ওর বই খাতাই বা কই?
এরপর মিতু জানালার সাথে সেটে থেকে ভালো করে বাইরেটা দেখার চেস্টা করলো.....
ওদিকে নোমান দৌড়ে বাড়ির ভিতরে না ঢুকে সোজা সেই নদীর পাড়ের দিকে এগিয়ে যায়।
মানে......
নোমান বাড়ির কাছাকাছি আসার পরই বাড়িতে না ঢুকে.....সোজা তেতুল গাছের দিকে চলে যায়।
উঠোন পেরিয়ে সেই তেতুল গাছে গোড়ায় গিয়ে হাটু গেড়ে বসে পরে.....
নোমান তখন থরথর করে কাপছে।
এই দৃশ্য দেখে মিতু ভয়ে চিৎকার করে ওর মাকে।ডাকতে থাকে।
বলে.....
ওমা ওমা নোমান ভাইয়া যেনো কেমন করছে দেখে যাও মা।
মিতু ডাক চিৎকারে ওর মায়ের ঘুম ভেঙ্গে যায়।
সে দৌড়ে এসে মিতুর পাশে দাড়িয়ে দেখে...যে বাইরে কি হচ্ছে ?
বলে রাখা ভালো নোমানের বাবা কিন্তু তখন ঘরে ছিলো না।
তো নোমানের মা এবং মিতু আর আমার ভাবি শিরিন তারা ছুটে ঘর থেকে বেরিয়ে নোমানের কাছে যায়।
নোমানের কাছাকাছি গিয়ে দেখে নোমান হাটু গেড়ে বসে আছে আর জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিচ্ছে।
ওদের তখন মনে হচ্ছিল নোমানের হয়তো শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।
এই ভেবে নোমানের মা নোমাকে ধরে শান্ত করতে যায়।
তারপর ঘটলো তা ছিলো আরো ভয়ংকর ঘটনা......
মানে তাদের কথা অনুযায়ি ভয়ংকর ছিলো।।।
নোমানের মা নেমানকে ধরতেই তার গায়ে হাই ভোল্টের কারেন্টের শট লাগে..... যেনো মনে হলো।
আমার ভাবি শিরিন এর কথা এইটা...
শিরিন ভাবি বললো মা নোমানকে ধরতেই এক ঝটকায় ছিটকে গিয়ে....মা কয়েক হাত দুরে গিয়ে পরলো।
আর মিতুর কথা হলো।
এখানে বলে রাখা ভালে মিতুও কিন্তু সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী।
তাই মিতু বললো।
ওর মা নাকি নোমানকে ধরতে যেতেই নোমান হাত দিয়ে একটা ঝাপটা দিলে ওর মা ছিটকে দুরে গিয়ে পরে।
মিতু কথা হলো এতো শক্তি নোমানের শরীরে আসলো কোথা থেকে?
এরপর শিরিন ভাবি আর মিতু ছুটে গিয়ে তাদের মাকে ধরে মাটি থেকে তুলে।
ছিটকে পরে গিয়ে নেমানের মা প্রচন্ড আঘাত পায়।
ছিটকে পরে গিয়ে যতেটা আঘাত সে পেয়েছেন তিনি...তার চেয়ে বেশি আঘাত লেগেছে তার মনে ছেলের এই অবস্থা দেখে।
যেই ছেলে তাকে এতো শ্রদ্ধা করে ভালোবাসে সেই ছেলের আজ এই অবস্থা।
দুরে বসে নোমানকে আবার সে বাবা বলে ডাক দেয়.....
হাজার হলেও ছেলে তো...তাও আবার একমাত্র ছেলে।
নোমান বাবা আমার?
আমি তোর মা!
মা বলতেই নোমান এইবার মুখ তুলে তাকায়।
নোমান চোখ তুলে তাকানো টা ছিলো সবচেয়ে ভয়ার্ত।
নোমানের চক্ষু দুইটা রক্ত লাল ছিলো......
আর গলা থেকে নাকি কেমন একটা গজ গজ শব্দ বের হচ্ছিলো।
এরপর নোমানের মা ওখানে বসেই ছেলের জন্য দোয়া দরূদ পড়তে থাকেন।
এরপর তার মনে পড়ে তাদের ঘরে থাকা জমজম কুপের পানির কথা।
জমজম কুপের পানি পাশের বাসার এক মুরুব্বি হজ্জে গিয়ে নিয়ে আসছিলো.....
সেই মুরুব্বি হজ্জ শেষে এসে তাদেরকে এই পবিত্র পানি দিয়েছিলো।
তো সেই পানির কথা মনে পরতেই নোমানের মা মিতুকে বললো পানির বোতলটা নিয়ে আয় তো মা ঘর থেকে।
মিতু ছুটে গিয়ে বোতলটা নিয়ে আসে।
এরপর নোমানের মা বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে আল্লাহর নাম নিয়ে বিসমিল্লাহ বলে সেই পবিত্র পানি তিনবার নোমানের গায়ে আর মাথায় ছিটিয়ে দেন।
এরপরই আস্তে আস্তে নোমান শান্ত হয়.... আর নিস্তেজ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে।
এরপর নোমাকে ঘরে নিয়ে শোয়ানো হয়।
তবে একটা ব্যাপার অজ্ঞান নোমানের সারা শরির তখন আগুনের মতে গরম ছিলো ?
নোমানের বাবা বিকেলে বাসায় ফিরলে তাকে সব জানানো হয়।
পুরো ঘটনা শুনে নোমানের বাবা ছুটে যায় সেই ফকিরের কাছে।
ছেলের কথা ফকিরকে সব খুলে বলেন।
ফকির সব শুনে কিছু সময় চুপ থাকেন।
একটু চিন্তা করে তারপর বলেন....
নোমানকে খুব সাবধানে রাখতে বলেন।
আর বলেন সেই তেতুল গাছের নিচের পুতে রাখা তাবিজটা কেউ হয়তো তুলে ফেলেছে....
যার জন্য আবার সেই জিনিস টা লওনা হয়েছে নোমানের সাথে।
নোমাকে বাড়িতে না রেখে অন্য কোথাও ওর কোনো আত্মীয়র বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে বলেন আজই.....
ফকির বাবা বলেন যতো যা হচ্ছে ওই তেতুল গাছটা কে নিয়েই হচ্ছে।
তখন নোমানের বাবা বলে ওঠে..... এক কাজ করি তেতুল গাছটাই কেটে ফেলি।
ফকির বাবা বলেন না...এটা ভুলেও করবেন না।
ওটা কাটলে আপনার ছেলের ক্ষতি হবে আরো বেশি।
কারন ওটাকে যে থাকতো সে এখন পুরোপুরি নোমানের সাথে লওনা হয়ে আছে।
ওটা কাটলে আর কোনো দিন নোমানকে ছাড়বে না খারাপ লওনা টা।
নোমানের বাবা তখন বললো তাহলে এখন এর সমাধান কি ??
ফকির বাবা তখন বললেন আর কয়দিন পর আমাবস্যা ওই রাতে আমি নিজে গিয়ে তেতুল গাছে নোমানের নাম নিয়ে তিনটা সুতো বেধে দিয়ে আসবো!
আর গাছের গোড়ায় ওই রাতেই একটা তাবিজ পুতে আসবো।।
এরপর দেখি কি হয় ?
এরপর বলেন এই কয়টা দিন নোমানকে একটু গ্রামের বাইরে রাখুন।
তো যেই কথা সেই কাজ....
নোমানকে ওইদিন সন্ধ্যার পর ই বরিশালে ওর এক খালার বাসায় নিয়ে আসা হয়।
ওকে নিয়ে আসার সময় বা পরে তেমন কোনো সমস্যা হয় নি।
ওই দিন ভালোই কেটে যায়।
পর দিন সন্ধ্যায় নোমান ওর খালার বাসায় একটা পড়ার টেবিলে বসে পড়তে ছিলো।
ঘরের একমাত্র লাইটটা নোমানের বিপরিত দিকে।
মানে ও যেই দিকে ফিরে পরতে বসেছে লাইটটা ওর পিছনে.... শরিরের ছায়া টেবিলের উপরে পরছিলো।
নোমান হঠাৎ লক্ষ করলো ওর রুমের ফ্যানের সাথে কেউ একজন ঝুলছে।
মানে কেউ ফ্যানের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে থাকলে যেমন ভাবে ঝুলে থাকে.....ঠিক তেমন ভাবে ঝুলছে।
তেমন একটা ঝুলন্ত ছায়া ওর সামনের টেবিলে পড়লো.....
নোমান ওই সাংঘাতিক ভয়ংকর ছায়া দেখেই ভয়ে থরথর করে কাপতে থাকে।
ভয়ে আর আতংকে ওর সারা শরীরের পশম দাড়িয়ে যায়।
পিছনে ফিরে যে তাকাবে... তখন সেই সাহস ও পাচ্ছে না।
পিছন ফিরলে কি দেখবে এটা ভাবছে?
কার লাশ ঝুলছে ফ্যানের সাথে ?
কিছু একটা ভেবে ভয়ে আর্তচিৎকার দিয়ে ওঠে নোমান......................................চলবে।
Shuvo, Nasim, Mr.twist, Mr kiddo, Mahmud, Akash, Onik and লেখাটি পছন্দ করেছে
- Raiveনবাগত
- Posts : 5
স্বর্ণমুদ্রা : 1155
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-05-29
Re: লওনা - তরিকুল ইসলাম
Sat May 29, 2021 2:12 am
পর্ব ৫
নোমান ওর খালার বাসায় পড়ার টেবিলে বসে পরতে ছিলো।
এমন সময় ওর পিছন থেকে টেবিলে একটা ছায়া পরে.....
যেনো কেউ গলায় দড়ি দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে এমন একটা ছায়া।
এই দৃশ্য দেখে নোমান ভয়ে পুরোপুরি জমে যায়।
নোমান একটু ভিতু টাইপের ছেলে ছিলো।
ওকে ভিতু টাইপের বলি কেনো?
ওই দৃশ্য দেখলে তো যে কেউই ভয়ে হার্টঅ্যাটাক করবে।
ও তখন পিছনে তাকানোর সাহস ও পাচ্ছিলো না।
তখন মনে মনে ভাবছে..... পিছন ফিরলে কি না দেখতে পাবে।
এরপর প্রচন্ড ভয়ে আর্ত চিৎকার দিয়ে ওঠে।
কিন্তু এরপরই আজব একটা ব্যাপার ঘটলো নোমানের সাথে তখন।
আশ্চর্য জনক ভাবে ওর গলা থেকে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না......মানে ও চিৎকার করছে কিন্তু শব্দ হচ্ছে না।
ও প্রচন্ড ভয়ে প্রথমে এটা খেয়াল করে নি!
ও ভাবছিলো ওর চিৎকার হয়তো গলা থেকে বের হচ্ছে।
ভয়ে আর আতংক এক জায়গায় জড়োসড়ো হয়ে বসে ছিলো....এই ভাবে কিছু সময় অতিবাহিত হয়।
এরপর হঠাৎ নোমানের মনে হলো ওর পিঠে শিতল কিছু একটা স্পর্শ করলো।
ঘাড় ফিরিয়ে দেখতে গেলো কিন্তু ওর গলাসহ পুরো ঘাড় ফ্রিজ হয়ে আছে।
মানে নোমান তখন ওর ঘাড় এক চুল নাড়াতে পারছিলো না।
নোমান তখন অনুভব করছে ঠান্ডা সেই অনুভুতিটা ওর পিঠ বেয়ে নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে।
নোমান নিজের বুকে সাহসে ভর করে আল্লাহর নাম নিয়ে উঠে দৌড় দিলো...
কিন্তু যেই দৌড় দিতে যাবে?
ঠিক তখন ওর বসে থাকা চেয়ারটা পায়ের সাথে লেগে হুড়মুড় করে চেয়ারসহো ফ্লোরে পরে যায় নোমান।
আর পরে গিয়ে চেয়ারের পিঠের দিকের কাঠের সাথে ওর মাথায় আঘাত লাগে ব্যাস আর যায় কই?
মাথা ফেটে পুরো রক্তারক্তি অবস্থা হয় তখন।
এই দিকে রুমে যে এতো কিছু ঘটলো তা কিন্তু নোমানের খালা বা ঘরের অন্য কেউ টের পায় নি তখনো।
কিন্তু নোমান চেয়ারসহ পরে যাবার শব্দ শুনে নোমানের খালাসহ সবাই দৌড়ে ওর রুমে আসে।
রুমে গিয়ে দেখে নোমান ফ্লোরে পরে আছে আর ওর মাথা ফেটে পুরো ফ্লোর রক্তাক্ত।
এরপর নোমানকে নিয়ে যাওয়া হয় হসপিটালে।
ওর মাথায় ব্যান্ডেজ করা হয়।
পরে নোমান কে জিজ্ঞেস করা হলে কি হয়েছিলো....
তখন ও পুরো ঘটনা খুলে বলে।
এরপর আর রাতে ওকে একা রাখা হয় নি।
এর দুই দিন পর একদিন বাথরুমে গোছল করছিলো.....
এমন সময়......
বালতির পানিতে কাউকে দেখে চিৎকার দিয়ে ওঠে।
নোমানের কথা অনুযায়ি এমন....
ও গোছল করার জন্য গায়ে দুই মগ পানি দিয়ে শরীর ডলছে...... ঠিক তখন ও বাথরুমের ভিতরে কারো হাসি শব্দ শুনতে পায়।
হাসির শব্দ শুনে নোমান তো ভয়ে স্থির হয়ে যায়।
এই বাথরুমে কে হাসে?
একবার ভাবলো মনের ভুল বা কানে হয়তো ভুল শুনেছে।
পুরো বাথরুম খুজে কাউকে পেলো না......
এরপর তৃতীয় মগ পানি তুলতে যখন বালতির দিকে তাকালো.....তখন দেখলো বালতির পানি মধ্যে কেউ একজন ওর দিকে তাকিয়ে হাসতেছে।
এই দৃশ্য দেখে নোমান তখন ও মাগো বলে ওই ভিজা শরীর নিয়ে বাথরুম থেকে ছুটে বেরিয়ে যায়।
এই ঘটনার পর নোমানের বাবা বরিশাল এসে এক হুজুর দিয়ে ওর সাথে আল্লাহর কালাম শরীফের একটা আয়াত লিখে এনে হাতের বাহুতে বেধে দেয়।
এরপর বেশ কয়েকদিন আর সমস্যা হয় নি.......
এদিকে সেই ফকির আমাবস্যার রাতে নোমানের বাবাকে নিয়ে যায় তেতুল গাছের গোড়ায় যায়।
নোমানের নাম নিয়ে মন্ত্র পড়ে কি সব আকিবুকি করে।
ফকির যখন মন্ত্র পড়ছিলো আশ্চর্যজনক ভাবে.....ঠিক তখন এক ঝাক বাদুর সেই তেতুল গাছ থেকে উড়ে চলে যায়......
এরপর ফকির তার কাজ ভালোভাবে শেষ করেন।
ফকির কাজ করার সময় নাকি প্রচন্ড জোরে তেতুল গাছটা নড়তেছিলো।
তখন নোমানের বাবা সহ বাসার সবাই দেখে বুজলো..... তেতুল গাছটায় আসলেই কিছু ছিলো হয়তো।
তবে ফকির বাবা বারবার বলে গেছেন??
নোমানকে বাড়ি থেকে যতো দুরে রাখা যায় ততোটা ওর জন্য ভালো.....
আর নোমান কোনো কিছু দেখে ভয় না পায় বা ওর যেনো কিছুতেই মন চমকে না যায়....এইদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
ওর সাথের লওনাটা মানে নোমানের সাথে থাকা জ্বিনটা নোমানের ভয় পাওয়াটাকে প্রশ্রয় হিসেবে পেয়ে বসবে আবার।
নোমানকে অবশ্যই মনে সাহস রাখতে হবে......
আর ও যেনো মনের ভুলেও তেতুল গাছের গোড়ায় না যায়।
এই বলে সেই ফকির চলে যায়।
এরপর ২/৩ বছর আর কোনো সমস্যা হয়নি নোমানের সাথে।
এরপর নোমান যখন সি এ পড়তে ঢাকা যায়......
ঢাকা একটা ম্যাচে থাকতো নোমান।
এটা তখনকার ঘটনা...
একদিন ওর রুমমেট দের মধ্যে আলি নামের একটা ছেলে রোড অ্যাকসিডেন্টে মারা যায়।
সেই ছেলের মারাত্মক জখম হওয়া মরা মুখটা দেখে ওইদিন নোমানের মন চমকে যায় !
এরপর সারাদিন সেই ছেলেকে নিয়ে ভাবতে থাকে।
আর ছেলেটার মুখ ওর চোখে ভাসতে থাকে....
তো ওইদিন বিকেলে সেই ছেলের লাশ নিয়ে তার পরিবার বাড়ির দিকে রওনা হয়....
সন্ধায় মন খারাপ নোমান......ওদের ম্যাচের ছাদে।
এদিকে মাগরিবের পরও যখন নোমান ছাদ থেকে নামছে না......
এটা দেখে নোমানের আরেক রুমমেট শান্ত ছাদে ওঠে নোমানকে ডাকতে।
শান্ত ছাদে উঠে দুর থেকেই দেখে নোমান ছাদে দাড়িয়ে কারো সাথে কথা বলছে?
কিন্তু কি আজব?
ছাদে তখন নোমান ছাড়া আর কেউ ছিলো না।
শান্ত তখন নোমানকে ওর নাম ধরে কয়েকবার ডাক দিলো
কিন্তু নোমানের সেইদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
শান্ত তখন কান খাড়া করে শোনার চেষ্টা করলো যে নোমান কি বলছে...বা কার সাথে কথা বলছে।
এরপর শান্ত যা শুনলো....... তাতে ওর শরীরের পশম দড়িয়ে গেলো.....
কি আজব ব্যাপার!
নোমান যার নাম নিয়ে যার সাথে কথা বলছে সে আর কেউ নয়.....
আজ সকালে রোড আ্যকসিডেন্টে মারা যাওয়া আলি।
আজ সকালে যেই ছেলেটা মারা গেছে..... মানে ওর রুম মেট।
কিন্তু সেই ছেলেটা কি করে হয়?
শান্ত মনে মনে ভাবছে তখন.....
আশ্চর্য জনক ব্যাপার নোমান সেই ছেলের সাথে কি ভাবে কথা বলে?
শান্ত এটা ভেবে পাচ্ছে না?
ওর সারা শরীর ভয়ে কাটা দিয়ে ওঠে।
কি করবে ভেবে পাচ্ছিলো না।
একবার ভাবলো ছুটে নিচে নেমে যাবে।
কিন্তু নিচে যে নামবে ভয়ে শান্তর পা ও চলছে না তখন।এরপর বুকে সাহস আর আল্লাহর নাম নিয়ে.....
এই নোমান বলে নোমানের গায়ে জোড়ে একটা ধাক্কা দেয়।
শান্তর ধাক্কা খেয়ে নোমান যেনো বাস্তবে ফিরে আসে।
নোমান তখন শান্ত কে ধমক দেয়.....কি হয়েছে আমাকে ধাক্কা দিলা কেনো?
শান্ত তো অবাক....ভাবছে বলে কি ছেলে।
শান্ত বলে তুমি এখন কার সাথে কথা বলতেছিলা।
নোমান তখন আজব করা কথা বলে..... বলে দেখছো না একা দাড়িয়ে আছি আমি।
আর কথা বললাম কার সাথে??
শান্ত ভাবলো তার মানে নোমান সব ভুলে গেছে।
বা ওর হয়তো দেখার ভুল ও হতে পারে।
একটা কথা বলে রাখা ভালো শান্ত কিন্তু নোমানের সাথে পুর্বে লওনা এর ব্যাপারে কছুই জানতো না......
শান্ত মনে মনে ভাবছে এটা কি নোমান ইচ্ছে করেই করলো...... নাকি অন্য কিছু।
শান্ত তখন নোমাকে বললো চল নিচে যাই।
এরপর নিচে চলে আসে ওরা.......
ওই রাতে আর কোনো ঘটনা ঘটে নি।
পরদিন থেকে শুরু হয় নতুন সমস্যা??
নোমান প্রায়ই একা একা কথা বলতো।
হঠাৎ হঠাৎই পিছন ফিরে চমকে উঠতো আর বলতো ওর পিছনে নাকি কেউ একজন ছিলো বা আছে?
এরপর একদিন শান্ত আর নোমান ক্লাস শেষ করে বাসে ওদের রুমে বা বাসায় ফিরছিলো।
তো শান্ত বসলো এক ছিটে আর নোমান বসলো গিয়ে আরেক সিটে।
শান্ত কিছু সময় পর লক্ষ করলো নোমান যেনো কার সাথে কথা বলছে।
কিন্তু আজব নোমানের পাশে তখন কেউ ছিলো না।
চ
শান্ত তখন কান খাড়া করে শোনার চেষ্টা করলো নোমান কার সাথে বা কি কথা বলছে একা একা??
শান্ত নোমানের পুরো কথা না শুনলেও.......
শান্তোর কানে একটা নাম গেলো....... নোমন ওর সামনে থাকা কাউকে বলছে চল আলি রুমে যাই.....
আলির নাম শুনতেই ভয়ের শান্তর সারা শরীরের পশম দাড়িয়ে যায়।
কি বলে নোমান এইসব?
ও কি ভাবে একটা মরা মানুষের সাথে কথা বলছে?
এরপর কোনো রকম নোমানকে নিয়ে রুমে ফিরে ওইদিন ই নোমানের বাড়িতে ফোন দিয়ে সব কিছু জানানো হয়।
ঝবর পেয়ে নোমানের বাবা ঢাকা চলে আসেন.....
ওইসব ফকির টকির এ কাজ হবে না ভেবে একজন চিকিৎসক এর পরামর্শ নিয়ে.......একজন মনোবিজ্ঞানি কে দেখানো হয় নোমানকে।
অনেক দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর নোমান আস্তে আস্তে সুস্থ ও স্বভাবিক জীবনে ফিরে আসে।
নোমান এখন একটা অডিট ফার্মে জব করছে।
ওর আগের সেই সমস্যা টা আর নেই....কিন্তু কিছু দিন আগে নাকি ওর এক রুম মেট ওকে এক সন্ধায় বাড়ির ছাদে অন্ধকারে নোমাকে একা একা দাড়িয়ে কারো সাথে কথা বলতে দেখেছে.............................সমাপ্ত।
প্রিয় পাঠক নোমানের সাথে কি ছিলো তা কিন্তু আজো জানা সম্ভব হয় নি।
সেই ফকির বলছিলো বদ জ্বীনের লওনা ছিলো।
আর মনোবিজ্ঞানী বলেছিলো ওর মানুষিক সমস্যা ছিলো।
এটার নাকি চিকিৎসা বিজ্ঞানে একটা নাম ও আছে।
নোমান কি আদৌ পুরোপুরি ঠিক হয়েছে?
নাকি ওর সাথে সেই লওনা এখনো রয়েই গেছে??
এর উত্তর এখনো পাই নি আমরা।
নোমান ওর খালার বাসায় পড়ার টেবিলে বসে পরতে ছিলো।
এমন সময় ওর পিছন থেকে টেবিলে একটা ছায়া পরে.....
যেনো কেউ গলায় দড়ি দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে এমন একটা ছায়া।
এই দৃশ্য দেখে নোমান ভয়ে পুরোপুরি জমে যায়।
নোমান একটু ভিতু টাইপের ছেলে ছিলো।
ওকে ভিতু টাইপের বলি কেনো?
ওই দৃশ্য দেখলে তো যে কেউই ভয়ে হার্টঅ্যাটাক করবে।
ও তখন পিছনে তাকানোর সাহস ও পাচ্ছিলো না।
তখন মনে মনে ভাবছে..... পিছন ফিরলে কি না দেখতে পাবে।
এরপর প্রচন্ড ভয়ে আর্ত চিৎকার দিয়ে ওঠে।
কিন্তু এরপরই আজব একটা ব্যাপার ঘটলো নোমানের সাথে তখন।
আশ্চর্য জনক ভাবে ওর গলা থেকে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না......মানে ও চিৎকার করছে কিন্তু শব্দ হচ্ছে না।
ও প্রচন্ড ভয়ে প্রথমে এটা খেয়াল করে নি!
ও ভাবছিলো ওর চিৎকার হয়তো গলা থেকে বের হচ্ছে।
ভয়ে আর আতংক এক জায়গায় জড়োসড়ো হয়ে বসে ছিলো....এই ভাবে কিছু সময় অতিবাহিত হয়।
এরপর হঠাৎ নোমানের মনে হলো ওর পিঠে শিতল কিছু একটা স্পর্শ করলো।
ঘাড় ফিরিয়ে দেখতে গেলো কিন্তু ওর গলাসহ পুরো ঘাড় ফ্রিজ হয়ে আছে।
মানে নোমান তখন ওর ঘাড় এক চুল নাড়াতে পারছিলো না।
নোমান তখন অনুভব করছে ঠান্ডা সেই অনুভুতিটা ওর পিঠ বেয়ে নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে।
নোমান নিজের বুকে সাহসে ভর করে আল্লাহর নাম নিয়ে উঠে দৌড় দিলো...
কিন্তু যেই দৌড় দিতে যাবে?
ঠিক তখন ওর বসে থাকা চেয়ারটা পায়ের সাথে লেগে হুড়মুড় করে চেয়ারসহো ফ্লোরে পরে যায় নোমান।
আর পরে গিয়ে চেয়ারের পিঠের দিকের কাঠের সাথে ওর মাথায় আঘাত লাগে ব্যাস আর যায় কই?
মাথা ফেটে পুরো রক্তারক্তি অবস্থা হয় তখন।
এই দিকে রুমে যে এতো কিছু ঘটলো তা কিন্তু নোমানের খালা বা ঘরের অন্য কেউ টের পায় নি তখনো।
কিন্তু নোমান চেয়ারসহ পরে যাবার শব্দ শুনে নোমানের খালাসহ সবাই দৌড়ে ওর রুমে আসে।
রুমে গিয়ে দেখে নোমান ফ্লোরে পরে আছে আর ওর মাথা ফেটে পুরো ফ্লোর রক্তাক্ত।
এরপর নোমানকে নিয়ে যাওয়া হয় হসপিটালে।
ওর মাথায় ব্যান্ডেজ করা হয়।
পরে নোমান কে জিজ্ঞেস করা হলে কি হয়েছিলো....
তখন ও পুরো ঘটনা খুলে বলে।
এরপর আর রাতে ওকে একা রাখা হয় নি।
এর দুই দিন পর একদিন বাথরুমে গোছল করছিলো.....
এমন সময়......
বালতির পানিতে কাউকে দেখে চিৎকার দিয়ে ওঠে।
নোমানের কথা অনুযায়ি এমন....
ও গোছল করার জন্য গায়ে দুই মগ পানি দিয়ে শরীর ডলছে...... ঠিক তখন ও বাথরুমের ভিতরে কারো হাসি শব্দ শুনতে পায়।
হাসির শব্দ শুনে নোমান তো ভয়ে স্থির হয়ে যায়।
এই বাথরুমে কে হাসে?
একবার ভাবলো মনের ভুল বা কানে হয়তো ভুল শুনেছে।
পুরো বাথরুম খুজে কাউকে পেলো না......
এরপর তৃতীয় মগ পানি তুলতে যখন বালতির দিকে তাকালো.....তখন দেখলো বালতির পানি মধ্যে কেউ একজন ওর দিকে তাকিয়ে হাসতেছে।
এই দৃশ্য দেখে নোমান তখন ও মাগো বলে ওই ভিজা শরীর নিয়ে বাথরুম থেকে ছুটে বেরিয়ে যায়।
এই ঘটনার পর নোমানের বাবা বরিশাল এসে এক হুজুর দিয়ে ওর সাথে আল্লাহর কালাম শরীফের একটা আয়াত লিখে এনে হাতের বাহুতে বেধে দেয়।
এরপর বেশ কয়েকদিন আর সমস্যা হয় নি.......
এদিকে সেই ফকির আমাবস্যার রাতে নোমানের বাবাকে নিয়ে যায় তেতুল গাছের গোড়ায় যায়।
নোমানের নাম নিয়ে মন্ত্র পড়ে কি সব আকিবুকি করে।
ফকির যখন মন্ত্র পড়ছিলো আশ্চর্যজনক ভাবে.....ঠিক তখন এক ঝাক বাদুর সেই তেতুল গাছ থেকে উড়ে চলে যায়......
এরপর ফকির তার কাজ ভালোভাবে শেষ করেন।
ফকির কাজ করার সময় নাকি প্রচন্ড জোরে তেতুল গাছটা নড়তেছিলো।
তখন নোমানের বাবা সহ বাসার সবাই দেখে বুজলো..... তেতুল গাছটায় আসলেই কিছু ছিলো হয়তো।
তবে ফকির বাবা বারবার বলে গেছেন??
নোমানকে বাড়ি থেকে যতো দুরে রাখা যায় ততোটা ওর জন্য ভালো.....
আর নোমান কোনো কিছু দেখে ভয় না পায় বা ওর যেনো কিছুতেই মন চমকে না যায়....এইদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
ওর সাথের লওনাটা মানে নোমানের সাথে থাকা জ্বিনটা নোমানের ভয় পাওয়াটাকে প্রশ্রয় হিসেবে পেয়ে বসবে আবার।
নোমানকে অবশ্যই মনে সাহস রাখতে হবে......
আর ও যেনো মনের ভুলেও তেতুল গাছের গোড়ায় না যায়।
এই বলে সেই ফকির চলে যায়।
এরপর ২/৩ বছর আর কোনো সমস্যা হয়নি নোমানের সাথে।
এরপর নোমান যখন সি এ পড়তে ঢাকা যায়......
ঢাকা একটা ম্যাচে থাকতো নোমান।
এটা তখনকার ঘটনা...
একদিন ওর রুমমেট দের মধ্যে আলি নামের একটা ছেলে রোড অ্যাকসিডেন্টে মারা যায়।
সেই ছেলের মারাত্মক জখম হওয়া মরা মুখটা দেখে ওইদিন নোমানের মন চমকে যায় !
এরপর সারাদিন সেই ছেলেকে নিয়ে ভাবতে থাকে।
আর ছেলেটার মুখ ওর চোখে ভাসতে থাকে....
তো ওইদিন বিকেলে সেই ছেলের লাশ নিয়ে তার পরিবার বাড়ির দিকে রওনা হয়....
সন্ধায় মন খারাপ নোমান......ওদের ম্যাচের ছাদে।
এদিকে মাগরিবের পরও যখন নোমান ছাদ থেকে নামছে না......
এটা দেখে নোমানের আরেক রুমমেট শান্ত ছাদে ওঠে নোমানকে ডাকতে।
শান্ত ছাদে উঠে দুর থেকেই দেখে নোমান ছাদে দাড়িয়ে কারো সাথে কথা বলছে?
কিন্তু কি আজব?
ছাদে তখন নোমান ছাড়া আর কেউ ছিলো না।
শান্ত তখন নোমানকে ওর নাম ধরে কয়েকবার ডাক দিলো
কিন্তু নোমানের সেইদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
শান্ত তখন কান খাড়া করে শোনার চেষ্টা করলো যে নোমান কি বলছে...বা কার সাথে কথা বলছে।
এরপর শান্ত যা শুনলো....... তাতে ওর শরীরের পশম দড়িয়ে গেলো.....
কি আজব ব্যাপার!
নোমান যার নাম নিয়ে যার সাথে কথা বলছে সে আর কেউ নয়.....
আজ সকালে রোড আ্যকসিডেন্টে মারা যাওয়া আলি।
আজ সকালে যেই ছেলেটা মারা গেছে..... মানে ওর রুম মেট।
কিন্তু সেই ছেলেটা কি করে হয়?
শান্ত মনে মনে ভাবছে তখন.....
আশ্চর্য জনক ব্যাপার নোমান সেই ছেলের সাথে কি ভাবে কথা বলে?
শান্ত এটা ভেবে পাচ্ছে না?
ওর সারা শরীর ভয়ে কাটা দিয়ে ওঠে।
কি করবে ভেবে পাচ্ছিলো না।
একবার ভাবলো ছুটে নিচে নেমে যাবে।
কিন্তু নিচে যে নামবে ভয়ে শান্তর পা ও চলছে না তখন।এরপর বুকে সাহস আর আল্লাহর নাম নিয়ে.....
এই নোমান বলে নোমানের গায়ে জোড়ে একটা ধাক্কা দেয়।
শান্তর ধাক্কা খেয়ে নোমান যেনো বাস্তবে ফিরে আসে।
নোমান তখন শান্ত কে ধমক দেয়.....কি হয়েছে আমাকে ধাক্কা দিলা কেনো?
শান্ত তো অবাক....ভাবছে বলে কি ছেলে।
শান্ত বলে তুমি এখন কার সাথে কথা বলতেছিলা।
নোমান তখন আজব করা কথা বলে..... বলে দেখছো না একা দাড়িয়ে আছি আমি।
আর কথা বললাম কার সাথে??
শান্ত ভাবলো তার মানে নোমান সব ভুলে গেছে।
বা ওর হয়তো দেখার ভুল ও হতে পারে।
একটা কথা বলে রাখা ভালো শান্ত কিন্তু নোমানের সাথে পুর্বে লওনা এর ব্যাপারে কছুই জানতো না......
শান্ত মনে মনে ভাবছে এটা কি নোমান ইচ্ছে করেই করলো...... নাকি অন্য কিছু।
শান্ত তখন নোমাকে বললো চল নিচে যাই।
এরপর নিচে চলে আসে ওরা.......
ওই রাতে আর কোনো ঘটনা ঘটে নি।
পরদিন থেকে শুরু হয় নতুন সমস্যা??
নোমান প্রায়ই একা একা কথা বলতো।
হঠাৎ হঠাৎই পিছন ফিরে চমকে উঠতো আর বলতো ওর পিছনে নাকি কেউ একজন ছিলো বা আছে?
এরপর একদিন শান্ত আর নোমান ক্লাস শেষ করে বাসে ওদের রুমে বা বাসায় ফিরছিলো।
তো শান্ত বসলো এক ছিটে আর নোমান বসলো গিয়ে আরেক সিটে।
শান্ত কিছু সময় পর লক্ষ করলো নোমান যেনো কার সাথে কথা বলছে।
কিন্তু আজব নোমানের পাশে তখন কেউ ছিলো না।
চ
শান্ত তখন কান খাড়া করে শোনার চেষ্টা করলো নোমান কার সাথে বা কি কথা বলছে একা একা??
শান্ত নোমানের পুরো কথা না শুনলেও.......
শান্তোর কানে একটা নাম গেলো....... নোমন ওর সামনে থাকা কাউকে বলছে চল আলি রুমে যাই.....
আলির নাম শুনতেই ভয়ের শান্তর সারা শরীরের পশম দাড়িয়ে যায়।
কি বলে নোমান এইসব?
ও কি ভাবে একটা মরা মানুষের সাথে কথা বলছে?
এরপর কোনো রকম নোমানকে নিয়ে রুমে ফিরে ওইদিন ই নোমানের বাড়িতে ফোন দিয়ে সব কিছু জানানো হয়।
ঝবর পেয়ে নোমানের বাবা ঢাকা চলে আসেন.....
ওইসব ফকির টকির এ কাজ হবে না ভেবে একজন চিকিৎসক এর পরামর্শ নিয়ে.......একজন মনোবিজ্ঞানি কে দেখানো হয় নোমানকে।
অনেক দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর নোমান আস্তে আস্তে সুস্থ ও স্বভাবিক জীবনে ফিরে আসে।
নোমান এখন একটা অডিট ফার্মে জব করছে।
ওর আগের সেই সমস্যা টা আর নেই....কিন্তু কিছু দিন আগে নাকি ওর এক রুম মেট ওকে এক সন্ধায় বাড়ির ছাদে অন্ধকারে নোমাকে একা একা দাড়িয়ে কারো সাথে কথা বলতে দেখেছে.............................সমাপ্ত।
প্রিয় পাঠক নোমানের সাথে কি ছিলো তা কিন্তু আজো জানা সম্ভব হয় নি।
সেই ফকির বলছিলো বদ জ্বীনের লওনা ছিলো।
আর মনোবিজ্ঞানী বলেছিলো ওর মানুষিক সমস্যা ছিলো।
এটার নাকি চিকিৎসা বিজ্ঞানে একটা নাম ও আছে।
নোমান কি আদৌ পুরোপুরি ঠিক হয়েছে?
নাকি ওর সাথে সেই লওনা এখনো রয়েই গেছে??
এর উত্তর এখনো পাই নি আমরা।
Khondkar, Shuvo, Nasim, Mr.twist, Mr kiddo, Mahmud, Akash and লেখাটি পছন্দ করেছে
Permissions in this forum:
You cannot reply to topics in this forum
|
|