- Khan Muhammad Marufনবাগত
- Posts : 2
স্বর্ণমুদ্রা : 1301
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-06-02
মিঃ শ্যাডো
Sat Jun 05, 2021 7:17 pm
১ম পর্ব
writer: K. M. Maruf
.
ভাই প্লিজ আমার কোন ক্ষতি করিস না,আমাকে মারিস না,তোর পায়ে পড়ি আমি,আমার সাথে তো তোর কোন শত্রুতা নেই তাহলে আমা----!একটা বুলেটের খোসা পড়ার শব্দ এবং ওর মৃত্যু।কালো হুডিটা পড়ে লাশ টার দিকে এগিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে পকেট থেকে একটা কালো গোলাপ আর একটা চিরকুট রেখে নিজ গন্তব্যে বেরিয়ে পড়লো সে।
.
আজ এপ্রিলের ২৮ তারিখ,ফজরের নামাজ শেষ করে হালকা হাটা চলা করে টিভিটা অন করলো,প্রতিটা চ্যানালে একটাই নিউজ"কে বা কারা যেনো কাল রাতে দেশের একজন প্রতাপী ছাত্রনেতা কালু খন্দকারের খুন করেছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় এই যে লাশ টার বুকে একটা কালো গোলাপ আর একটা চিরকুট রেখেছে সেই অপরিচিত ঘাতক,যাতে "মিঃ শ্যাডো, স্বাগতম" লেখা ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি।এখন পর্যন্ত একটা রহস্যই হয়ে দাঁড়িয়েছে এ নামটি,এটা কোন গ্যাং এর নাম না ব্যক্তির নাম এ সম্পর্কে কোন ধারনাই দিতে পারছি না।আশা করি অতি তাড়াতাড়ি এ সম্পর্কে তথ্য আসবে আমাদের কাছে।সে পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন।প্রতিটা চ্যানেলে এই একটাই নিউজ।
টিভিটা অফ করে মুচকি হেসে কালো হুডিটা নিয়ে আবার বেড়িয়ে পড়লো গল্পের নায়ক মিঃ শ্যাডো,নতুন শিকারের সন্ধানে।ওর টার্গেট তারাই হয়,যারা খুন,ধর্ষণের মতো বড়ো বড়ো অপকর্ম করে আইন কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেরাচ্ছে।কালু খন্দকার ও এই কেস এর আসামি ছিলো,পরপর কয়েকটা খুন ও ধর্ষণ করে আইনের লোকদের টাকা দিয়ে ক্ষমতার অপব্যাবহার করে মুক্তি পেয়ে আবারো সে একই কাজ বারবার করে যাচ্ছে।আর সে হিসেবে শ্যাডোর প্রথম টার্গেটে নাম লেখিয়ে ফেলে ও।আর পরিণাম সেতো মৃত্যুই।
,
হুডিটা একটু উঁচু করে আশপাশে একটু চোখ বুলিয়ে নিলো ও,পাহাড়ার জন্য বেশ কিছু চ্যালা চামচা রেখেছে দেখা যায়,এটা বিড়বিড়িয়ে হালকা হেসে নিলো সে।সাইড পকেট থেকে রিলোড করা গানটা বের করে সাইলেন্সার লাগিয়ে ওদিকে তাকালো,আর শোঁ শোঁ করে কয়েকটা বুলেট বের হয়ে প্রত্যেকটার মাথায় গিয়ে বিঁধলো।গানটা সামনে এনে ধোঁয়ার গন্ধটা নিলো ও,এ গন্ধটা তার বড্ড পছন্দের,একটা গুলি বের হওয়া মানেই একটা অপরাধীর মৃত্যু।রিলোড করে আবার সাইড পকেটে গানটা রেখে,মুখে একটা চুইংগাম দিয়ে দরজাটা খুলে সোজা বেডরুমে চলে গেলো।আর ওদিকে পায়ের উপর পা দিয়ে সিগারেট টেনেই যাচ্ছে হিসাদ।ওর পাশে যে কেও একজন বসে আছে ওর এদিকে কোন খেয়াল ই নেই।হঠাৎই হিসাদের মুখ থেকে সিগারেট টা টান দিয়ে বের করে সোজা চোখে চেপে ধরলো শ্যাডো।ব্যাথায় চিৎকার দিয়ে উঠে চোখ ধরে কোঁকাতে কোঁকাতে চেয়ে দেখলো,কালো হুডি পড়া একজন মাথাটা নিচদিকে দিয়ে বসে আছে।এটা দেখে পিস্তলটা বের করতেই শুনতে পেলো,ওটা বের করে কোন লাভই নেই তোর,বাঁঁচবিই বা আর কতক্ষন।রাগে ক্রোধে চিৎকার করে জিজ্ঞেস করলো,কে তুই আর তোর সাহসই বা হলো কি করে আমার এখানে এসে আমার সাথে এমন বিহিভ করার।মুচকি হেসে বলে উঠলো এমন কোন যায়গা নেই যে মিঃশ্যাডো যেতে পারবে না,আর এমন কেহ জন্মও নেয়নি যে শ্যাডোকে আটকাবে।শ্যাডো নামটা শুনেই আৎকে উঠে একহাত পিছে চলে গেলো হিসাদ,ওর হাতে যে পিস্তল রয়েছে ওদিকে কোন খেয়ালই যেনো ওর।ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলো,তততারর মমানে ততুইই মেরেছিস কালু খন্দকার কে।আবারো হেসে উঠলো সে,তার হাসি দেখে হিসাদ যেনো ভয়ে একেবারে চুপসে গেছে।শ্যাডো বলে উঠলো"কুল ব্রো,এতো প্যারা নাও কেন,আজ রাতটাই তো আছে তোমার কাছে,অনেক হিসেব যে বাকি রয়ে গেছে তোমার"হিসাদ বলে উঠলো,কেন করছিস তুই এসব,আমাদের মেরেই বা কি লাভ পাবি? মুহুর্তেই ক্রোধে গানটা বের করে সোজা যে হাতে পিস্তল ছিলো ওই হাতে গুলি করে বসলো শ্যাডো।ব্যথায় কুঁকিয়ে উঠে জিজ্ঞেস করলো,দোষ টা কি আমার,যে এমন ভাবে যন্ত্রনা দিচ্ছিস।
আর কোন কথা না বলে মাথা বরাবর গুলি করে,ওর লাশটার দিকে এগিয়ে,একটা কালো গোলাপ আর একটা চিরকুট দিয়ে বেরিয়ে পড়লো নিজ গন্তব্যে।
একটু পরেই সাইরেন বাজিয়ে কয়েকটা পুলিশের গাড়ি ঢুকলো বাসাতে।নেমেই দেখতে পেলো কতগুলো লাশ পড়ে আছে,যাদের প্রত্যেকের কাছেই রয়েছে অত্যাধুনিক হাতিয়ার।এসব দেখে জলদি উপরে গিয়ে দেখলো হিসাদের লাশটা খাটের উপর পড়ে আছে,আর বুকের উপর কালো গোলাপ আর চিরকুট টা রাখা।
পুলিশ কমান্ডার আসাদ চিরকুট টা খুলে দেখতে পেলো সেখানে লেখা আছে"মিঃশ্যাডো,দ্বিতীয় আরেক শয়তানের মৃত্যু,আর হ্যা আজ রাত ঠিক বারোটায় ****** এ আইডি থেকে লাইভে আসবো,আর দু দুটো খুন কেন করলাম তাও পরিষ্কার করে দেবো,আবারো মৃত্যুপুরীতে স্বাগতম"
শেষ লেখাটা দেখে আসাদ চমকে উঠলো।
মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো,আর ভাবতে লাগলো,কে এই শ্যাডো,আর কি চায় ও,আর কেনইবা দুই দুইটা খুন করলো ও।
কিছুক্ষণের মধ্যেই সাংবাদিকরা এসে পড়লো।সব ক্যাপচার করে যখন চিরকুটে শ্যাডোর লাইভে আসার কথাটি দেখলো,সব বাদ দিয়ে এটাকেই টপিক বানিয়ে প্রচার করা শুরু করলো।
ফেসবুক আজ গরম হয়ে রয়েছে,সবাই অপেক্ষা করছে যে কখন ****** আইডি থেকে লাইভে আসবে শ্যাডো।
আর মাত্র আধঘন্টা রয়েছে,পরপর দুইটা খুন আর কালো গোলাপ আর চিরকুটে মিঃ শ্যাডো নামটা যেনো আজ সবার আশ্চর্যের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সব প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে ঠিক রাত ১২ টায় লাইভে আসলো শ্যাডো।
"আসসালামুআলাইকুম,আশা করছি ভালোই আছেন সবাই,পরপর দুইটা খুন করার পর হয়তো আপনাদের মনে এই শংকা জেগেছে যে,কে এই শ্যাডো আর কেনইবা পরপর দুইটা খুন করলো!আপনাদের মনে আমাকে নিয়ে হয়তো আরো অনেক জল্পনা কল্পনা চলছে,যা সময় মতো আমি ভেঙ্গে দেবো।এবার আসি খুনের ব্যাপারে,প্রথম আর দ্বিতীয় খুনের সূত্র এক যায়গায় গিয়ে মিশেছে,আর তা হলো খুন ও ধর্ষণ।ওরা প্রতিবার খুন করে পকেটে পিস্তল নিয়ে সাধারণ মানুষদের ভয় দেখিয়ে নিজ পাওয়ার দেখাচ্ছিলো।জোরপূর্বক মেয়েদেরকে ধর্ষণ করে সেগুলোকে রেকর্ড করে সেগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে মেয়েটাকে আত্মহত্যার পথে এগিয়ে দিয়ে তাদের বাবা-মায়ের সম্মানকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে।তাই এসব মানুষগুলোর বেঁচে থাকার কোন অধিকার আছে বলে আমি মনে করি না।যেখানে আইন ও তাদের ক্ষমতা ও টাকার কাছে ধরাশায়ী।সেখানে ওরা আরো বেশি পার পেয়ে যাচ্ছে বলে এসব অপকর্ম তারা আরো বেশি করার সাহস পাচ্ছে।আর কিছু বলার নেই আমার,আপনারা যদি মনে করেন আমি ভুল করছি,তাহলে তা আপনাদের কাছেই রাখুন,কারণ আমি প্রতিটা পথ ভেবেচিন্তেই নেই।
আর হ্যা যতদিন এসব চলতে থাকবে,আর যারাই বা এসব অপকর্ম করে দেশ আর দশের ক্ষতি করবে,তাদেরকে, শ্যাডোর মৃত্যুপুরীতে স্বাগতম।আসসালামু আলাইকুম" বলেই লাইভটা কেটে দিলো শ্যাডো।আজ আরেকটা শিকারে বের হতে হবে তার।তার আজ রাতের শিকারটা হলো ইব্রাহিম ওরফে কানা মাস্তান নামের এক গ্যাং লিডার, যে কি না সামান্য এক জমিনের কারণে একটা পরিবার কে খুন করে।যে পরিবারের মাথা গোজার জায়গা বলতে শুধু অতটুকুই ছিলো।আর জায়গাটা মেইন রোডের পাশে হওয়ায় ওদিকেই বদনজর পড়ে যায় ইব্রার।তাই লোভ না সামলাতে পেরে প্রথম ওদের হুমকি দিয়ে তাড়ানোর চেষ্টা করে ভেবে দেখার সিদ্ধান্ত দিয়ে চলে যায়।পরিবার টা উপায় না পেয়ে পুলিশের কাছে ওর নামে বিচার নিয়ে যায়।এসপি হৃদয় ইব্রার ব্যাপারে কড়া আইন নিবেন বলে তাদের পাঠিয়ে দিয়ে একটা নাম্বার ডায়াল করে কল করে কি যেনো বললো।
আর তার কতক্ষন পড়েই ইব্রার রোষানলে পরে ঝরে যায় কয়েকটি প্রাণ।হ্যা আজকের শিকারই হলো এই ইব্রাহিম ওরফে কানা মাস্তান।
,
ব্লাক হুডিটা পড়ে নিয়ে সাইড পকেটে গান টা রিলোড করে সাইলেন্সারটা লাগিয়ে রেখে অন্য পকেটে একটি ধারালো ব্লেড প্যাক করে,মুখে চুইংগাম দিয়ে আস্তে আস্তে হেটে চলছিলো ইব্রার আস্তানার দিকে।বেশ কিছু চ্যালাপেলাদের আড্ডা দিতে দেখা গেলো গ্যারাজের ভিতরে,গ্যারাজটা পার হয়েই ইব্রার বাসভবন।গ্যারাজে ঢুকে শাটারটা অফ করে দিয়ে সামনে তাকাতেই দেখে ইব্রার গুন্ডারা আড্ডা বাদ দিয়ে হাতে পিস্তল নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।সাইড পকেট থেকে আস্তে করে গানটা বের করে শোঁশোঁ করে কতগুলো বুলেট বের হয়ে প্রত্যেকটার হাতে গিয়ে লাগতেই পিস্তল গুলো ওদের হাত থেকে পড়ে গেলো।একেকজন ব্যাথায় কোঁকাচ্ছে,ওদের মধ্য হতে একজন উচুঁ গলায় বলে উঠলো,"এই কে রে তুই,আমাদের গায়ে শুট করার তোকে কে সাহস দিয়েছে,ইব্রাহিম ভাই জানতে পারলে তোককেএ------।গুলিটা একদম কপাল ভেদ করে পিছনে গিয়ে পড়লো।সবাই এখন ভয়ে ঘেমে আছে,আর ভাবছে কে হতে পারে এ ব্লাক হুডি পড়া শ্যাডো নয় তো?তখনই ওদের মনে হলো শুট করা লোকটা আস্তে আস্তে ওদের দিকে এগিয়ে আসছে।যখন আলোতে এসে চেয়ারটা টেনে নিয়ে বসলো,তখন সবার পিলে চমকে উঠার মতো অবস্থা,হ্যা,এটাই মিঃশ্যাডো,লাইভের শ্যাডো ও ঠিক এক বেশেই ছিলো।তখন আরেকজন বলে উঠলো তুইই কি তাহলে সে শ্যাড-------!ও বলার আগেই খুলি ভেদ করে বেড়িয়ে গেলো আরেকটা গুলি।সব কয়টা এবার ভয়ে চুপসে গেছে,কাঁপতে কাঁপতে ওদের জীবন যায় যায় অবস্থা।তখন শ্যাডো মুখ খুললো,"বি কুল ব্রো,আমার সামনে এতো উঁচু গলায় কথা বলা আর তুই-তোকারি করা আমার একদমই সহ্য হয়না।দুটো গেলো,তোদের ও সময় ঘনিয়ে আসছে।সবাই একসাথে কাকুতি মিনতি করে বলতে লাগলো,ভাই বিশ্বাস করেন আমাদের কোন দোষ নেই,ইব্রা আমাদের যেভাবে যেভাবে বলেছে,আমরা ঠিক সেভাবেই কাজ করেছি।
কথাটা বলার সাথে সাথে শ্যাডো রেগে গিয়ে একটাকে তার পায়ের নিচে এনে,মুখে কাপর ঢুকিয়ে,পকেট থেকে ব্লেডটা বের করে কানের থেকে নিয়ে আস্তে আস্তে করে গলার দিকে পোঁচ দিয়ে হাতটা ঘুরিয়ে আবার গলার চারপাশটায় ব্লেডের আগাটা দিয়ে একটা নকশার মতো করে ফেললো।ওদিকে ওর মুখে কাপর থাকায় চিৎকার ও করতে পারছে না।হঠাৎই ব্লেডটা ঘুরিয়ে সোজা ওর হৃদপিণ্ড বরাবর ঢুকিয়ে দিতেই কয়েকটা হেঁচকি তুলে একদম নিরব হয়ে গেলো।আর বাকি যে কয়টা বেঁচে ছিলো ওদের একজন এমন নির্মম মৃত্যু দেখে কলজে ফেটে মারা গেছে।আর বাকি গুলো ভয়ে ভয়ে শুধু একটা কথাই বলছে,আমাদের মাফ কইরা দেন ভাই,আর কখনো আমরা এসবে আসবো না,আর কখনো খুন খারাবী করবো না।দু'টি বুলেট পড়ার শব্দ আর দুইটার মৃত্যু।শ্যাডো বলে উঠলো,অনেক ইচ্ছে করছে তোদের মুক্তি দেয়ার,বাট কি করবো বল,আজ পর্যন্ত যারাই শ্যাডোর এ রুপ দেখেছে,তাদের কেহই বাঁচতে পারেনি।তাই তোদের ও বাঁচাতে পারছিনা ব্রো।এ বলে প্রত্যেকটার মাথায় এক একটা করে গুলি ঢুকিয়ে ইব্রার বাসার দিকে হাটা শুরু করলো।
মেইন দরজাটা খুলে ভিতরে গিয়েই দেখলো পুরো অন্ধকার।
সামনে এগুতেই কেউ একজন বলে উঠলো"আর এক পা ও এগোবি না,যেখানে আছিস সেখান থেকে নরা চরার চেষ্টা করলেই তোর মাথা বরাবার গুলি ঢুকিয়ে দেবো।
এ বলে শ্যাডোর দিকে আস্তে আস্তে এগিয়ে আসছিলো লোকটা,হালকা আলোতে যখন ওর পিস্তল তাক করা হাতটার একটু বুঝতে পেলো সাথে সাথেই ওর হাত বরাবর গুলি করে দিলো শ্যাডো।লোকটা একটা আত্ম চিৎকার দিয়ে পিছে পড়ে গেলো,আর হাত থেকে পিস্তলটা দূরে গিয়ে পরলো।
তখন জিজ্ঞেস করলো কে তুই,আমার এখানেই বা কি চাস,আমাকে মারতে চাস কেনো।
হুডিটা তুলে জোড়ে হেসে উঠে বলে উঠলো,শ্যাডোর মৃত্যুপুরী তে স্বাগতম...।
,
চলবে...।
writer: K. M. Maruf
.
ভাই প্লিজ আমার কোন ক্ষতি করিস না,আমাকে মারিস না,তোর পায়ে পড়ি আমি,আমার সাথে তো তোর কোন শত্রুতা নেই তাহলে আমা----!একটা বুলেটের খোসা পড়ার শব্দ এবং ওর মৃত্যু।কালো হুডিটা পড়ে লাশ টার দিকে এগিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে পকেট থেকে একটা কালো গোলাপ আর একটা চিরকুট রেখে নিজ গন্তব্যে বেরিয়ে পড়লো সে।
.
আজ এপ্রিলের ২৮ তারিখ,ফজরের নামাজ শেষ করে হালকা হাটা চলা করে টিভিটা অন করলো,প্রতিটা চ্যানালে একটাই নিউজ"কে বা কারা যেনো কাল রাতে দেশের একজন প্রতাপী ছাত্রনেতা কালু খন্দকারের খুন করেছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় এই যে লাশ টার বুকে একটা কালো গোলাপ আর একটা চিরকুট রেখেছে সেই অপরিচিত ঘাতক,যাতে "মিঃ শ্যাডো, স্বাগতম" লেখা ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি।এখন পর্যন্ত একটা রহস্যই হয়ে দাঁড়িয়েছে এ নামটি,এটা কোন গ্যাং এর নাম না ব্যক্তির নাম এ সম্পর্কে কোন ধারনাই দিতে পারছি না।আশা করি অতি তাড়াতাড়ি এ সম্পর্কে তথ্য আসবে আমাদের কাছে।সে পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন।প্রতিটা চ্যানেলে এই একটাই নিউজ।
টিভিটা অফ করে মুচকি হেসে কালো হুডিটা নিয়ে আবার বেড়িয়ে পড়লো গল্পের নায়ক মিঃ শ্যাডো,নতুন শিকারের সন্ধানে।ওর টার্গেট তারাই হয়,যারা খুন,ধর্ষণের মতো বড়ো বড়ো অপকর্ম করে আইন কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেরাচ্ছে।কালু খন্দকার ও এই কেস এর আসামি ছিলো,পরপর কয়েকটা খুন ও ধর্ষণ করে আইনের লোকদের টাকা দিয়ে ক্ষমতার অপব্যাবহার করে মুক্তি পেয়ে আবারো সে একই কাজ বারবার করে যাচ্ছে।আর সে হিসেবে শ্যাডোর প্রথম টার্গেটে নাম লেখিয়ে ফেলে ও।আর পরিণাম সেতো মৃত্যুই।
,
হুডিটা একটু উঁচু করে আশপাশে একটু চোখ বুলিয়ে নিলো ও,পাহাড়ার জন্য বেশ কিছু চ্যালা চামচা রেখেছে দেখা যায়,এটা বিড়বিড়িয়ে হালকা হেসে নিলো সে।সাইড পকেট থেকে রিলোড করা গানটা বের করে সাইলেন্সার লাগিয়ে ওদিকে তাকালো,আর শোঁ শোঁ করে কয়েকটা বুলেট বের হয়ে প্রত্যেকটার মাথায় গিয়ে বিঁধলো।গানটা সামনে এনে ধোঁয়ার গন্ধটা নিলো ও,এ গন্ধটা তার বড্ড পছন্দের,একটা গুলি বের হওয়া মানেই একটা অপরাধীর মৃত্যু।রিলোড করে আবার সাইড পকেটে গানটা রেখে,মুখে একটা চুইংগাম দিয়ে দরজাটা খুলে সোজা বেডরুমে চলে গেলো।আর ওদিকে পায়ের উপর পা দিয়ে সিগারেট টেনেই যাচ্ছে হিসাদ।ওর পাশে যে কেও একজন বসে আছে ওর এদিকে কোন খেয়াল ই নেই।হঠাৎই হিসাদের মুখ থেকে সিগারেট টা টান দিয়ে বের করে সোজা চোখে চেপে ধরলো শ্যাডো।ব্যাথায় চিৎকার দিয়ে উঠে চোখ ধরে কোঁকাতে কোঁকাতে চেয়ে দেখলো,কালো হুডি পড়া একজন মাথাটা নিচদিকে দিয়ে বসে আছে।এটা দেখে পিস্তলটা বের করতেই শুনতে পেলো,ওটা বের করে কোন লাভই নেই তোর,বাঁঁচবিই বা আর কতক্ষন।রাগে ক্রোধে চিৎকার করে জিজ্ঞেস করলো,কে তুই আর তোর সাহসই বা হলো কি করে আমার এখানে এসে আমার সাথে এমন বিহিভ করার।মুচকি হেসে বলে উঠলো এমন কোন যায়গা নেই যে মিঃশ্যাডো যেতে পারবে না,আর এমন কেহ জন্মও নেয়নি যে শ্যাডোকে আটকাবে।শ্যাডো নামটা শুনেই আৎকে উঠে একহাত পিছে চলে গেলো হিসাদ,ওর হাতে যে পিস্তল রয়েছে ওদিকে কোন খেয়ালই যেনো ওর।ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলো,তততারর মমানে ততুইই মেরেছিস কালু খন্দকার কে।আবারো হেসে উঠলো সে,তার হাসি দেখে হিসাদ যেনো ভয়ে একেবারে চুপসে গেছে।শ্যাডো বলে উঠলো"কুল ব্রো,এতো প্যারা নাও কেন,আজ রাতটাই তো আছে তোমার কাছে,অনেক হিসেব যে বাকি রয়ে গেছে তোমার"হিসাদ বলে উঠলো,কেন করছিস তুই এসব,আমাদের মেরেই বা কি লাভ পাবি? মুহুর্তেই ক্রোধে গানটা বের করে সোজা যে হাতে পিস্তল ছিলো ওই হাতে গুলি করে বসলো শ্যাডো।ব্যথায় কুঁকিয়ে উঠে জিজ্ঞেস করলো,দোষ টা কি আমার,যে এমন ভাবে যন্ত্রনা দিচ্ছিস।
আর কোন কথা না বলে মাথা বরাবর গুলি করে,ওর লাশটার দিকে এগিয়ে,একটা কালো গোলাপ আর একটা চিরকুট দিয়ে বেরিয়ে পড়লো নিজ গন্তব্যে।
একটু পরেই সাইরেন বাজিয়ে কয়েকটা পুলিশের গাড়ি ঢুকলো বাসাতে।নেমেই দেখতে পেলো কতগুলো লাশ পড়ে আছে,যাদের প্রত্যেকের কাছেই রয়েছে অত্যাধুনিক হাতিয়ার।এসব দেখে জলদি উপরে গিয়ে দেখলো হিসাদের লাশটা খাটের উপর পড়ে আছে,আর বুকের উপর কালো গোলাপ আর চিরকুট টা রাখা।
পুলিশ কমান্ডার আসাদ চিরকুট টা খুলে দেখতে পেলো সেখানে লেখা আছে"মিঃশ্যাডো,দ্বিতীয় আরেক শয়তানের মৃত্যু,আর হ্যা আজ রাত ঠিক বারোটায় ****** এ আইডি থেকে লাইভে আসবো,আর দু দুটো খুন কেন করলাম তাও পরিষ্কার করে দেবো,আবারো মৃত্যুপুরীতে স্বাগতম"
শেষ লেখাটা দেখে আসাদ চমকে উঠলো।
মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো,আর ভাবতে লাগলো,কে এই শ্যাডো,আর কি চায় ও,আর কেনইবা দুই দুইটা খুন করলো ও।
কিছুক্ষণের মধ্যেই সাংবাদিকরা এসে পড়লো।সব ক্যাপচার করে যখন চিরকুটে শ্যাডোর লাইভে আসার কথাটি দেখলো,সব বাদ দিয়ে এটাকেই টপিক বানিয়ে প্রচার করা শুরু করলো।
ফেসবুক আজ গরম হয়ে রয়েছে,সবাই অপেক্ষা করছে যে কখন ****** আইডি থেকে লাইভে আসবে শ্যাডো।
আর মাত্র আধঘন্টা রয়েছে,পরপর দুইটা খুন আর কালো গোলাপ আর চিরকুটে মিঃ শ্যাডো নামটা যেনো আজ সবার আশ্চর্যের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সব প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে ঠিক রাত ১২ টায় লাইভে আসলো শ্যাডো।
"আসসালামুআলাইকুম,আশা করছি ভালোই আছেন সবাই,পরপর দুইটা খুন করার পর হয়তো আপনাদের মনে এই শংকা জেগেছে যে,কে এই শ্যাডো আর কেনইবা পরপর দুইটা খুন করলো!আপনাদের মনে আমাকে নিয়ে হয়তো আরো অনেক জল্পনা কল্পনা চলছে,যা সময় মতো আমি ভেঙ্গে দেবো।এবার আসি খুনের ব্যাপারে,প্রথম আর দ্বিতীয় খুনের সূত্র এক যায়গায় গিয়ে মিশেছে,আর তা হলো খুন ও ধর্ষণ।ওরা প্রতিবার খুন করে পকেটে পিস্তল নিয়ে সাধারণ মানুষদের ভয় দেখিয়ে নিজ পাওয়ার দেখাচ্ছিলো।জোরপূর্বক মেয়েদেরকে ধর্ষণ করে সেগুলোকে রেকর্ড করে সেগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে মেয়েটাকে আত্মহত্যার পথে এগিয়ে দিয়ে তাদের বাবা-মায়ের সম্মানকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে।তাই এসব মানুষগুলোর বেঁচে থাকার কোন অধিকার আছে বলে আমি মনে করি না।যেখানে আইন ও তাদের ক্ষমতা ও টাকার কাছে ধরাশায়ী।সেখানে ওরা আরো বেশি পার পেয়ে যাচ্ছে বলে এসব অপকর্ম তারা আরো বেশি করার সাহস পাচ্ছে।আর কিছু বলার নেই আমার,আপনারা যদি মনে করেন আমি ভুল করছি,তাহলে তা আপনাদের কাছেই রাখুন,কারণ আমি প্রতিটা পথ ভেবেচিন্তেই নেই।
আর হ্যা যতদিন এসব চলতে থাকবে,আর যারাই বা এসব অপকর্ম করে দেশ আর দশের ক্ষতি করবে,তাদেরকে, শ্যাডোর মৃত্যুপুরীতে স্বাগতম।আসসালামু আলাইকুম" বলেই লাইভটা কেটে দিলো শ্যাডো।আজ আরেকটা শিকারে বের হতে হবে তার।তার আজ রাতের শিকারটা হলো ইব্রাহিম ওরফে কানা মাস্তান নামের এক গ্যাং লিডার, যে কি না সামান্য এক জমিনের কারণে একটা পরিবার কে খুন করে।যে পরিবারের মাথা গোজার জায়গা বলতে শুধু অতটুকুই ছিলো।আর জায়গাটা মেইন রোডের পাশে হওয়ায় ওদিকেই বদনজর পড়ে যায় ইব্রার।তাই লোভ না সামলাতে পেরে প্রথম ওদের হুমকি দিয়ে তাড়ানোর চেষ্টা করে ভেবে দেখার সিদ্ধান্ত দিয়ে চলে যায়।পরিবার টা উপায় না পেয়ে পুলিশের কাছে ওর নামে বিচার নিয়ে যায়।এসপি হৃদয় ইব্রার ব্যাপারে কড়া আইন নিবেন বলে তাদের পাঠিয়ে দিয়ে একটা নাম্বার ডায়াল করে কল করে কি যেনো বললো।
আর তার কতক্ষন পড়েই ইব্রার রোষানলে পরে ঝরে যায় কয়েকটি প্রাণ।হ্যা আজকের শিকারই হলো এই ইব্রাহিম ওরফে কানা মাস্তান।
,
ব্লাক হুডিটা পড়ে নিয়ে সাইড পকেটে গান টা রিলোড করে সাইলেন্সারটা লাগিয়ে রেখে অন্য পকেটে একটি ধারালো ব্লেড প্যাক করে,মুখে চুইংগাম দিয়ে আস্তে আস্তে হেটে চলছিলো ইব্রার আস্তানার দিকে।বেশ কিছু চ্যালাপেলাদের আড্ডা দিতে দেখা গেলো গ্যারাজের ভিতরে,গ্যারাজটা পার হয়েই ইব্রার বাসভবন।গ্যারাজে ঢুকে শাটারটা অফ করে দিয়ে সামনে তাকাতেই দেখে ইব্রার গুন্ডারা আড্ডা বাদ দিয়ে হাতে পিস্তল নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।সাইড পকেট থেকে আস্তে করে গানটা বের করে শোঁশোঁ করে কতগুলো বুলেট বের হয়ে প্রত্যেকটার হাতে গিয়ে লাগতেই পিস্তল গুলো ওদের হাত থেকে পড়ে গেলো।একেকজন ব্যাথায় কোঁকাচ্ছে,ওদের মধ্য হতে একজন উচুঁ গলায় বলে উঠলো,"এই কে রে তুই,আমাদের গায়ে শুট করার তোকে কে সাহস দিয়েছে,ইব্রাহিম ভাই জানতে পারলে তোককেএ------।গুলিটা একদম কপাল ভেদ করে পিছনে গিয়ে পড়লো।সবাই এখন ভয়ে ঘেমে আছে,আর ভাবছে কে হতে পারে এ ব্লাক হুডি পড়া শ্যাডো নয় তো?তখনই ওদের মনে হলো শুট করা লোকটা আস্তে আস্তে ওদের দিকে এগিয়ে আসছে।যখন আলোতে এসে চেয়ারটা টেনে নিয়ে বসলো,তখন সবার পিলে চমকে উঠার মতো অবস্থা,হ্যা,এটাই মিঃশ্যাডো,লাইভের শ্যাডো ও ঠিক এক বেশেই ছিলো।তখন আরেকজন বলে উঠলো তুইই কি তাহলে সে শ্যাড-------!ও বলার আগেই খুলি ভেদ করে বেড়িয়ে গেলো আরেকটা গুলি।সব কয়টা এবার ভয়ে চুপসে গেছে,কাঁপতে কাঁপতে ওদের জীবন যায় যায় অবস্থা।তখন শ্যাডো মুখ খুললো,"বি কুল ব্রো,আমার সামনে এতো উঁচু গলায় কথা বলা আর তুই-তোকারি করা আমার একদমই সহ্য হয়না।দুটো গেলো,তোদের ও সময় ঘনিয়ে আসছে।সবাই একসাথে কাকুতি মিনতি করে বলতে লাগলো,ভাই বিশ্বাস করেন আমাদের কোন দোষ নেই,ইব্রা আমাদের যেভাবে যেভাবে বলেছে,আমরা ঠিক সেভাবেই কাজ করেছি।
কথাটা বলার সাথে সাথে শ্যাডো রেগে গিয়ে একটাকে তার পায়ের নিচে এনে,মুখে কাপর ঢুকিয়ে,পকেট থেকে ব্লেডটা বের করে কানের থেকে নিয়ে আস্তে আস্তে করে গলার দিকে পোঁচ দিয়ে হাতটা ঘুরিয়ে আবার গলার চারপাশটায় ব্লেডের আগাটা দিয়ে একটা নকশার মতো করে ফেললো।ওদিকে ওর মুখে কাপর থাকায় চিৎকার ও করতে পারছে না।হঠাৎই ব্লেডটা ঘুরিয়ে সোজা ওর হৃদপিণ্ড বরাবর ঢুকিয়ে দিতেই কয়েকটা হেঁচকি তুলে একদম নিরব হয়ে গেলো।আর বাকি যে কয়টা বেঁচে ছিলো ওদের একজন এমন নির্মম মৃত্যু দেখে কলজে ফেটে মারা গেছে।আর বাকি গুলো ভয়ে ভয়ে শুধু একটা কথাই বলছে,আমাদের মাফ কইরা দেন ভাই,আর কখনো আমরা এসবে আসবো না,আর কখনো খুন খারাবী করবো না।দু'টি বুলেট পড়ার শব্দ আর দুইটার মৃত্যু।শ্যাডো বলে উঠলো,অনেক ইচ্ছে করছে তোদের মুক্তি দেয়ার,বাট কি করবো বল,আজ পর্যন্ত যারাই শ্যাডোর এ রুপ দেখেছে,তাদের কেহই বাঁচতে পারেনি।তাই তোদের ও বাঁচাতে পারছিনা ব্রো।এ বলে প্রত্যেকটার মাথায় এক একটা করে গুলি ঢুকিয়ে ইব্রার বাসার দিকে হাটা শুরু করলো।
মেইন দরজাটা খুলে ভিতরে গিয়েই দেখলো পুরো অন্ধকার।
সামনে এগুতেই কেউ একজন বলে উঠলো"আর এক পা ও এগোবি না,যেখানে আছিস সেখান থেকে নরা চরার চেষ্টা করলেই তোর মাথা বরাবার গুলি ঢুকিয়ে দেবো।
এ বলে শ্যাডোর দিকে আস্তে আস্তে এগিয়ে আসছিলো লোকটা,হালকা আলোতে যখন ওর পিস্তল তাক করা হাতটার একটু বুঝতে পেলো সাথে সাথেই ওর হাত বরাবর গুলি করে দিলো শ্যাডো।লোকটা একটা আত্ম চিৎকার দিয়ে পিছে পড়ে গেলো,আর হাত থেকে পিস্তলটা দূরে গিয়ে পরলো।
তখন জিজ্ঞেস করলো কে তুই,আমার এখানেই বা কি চাস,আমাকে মারতে চাস কেনো।
হুডিটা তুলে জোড়ে হেসে উঠে বলে উঠলো,শ্যাডোর মৃত্যুপুরী তে স্বাগতম...।
,
চলবে...।
Hasibul hasan santo, Sk sagor, Sk imran, Rayhan50, Raihan khan, Tanusri roi, Mr faruk and লেখাটি পছন্দ করেছে
Permissions in this forum:
You cannot reply to topics in this forum