- Rasel islamনবাগত
- Posts : 8
স্বর্ণমুদ্রা : 1350
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-06-05
অতিপ্রাকৃত
Sat Jun 05, 2021 11:06 pm
তপ্ত দুপুর।মাথার উপর আগুন ঝরাচ্ছে অবিবেচক সূর্য। তবু আমরা সবাই ছিলাম প্রচন্ড উৎফুল্ল। কারণ অনার্স ফাইনালের শেষ পরীক্ষা ছিলো সেদিন। বন্ধুরা সবাই মাঠে গোল হয়ে আড্ডায় মেতে উঠেছিলাম। গল্পে গল্পে পেরিয়েছিলো অনেকটা সময়। আমাদের কলেজটা ছিলো শহর থেকে বেশ খানিকটা দূরে। শহরের সাথে যাতায়াত ব্যবস্হা বলতে কলেজ বাস আর ভ্যান।কদাচিৎ হয়ত রিক্সা পাওয়া যেতো।খুব এনার্জেটিক না হলে কেউ আদম গাড়ি হাঁকাতে সাহস করত না।
তো সেদিন যেহেতু শেষ পরীক্ষা আর আমরা আড্ডাবাজি করে দেরি করে ফেলেছি তাই তখন আর কোনো ভ্যান বা রিক্সা পাচ্ছিলাম না।সবাই যে যার মতো ব্যবস্হা করে চলে গেছে। আমি আর বন্ধু বাহার অগত্যা সিদ্ধান্ত নিলাম হেঁটেই বাড়ি ফিরবো আজ।কোনো উপায় তো নেই। হাঁটছি তো হাঁটছি। পথ যেন ফুরায় না।দুপাশে সুউচ্চ মেহগনি, গর্জন, কৃষ্ণচূড়া আর ঝোপঝাড় ছাড়া কিছু দেখা যায় না।মাইল খানেকের মধ্যে হয়ত কোনো বসত বাড়ি নেই। বিষয়টা খেয়াল করার পরই হঠাৎ আমাদের পানির তৃষ্ণা পেয়ে গেলো। সে এমনই তৃষ্ণা যেন এই মুহূর্তে পানি না পেলে মারা ই পড়ব।কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেব কিনা ভাবছি।এমন সময় চোখে পড়লো ঝোপের আড়ালে একটা ঘর।শিল্পীর আঁকা দোচালা টিনের ঘর যেমন হয়।উঠান থেকে বেশ কিছুটা উঁচুতে খোলা মাটির বারান্দা।
আমরা পরামর্শ করে এগিয়ে গেলাম বাড়িটার দিকে। তৃষ্ণার্ত পথচারী পানি চাইলে কেউ কি ফিরাবে এই ভরসায়।এলাকাটা ভীষণ রকম নিরব।গা ছমছমে পরিবেশ। কাছাকাছি গেলে শুনতে পেলাম ভেতরে কেউ একজন ক্ষীণ কন্ঠে সুর করে কোরআন তেলাওয়াত করছে।শব্দগুলো বোঝা যাচ্ছে না শুধু সুর শোনা যাচ্ছে। কোনো তরুণী কিংবা কিশোরী হবে হয়ত।আমরা খুশি হয়ে উঠলাম।গলা পরিষ্কার করে একটু উচ্চ স্বরে ডাকলাম - ভেতরে কেউ আছেন? নির্দিষ্ট বিরতিতে কয়েকবার ডাকার পর ক্যাচক্যাচ শব্দে দরজাটা সামান্য ফাকা করে এক বৃদ্ধ মুখ বাড়ালো।তিনি নির্লিপ্ত ভংগীতে আমাদের পরখ করছিলেন। আমরা সালাম জানিয়ে আমাদের আর্জি পেশ করলাম বিনীতভাবে। কিন্তু তার মুখে কোনো ভাবান্তর হলোনা।হয়তো প্রায়ই এই পথের যাত্রীরা তাকে এভাবে জ্বালাতন করে। তিনি হাতের ইশারায় আমাদের ভেতরে ডাকলেন। আমরা আমতা আমতা করছি। অচেনা বাড়ি, ভেতরে যাওয়া ঠিক হবে কিনা। ততক্ষণে বন্ধু বাহার দরজার দিকে এগিয়েছে। আমিও তাকে অনুসরণ করলাম।
ভেতরে ঢোকার পর একটা সুন্দর ঘ্রান ভেসে এলো নাকে। ছোট বাচ্চার গায়ে থেকে যে ট্যালকম পাউডারের ঘ্রান আসে তেমন।বৃদ্ধ একটা চৌকি ইশারা করে বসতে বলে ভেতরে চলে গেলো। মিষ্টি সুরেলা সেই কন্ঠ তখনো কানে বাজছিলো।আমরা বসে আছি তো আছি। বৃদ্ধের দেখা নেই। পানি আনতে এতো সময় লাগে? এমন নিস্তব্ধ অচেনা ঘরে বসে কেমন যেন ভয় ভয় লাগছিলো। অবশেষে সেই নারী কন্ঠের সুর থামলো এবং হিজাব পরিহিতা একজন জগ আর গ্লাস হাতে ভেতরে ঢুকলো। আমরা আর কালবিলম্ব না করে ঢকঢক করে পানি খেয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে বাড়ির দিকে রওনা করলাম।পথে বৃদ্ধ আর তার কন্যাকে নিয়ে খুনসুটি, হাসাহাসি করতে ছাড়লাম না।
কিছুদিন পর খেয়াল করলাম আমি হাঁটলে মনে হয় কেউ যেন আমাকে অনুসরণ করছে।পেছনে ফিরে কাউকে দেখিনা।একাকী কেনো খাটের উপর বসলে অনুভব করি খাটের অন্য প্রান্তে কেউ যেন ধপ করে বসলো।শুয়ে থাকলে বুঝতে পারি পাশেই কেউ একজন নড়েচড়ে উঠলো।খাটে পা ঝুলিয়ে বসলে মনে হয় কেউ হয়তো এখনই পা জাপটে ধরবে।ওয়াশরুমে যেতে ভয় হয়।মনে হয় দরজা খুল্লেই দেখবো ভেন্টিলেটর এ মুখ ঢুকিয়ে কেউ একজন আমার দিকে তাকিয়ে দাঁত বের করে হাসছে। আর এমন অনুভূতি যখন হয় তখন ট্যালকম পাউডারের ঘ্রানে ভরে যায় ঘর।এটা আমার নিছক কল্পনা নাকি মানসিক সমস্যা, ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা। বন্ধু বাহারকে জিজ্ঞেস করতে হবে তার কি সমাচার!!
আরাফ সুলতান।
তো সেদিন যেহেতু শেষ পরীক্ষা আর আমরা আড্ডাবাজি করে দেরি করে ফেলেছি তাই তখন আর কোনো ভ্যান বা রিক্সা পাচ্ছিলাম না।সবাই যে যার মতো ব্যবস্হা করে চলে গেছে। আমি আর বন্ধু বাহার অগত্যা সিদ্ধান্ত নিলাম হেঁটেই বাড়ি ফিরবো আজ।কোনো উপায় তো নেই। হাঁটছি তো হাঁটছি। পথ যেন ফুরায় না।দুপাশে সুউচ্চ মেহগনি, গর্জন, কৃষ্ণচূড়া আর ঝোপঝাড় ছাড়া কিছু দেখা যায় না।মাইল খানেকের মধ্যে হয়ত কোনো বসত বাড়ি নেই। বিষয়টা খেয়াল করার পরই হঠাৎ আমাদের পানির তৃষ্ণা পেয়ে গেলো। সে এমনই তৃষ্ণা যেন এই মুহূর্তে পানি না পেলে মারা ই পড়ব।কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেব কিনা ভাবছি।এমন সময় চোখে পড়লো ঝোপের আড়ালে একটা ঘর।শিল্পীর আঁকা দোচালা টিনের ঘর যেমন হয়।উঠান থেকে বেশ কিছুটা উঁচুতে খোলা মাটির বারান্দা।
আমরা পরামর্শ করে এগিয়ে গেলাম বাড়িটার দিকে। তৃষ্ণার্ত পথচারী পানি চাইলে কেউ কি ফিরাবে এই ভরসায়।এলাকাটা ভীষণ রকম নিরব।গা ছমছমে পরিবেশ। কাছাকাছি গেলে শুনতে পেলাম ভেতরে কেউ একজন ক্ষীণ কন্ঠে সুর করে কোরআন তেলাওয়াত করছে।শব্দগুলো বোঝা যাচ্ছে না শুধু সুর শোনা যাচ্ছে। কোনো তরুণী কিংবা কিশোরী হবে হয়ত।আমরা খুশি হয়ে উঠলাম।গলা পরিষ্কার করে একটু উচ্চ স্বরে ডাকলাম - ভেতরে কেউ আছেন? নির্দিষ্ট বিরতিতে কয়েকবার ডাকার পর ক্যাচক্যাচ শব্দে দরজাটা সামান্য ফাকা করে এক বৃদ্ধ মুখ বাড়ালো।তিনি নির্লিপ্ত ভংগীতে আমাদের পরখ করছিলেন। আমরা সালাম জানিয়ে আমাদের আর্জি পেশ করলাম বিনীতভাবে। কিন্তু তার মুখে কোনো ভাবান্তর হলোনা।হয়তো প্রায়ই এই পথের যাত্রীরা তাকে এভাবে জ্বালাতন করে। তিনি হাতের ইশারায় আমাদের ভেতরে ডাকলেন। আমরা আমতা আমতা করছি। অচেনা বাড়ি, ভেতরে যাওয়া ঠিক হবে কিনা। ততক্ষণে বন্ধু বাহার দরজার দিকে এগিয়েছে। আমিও তাকে অনুসরণ করলাম।
ভেতরে ঢোকার পর একটা সুন্দর ঘ্রান ভেসে এলো নাকে। ছোট বাচ্চার গায়ে থেকে যে ট্যালকম পাউডারের ঘ্রান আসে তেমন।বৃদ্ধ একটা চৌকি ইশারা করে বসতে বলে ভেতরে চলে গেলো। মিষ্টি সুরেলা সেই কন্ঠ তখনো কানে বাজছিলো।আমরা বসে আছি তো আছি। বৃদ্ধের দেখা নেই। পানি আনতে এতো সময় লাগে? এমন নিস্তব্ধ অচেনা ঘরে বসে কেমন যেন ভয় ভয় লাগছিলো। অবশেষে সেই নারী কন্ঠের সুর থামলো এবং হিজাব পরিহিতা একজন জগ আর গ্লাস হাতে ভেতরে ঢুকলো। আমরা আর কালবিলম্ব না করে ঢকঢক করে পানি খেয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে বাড়ির দিকে রওনা করলাম।পথে বৃদ্ধ আর তার কন্যাকে নিয়ে খুনসুটি, হাসাহাসি করতে ছাড়লাম না।
কিছুদিন পর খেয়াল করলাম আমি হাঁটলে মনে হয় কেউ যেন আমাকে অনুসরণ করছে।পেছনে ফিরে কাউকে দেখিনা।একাকী কেনো খাটের উপর বসলে অনুভব করি খাটের অন্য প্রান্তে কেউ যেন ধপ করে বসলো।শুয়ে থাকলে বুঝতে পারি পাশেই কেউ একজন নড়েচড়ে উঠলো।খাটে পা ঝুলিয়ে বসলে মনে হয় কেউ হয়তো এখনই পা জাপটে ধরবে।ওয়াশরুমে যেতে ভয় হয়।মনে হয় দরজা খুল্লেই দেখবো ভেন্টিলেটর এ মুখ ঢুকিয়ে কেউ একজন আমার দিকে তাকিয়ে দাঁত বের করে হাসছে। আর এমন অনুভূতি যখন হয় তখন ট্যালকম পাউডারের ঘ্রানে ভরে যায় ঘর।এটা আমার নিছক কল্পনা নাকি মানসিক সমস্যা, ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা। বন্ধু বাহারকে জিজ্ঞেস করতে হবে তার কি সমাচার!!
আরাফ সুলতান।
Santa akter, Sk imran, Rasel islam, Badol hasan, Mr faruk, Saiful Osman, Sumaiya akter and লেখাটি পছন্দ করেছে
Permissions in this forum:
You cannot reply to topics in this forum