- Afifa sornaনবাগত
- Posts : 7
স্বর্ণমুদ্রা : 1169
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-09-19
ডার্ক_হাউজ
Sun Sep 19, 2021 12:49 am
লেখিকা_মৌসুমি_আক্তার
বান্ধবীর মৃত বয়ফ্রেন্ড যখন আমাকে পাত্রী হিসাবে দেখতে এসছিলো আমি চমকে উঠেছিলাম দেখে।আমার কাছে প্রথমে মনে হচ্ছিলো হয়তো এক রকম দেখতে দুটো মানুষ আছে পৃথিবীতে। অনেক সময় মানুষের সাথে মানুষের অনেকটা মিল খুজে পাওয়া যায়।অর্নব কে দেখে আমার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিলো।
মানুষটা যে অর্ণব না আমি সেটা শিওর হওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে থাকি কিন্তু আমি যতবারই তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি ততবারই যেন চমকে উঠেছি। প্রথমত আমার মনে হয়েছিল যে এটা অর্ণব হতে পারে না কারণ যে মানুষটা মারা গিয়েছে দু'বছর আগে সে কিভাবে ফিরে আসবে পৃথিবীতে একই ফেস এর অনেক ধরনের মানুষই আছে। তবুও আমার মনের মাঝে কেমন যেনো করছিল তাই আমি বিভিন্নভাবে ট্রাই করার চেষ্টা করছিলাম। অর্নবের ঠোঁটের নিচে ছোট্ট একটা কালো তিল ছিল। খুব অদ্ভুত ভাবে এই ছেলেটারও ঠোঁটের নিচে ছোট্ট একটা তিল আছে। অর্নব এর সাথে হুবহু মিল একটা মানুষের একটা মানুষের এতটা মিল কিভাবে হতে পারে। পাত্র পক্ষের সামনে বসে থেকে আমি পুরোটা সময়ই অর্ণবকে দেখে গিয়েছি এটা কি সত্যিই সে নাকি আমার মনের ভুল। অর্ণব কি তাহলে কোন ভাবে বেঁচে গিয়েছিল কিভাবে বেঁচে যাবে আমার চোখের সামনে তো অর্নব কে দাফন করা হয়েছিল। অর্ণব মৃত্যুর কোন কারণই ছিল না তবুও অর্ণব কাউকে কিছু না বলে সুইসাইড করেছিলো। কিসের কষ্ট লুকিয়ে রেখেছিলো ওর মনের মাঝে সেটা কেউ আজও জানতে পারিনি। না পাওয়া গেছে কোন ক্লু,না চিরকুট লিখে গিয়েছে কোন অভিযোগ পত্র না কাউকে দোষী করে গেছে। অর্ণব নিজের হাত কেটে তাসনিমের নাম লিখেছিলো, আমি অনেক সময় ধরে দেখার চেষ্টা করলাম দেখি অর্নবের বাম হাতে তাসনিমের নামটা লেখা আছে কিনা। আমি খেয়াল করে দেখলাম ছেলেটার হাতে সেই তাসনিম নামটা লেখা আছে। আমি শিওর হলাম এটাই অর্ণব এটা যদি অর্নব না হবে তাহলে এর হাতে তাসনিম লেখাটা কিভাবে এলো? তাছাড়া অর্নব বাইক এক্সিডেন্ট করেছিলাম অ্যাক্সিডেন্ট করে ওর বাম ভ্রু কেটে যায় ছেলেটার ও সেইম। এ সব কিছু দেখে আমার শরীর ঘামছিলো খুব।।
প্রায় ছ'মাস ধরে আমার বিয়ের কথা চলছে।বিয়েটা পারিবারিক ভাবেই ঠিক হয়েছে।এই ছয়টা মাস চুটিয়ে প্রেম করেছিলাম হবু বরের সাথে।কারণ দুজনের আন্ডারস্ট্যান্ডিং যাতে ঠিক থাকে তাই বাসা থেকে নাম্বার দিয়েছিলো দু'জনে যাতে কথা বলে সব ঠিক করে নিতে পারি।আমার যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিলো সে হলো আমার বেষ্টু তাসনিম এর দেবর রেদওয়ান।তাসনিম আর আমি খুব ক্লোজ ফ্রেন্ড ছিলাম।আমার পরিচয় আমার নাম মৌ।
"ফ্লাশব্যাক।
তাসনিম,আমি,অর্নব,একই সাথে লেখাপড়া করেছি।এ বছরে আমাদের গ্রাজুয়েশন শেষ হয়েছে।সব সময় বলতাম দুই বান্ধবী এক বাড়িতেই বিয়ে করবো কখনো আলাদা হবো না।তাই তাসনিম ওর দেবর রেদওয়ানের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করে।তারপর আমাকে দেখতে যাওয়ার একটা ডেট ফিক্সড করে।আর সেদিন আমার পৃথিবী উল্টা পাল্টা হয়ে যায় রেদওয়ানের জায়গা অর্নব কে দেখে।অর্নব ছিলো তাসনিমের বয়ফ্রেন্ড।আজ থেকে দু'বছর আগে খুব অদ্ভুত ভাবে সুইসাইড করে মারা গেছিলো অর্নব। অর্নব এর মৃত্যুর পর তাসনিম খুব ভেঙে পড়েছিলো।ভালবাসার মানুষ মারা গেলে জীবন টা এলোমেলো হয়ে যায় এটাই স্বাভাবিক। পরে পারিবারিক ভাবে তাসনিমের বিয়ে রেজওয়ানের সাথে দেওয়া হয়।"
সেদিন অর্ণব এর সাথে আমাকে আলাদা রুমে কথা বলতে দেওয়া হয়।ভয়ে আমার শরীর হীম হয়ে আসে।তখন ছিলো আরো রাত।ওরা আমাকে সন্ধ্যার দিকে দেখতে এসছিলো।সবাই নিচে বসার রুমে বসে গল্প করছে আর আমাকে একটা মৃত মানুষের সাথে দো'তলার একটা রুমে কথা বলতে দেওয়া হয়।
অর্নব রুমে প্রবেশ এর আগে দেখি আয়নায় রক্ত দিয়ে অর্নব এর নাম টা লেখা ওঠে তারপর ওটায় আগুন ধরে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।ভয়ে যখন আমার হাত পা অবস হয়ে যাচ্ছিলো আমি রুম থেকে বেরোনোর চেষ্টা করছিলাম তখন অর্নব পেছন থেকে আমার ঘাটে হাত রাখে।আমি চাইলেও আর নড়তে পারছিলাম না।এত ভারী কোনো জিনিস আমার ঘাড়ে পড়েছিলো আমি চাইলেও আর সরতে পারছিলাম না।আমি পেছনে তাকিয়ে দেখি অর্নব এর লাশ টা ফ্যানের সাথে ঝুলছে।ঠিক সেদিনের মতো যেদিন অর্নবের সুইসাইড করা বডি টা ঝুলছিলো।রুমের দরজা জানালা কিছুই খুলতে পারছিলাম না।বাইরে সব জায়গা আলো থাকলেও আমার রুমে কোনো প্রকার কোনো আলো ছিলো না।রুমের লাইট টা এমনিতেই বন্ধ হয়ে গেছিলো।নিকশ কালো অন্ধকারে অর্নবের ঝুলন্ত লাশটা হাওয়ায় দোল খাচ্ছিলো আর আমার শরিরর এসে বাড়ি লাগছিলো।বরফের ন্যায় ঠান্ডা সে শরীর।
আমি বন্ধ রুমে প্রচুর কাঁন্নাকাটি করছিলাম আমার প্রাণ যাবে যাবে এমন সময় কেউ দরজাটা খুলে দেই।দরজার কড়া নড়ার শব্দ টাও খুব ভয়ানক ছিলো।চারদিক কেমন যেনো ছমছম করছিলো।আমি কারো স্পর্শ অনুভব করতে পারি।খুব ই অচেনা কেউ আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে ভয় পেও না আমি আছি।কন্ঠ টা যেনো খুব চেনা আমার।আমি ভয় ভয় কন্ঠে প্রশ্ন করেছিলাম কে আপনি? তখন সে উত্তর দেই ডার্ক হাউজ এ যার মৃত্যু হয়েছিলো আমি সে।আমি শিউরে উঠি তার কথা শুনে।খুব জোরে চিৎকার দেওয়ার পর দেখি আমার চারপাশে সবাই হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
আমার সামনে রেদওয়ান নামক ছেলেটি বসে আছে।সে আমাকে বলে কি হলো মৌ কোনো পোকা দেখেছো।।
বাকিরা বলে এভাবে চিৎকার এর কারন কি।
আম্মু বলে যাও রেদওয়ানের সাথে আলাদা কথা বলে নাও তোমাদের বিয়ে এক সপ্তাহ বাদেই হবেই।
আমি যেনো আকাশ থেকে পড়ি এত সময় আমার সাথে যেগুলা হলো সেগুলা কি ছিলো।আমি তো সেখানেই বসে আছি।আমি রেদওয়ানের সাথে এখনো আলাদা কথা বলতে যায় নি।এটা কিভাবে সম্ভব। আমি এখনো এখানে কেনো? আমার ভয়ে তখন ও বুক কাঁপছিলো।আমার শরীরের পশম তখন ও শিউরে ছিলো। অথচ আমি সবার মাঝেই আছি।আর এই রেদওয়ানের জায়গা তো অর্নব ই ছিলো।
এটা কিছুতেই আমার কল্পনা হতে পারে না।এত সময় যা হয়েছিলো সব সত্যি হয়েছিলো।আমাকে দুঃচিন্তা করতে দেখে রেদওয়ান বলে মৌ এর হয়তো আনইজি লাগছে থাক আলাদা কথা না বললেও হবে।
যাওয়ার সময় রেদওয়ান খুব অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে, ওর এ চাওনি টা স্বাভাবিক লাগে নি আমার।
আমি দৌঁড়ে উপরে গেলাম।এগুলা যদি আমার মনের ভুল হয় তাহলে উপরের রুমে গেলেই বুঝতে পারবো।
দো'তলার রুমে গিয়ে আমার পায়ের নিচের মাটি সরে গেলো।ওটা সত্যি অর্ণব ছিলো।
আমি যা দেখলাম তার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।
***চলবে***
বান্ধবীর মৃত বয়ফ্রেন্ড যখন আমাকে পাত্রী হিসাবে দেখতে এসছিলো আমি চমকে উঠেছিলাম দেখে।আমার কাছে প্রথমে মনে হচ্ছিলো হয়তো এক রকম দেখতে দুটো মানুষ আছে পৃথিবীতে। অনেক সময় মানুষের সাথে মানুষের অনেকটা মিল খুজে পাওয়া যায়।অর্নব কে দেখে আমার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিলো।
মানুষটা যে অর্ণব না আমি সেটা শিওর হওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে থাকি কিন্তু আমি যতবারই তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি ততবারই যেন চমকে উঠেছি। প্রথমত আমার মনে হয়েছিল যে এটা অর্ণব হতে পারে না কারণ যে মানুষটা মারা গিয়েছে দু'বছর আগে সে কিভাবে ফিরে আসবে পৃথিবীতে একই ফেস এর অনেক ধরনের মানুষই আছে। তবুও আমার মনের মাঝে কেমন যেনো করছিল তাই আমি বিভিন্নভাবে ট্রাই করার চেষ্টা করছিলাম। অর্নবের ঠোঁটের নিচে ছোট্ট একটা কালো তিল ছিল। খুব অদ্ভুত ভাবে এই ছেলেটারও ঠোঁটের নিচে ছোট্ট একটা তিল আছে। অর্নব এর সাথে হুবহু মিল একটা মানুষের একটা মানুষের এতটা মিল কিভাবে হতে পারে। পাত্র পক্ষের সামনে বসে থেকে আমি পুরোটা সময়ই অর্ণবকে দেখে গিয়েছি এটা কি সত্যিই সে নাকি আমার মনের ভুল। অর্ণব কি তাহলে কোন ভাবে বেঁচে গিয়েছিল কিভাবে বেঁচে যাবে আমার চোখের সামনে তো অর্নব কে দাফন করা হয়েছিল। অর্ণব মৃত্যুর কোন কারণই ছিল না তবুও অর্ণব কাউকে কিছু না বলে সুইসাইড করেছিলো। কিসের কষ্ট লুকিয়ে রেখেছিলো ওর মনের মাঝে সেটা কেউ আজও জানতে পারিনি। না পাওয়া গেছে কোন ক্লু,না চিরকুট লিখে গিয়েছে কোন অভিযোগ পত্র না কাউকে দোষী করে গেছে। অর্ণব নিজের হাত কেটে তাসনিমের নাম লিখেছিলো, আমি অনেক সময় ধরে দেখার চেষ্টা করলাম দেখি অর্নবের বাম হাতে তাসনিমের নামটা লেখা আছে কিনা। আমি খেয়াল করে দেখলাম ছেলেটার হাতে সেই তাসনিম নামটা লেখা আছে। আমি শিওর হলাম এটাই অর্ণব এটা যদি অর্নব না হবে তাহলে এর হাতে তাসনিম লেখাটা কিভাবে এলো? তাছাড়া অর্নব বাইক এক্সিডেন্ট করেছিলাম অ্যাক্সিডেন্ট করে ওর বাম ভ্রু কেটে যায় ছেলেটার ও সেইম। এ সব কিছু দেখে আমার শরীর ঘামছিলো খুব।।
প্রায় ছ'মাস ধরে আমার বিয়ের কথা চলছে।বিয়েটা পারিবারিক ভাবেই ঠিক হয়েছে।এই ছয়টা মাস চুটিয়ে প্রেম করেছিলাম হবু বরের সাথে।কারণ দুজনের আন্ডারস্ট্যান্ডিং যাতে ঠিক থাকে তাই বাসা থেকে নাম্বার দিয়েছিলো দু'জনে যাতে কথা বলে সব ঠিক করে নিতে পারি।আমার যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিলো সে হলো আমার বেষ্টু তাসনিম এর দেবর রেদওয়ান।তাসনিম আর আমি খুব ক্লোজ ফ্রেন্ড ছিলাম।আমার পরিচয় আমার নাম মৌ।
"ফ্লাশব্যাক।
তাসনিম,আমি,অর্নব,একই সাথে লেখাপড়া করেছি।এ বছরে আমাদের গ্রাজুয়েশন শেষ হয়েছে।সব সময় বলতাম দুই বান্ধবী এক বাড়িতেই বিয়ে করবো কখনো আলাদা হবো না।তাই তাসনিম ওর দেবর রেদওয়ানের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করে।তারপর আমাকে দেখতে যাওয়ার একটা ডেট ফিক্সড করে।আর সেদিন আমার পৃথিবী উল্টা পাল্টা হয়ে যায় রেদওয়ানের জায়গা অর্নব কে দেখে।অর্নব ছিলো তাসনিমের বয়ফ্রেন্ড।আজ থেকে দু'বছর আগে খুব অদ্ভুত ভাবে সুইসাইড করে মারা গেছিলো অর্নব। অর্নব এর মৃত্যুর পর তাসনিম খুব ভেঙে পড়েছিলো।ভালবাসার মানুষ মারা গেলে জীবন টা এলোমেলো হয়ে যায় এটাই স্বাভাবিক। পরে পারিবারিক ভাবে তাসনিমের বিয়ে রেজওয়ানের সাথে দেওয়া হয়।"
সেদিন অর্ণব এর সাথে আমাকে আলাদা রুমে কথা বলতে দেওয়া হয়।ভয়ে আমার শরীর হীম হয়ে আসে।তখন ছিলো আরো রাত।ওরা আমাকে সন্ধ্যার দিকে দেখতে এসছিলো।সবাই নিচে বসার রুমে বসে গল্প করছে আর আমাকে একটা মৃত মানুষের সাথে দো'তলার একটা রুমে কথা বলতে দেওয়া হয়।
অর্নব রুমে প্রবেশ এর আগে দেখি আয়নায় রক্ত দিয়ে অর্নব এর নাম টা লেখা ওঠে তারপর ওটায় আগুন ধরে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।ভয়ে যখন আমার হাত পা অবস হয়ে যাচ্ছিলো আমি রুম থেকে বেরোনোর চেষ্টা করছিলাম তখন অর্নব পেছন থেকে আমার ঘাটে হাত রাখে।আমি চাইলেও আর নড়তে পারছিলাম না।এত ভারী কোনো জিনিস আমার ঘাড়ে পড়েছিলো আমি চাইলেও আর সরতে পারছিলাম না।আমি পেছনে তাকিয়ে দেখি অর্নব এর লাশ টা ফ্যানের সাথে ঝুলছে।ঠিক সেদিনের মতো যেদিন অর্নবের সুইসাইড করা বডি টা ঝুলছিলো।রুমের দরজা জানালা কিছুই খুলতে পারছিলাম না।বাইরে সব জায়গা আলো থাকলেও আমার রুমে কোনো প্রকার কোনো আলো ছিলো না।রুমের লাইট টা এমনিতেই বন্ধ হয়ে গেছিলো।নিকশ কালো অন্ধকারে অর্নবের ঝুলন্ত লাশটা হাওয়ায় দোল খাচ্ছিলো আর আমার শরিরর এসে বাড়ি লাগছিলো।বরফের ন্যায় ঠান্ডা সে শরীর।
আমি বন্ধ রুমে প্রচুর কাঁন্নাকাটি করছিলাম আমার প্রাণ যাবে যাবে এমন সময় কেউ দরজাটা খুলে দেই।দরজার কড়া নড়ার শব্দ টাও খুব ভয়ানক ছিলো।চারদিক কেমন যেনো ছমছম করছিলো।আমি কারো স্পর্শ অনুভব করতে পারি।খুব ই অচেনা কেউ আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে ভয় পেও না আমি আছি।কন্ঠ টা যেনো খুব চেনা আমার।আমি ভয় ভয় কন্ঠে প্রশ্ন করেছিলাম কে আপনি? তখন সে উত্তর দেই ডার্ক হাউজ এ যার মৃত্যু হয়েছিলো আমি সে।আমি শিউরে উঠি তার কথা শুনে।খুব জোরে চিৎকার দেওয়ার পর দেখি আমার চারপাশে সবাই হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
আমার সামনে রেদওয়ান নামক ছেলেটি বসে আছে।সে আমাকে বলে কি হলো মৌ কোনো পোকা দেখেছো।।
বাকিরা বলে এভাবে চিৎকার এর কারন কি।
আম্মু বলে যাও রেদওয়ানের সাথে আলাদা কথা বলে নাও তোমাদের বিয়ে এক সপ্তাহ বাদেই হবেই।
আমি যেনো আকাশ থেকে পড়ি এত সময় আমার সাথে যেগুলা হলো সেগুলা কি ছিলো।আমি তো সেখানেই বসে আছি।আমি রেদওয়ানের সাথে এখনো আলাদা কথা বলতে যায় নি।এটা কিভাবে সম্ভব। আমি এখনো এখানে কেনো? আমার ভয়ে তখন ও বুক কাঁপছিলো।আমার শরীরের পশম তখন ও শিউরে ছিলো। অথচ আমি সবার মাঝেই আছি।আর এই রেদওয়ানের জায়গা তো অর্নব ই ছিলো।
এটা কিছুতেই আমার কল্পনা হতে পারে না।এত সময় যা হয়েছিলো সব সত্যি হয়েছিলো।আমাকে দুঃচিন্তা করতে দেখে রেদওয়ান বলে মৌ এর হয়তো আনইজি লাগছে থাক আলাদা কথা না বললেও হবে।
যাওয়ার সময় রেদওয়ান খুব অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে, ওর এ চাওনি টা স্বাভাবিক লাগে নি আমার।
আমি দৌঁড়ে উপরে গেলাম।এগুলা যদি আমার মনের ভুল হয় তাহলে উপরের রুমে গেলেই বুঝতে পারবো।
দো'তলার রুমে গিয়ে আমার পায়ের নিচের মাটি সরে গেলো।ওটা সত্যি অর্ণব ছিলো।
আমি যা দেখলাম তার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।
***চলবে***
- Afifa sornaনবাগত
- Posts : 7
স্বর্ণমুদ্রা : 1169
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-09-19
Re: ডার্ক_হাউজ
Mon Sep 20, 2021 12:44 am
ডার্ক_হাউজ
বান্ধবীর মৃত বয়ফ্রেন্ড ফিরে আসলেও ক্যানো আমার কাছেই ফিরে আসলো এটা নিয়া অনেক দুঃচিন্তায় পড়ে গেলাম।দৌড়ে দো'তলার রুমে গিয়ে দেখি অর্ণব এর নাম পুড়ে যাওয়া ছাই গুলো ফ্লোরেই পড়ে আছে।আমি তখন শতভাগ সিওর হলাম এটা কোনো দুঃস্বপ্ন বা মনের ধারণা ছিলো না।যেটা হয়েছে সেটা সত্য হয়েছে।অর্ণব এর আত্মা ফিরে এসেছে।কিন্তু ক্যানো? ও কি চাই আমার কাছে।অর্ণব কি তাহলে আমাকে মেরে ফেলতে চাই।আমার কারনেই কি তাহলে অর্ণব মারা গেছিলো।
আমার অতীতের কিছু ঘটনা মনে পড়ে যায়।অর্ণব আর তাসনিমের রিলেশন এর সব কিছু আদানপ্রদান আমি ই করতাম।অর্নব আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড ছিলো।
অর্নব আর আমি ছোট বেলা থেকে একই সাথে বড় হয়েছি।এক সাথে বড় হয়েছি এক সাথে খেলাধুলা করেছি।আমার ক্যানো জানি মনে হতো অর্নব আমাকে ভালবাসে।আমিও মনে মনে অর্নব কে খুব ভালবাসতাম।আমার সব ধারনা একদিন ভুল প্রমানিত হলো।অর্নব আমাকে জানায় সে আমাদের ভার্সিটির তাসনিম কে ভালবাসে। আমি যেনো ওদের রিলেশন টা করিয়ে দেই।সেদিন আমার বুক টা ফেটে যাচ্ছিলো।কারণ যাকে ছোট বেলা থেকে ভালবাসি সে অন্য কাউকে ভালবাসে।অর্নব কে আমি কোনদিন আর বিরক্ত করিনি।শুধু ওদের প্রেমের সাহায্য ই করে গেছি।হটাত অর্ণব একদিন জেনে যায় যে আমি ওকে ভালবাসি।অর্নব খুব মন খারাপ করে আর আমাকে বলে আমাকে ভাল না বাসলেও পারতিস রে মৌ।আমার হাতে বেশী সময় নেই রে মৌ।আমি বেশীদিন বাঁচবে না মৌ।আমার কাছে খুব অদ্ভুত লাগলো ও হঠাত এসব বলছে ক্যানো? ও বলে ওরা আমাকে বাঁচতে দিবে না মৌ।
প্রায় কয়েকদিন দেখতাম অর্নব বাড়ি থেকে বেরোতো না।রুমে সব সময় অন্ধকার করে বসে থাকতো।আমি অর্নব কে বললাম এভাবে অন্ধকার রুমে বসে থাকিস ক্যানো? অর্নব আমাকে বলতো ডার্ক হাউজে থাকার অভ্যাস করছি।আমাকে তো অন্ধকারেই থাকতে হবে।
একদিন রাত সাড়ে এগারোটার দিকে অর্নব মেসেজ করে আমার ড্রয়ার এর মাঝে একটা ডায়রি আছে।ওর মাঝে সব টা আছে ওটা পড়লেই সব বুঝতে পারবি।তার পরের দিন ই অর্নব সুইসাইড করে মারা যায়।কিন্তু ওর ডাইরি টা আমি কোথাও খুজে পাই নি আর।
সেদিন আমার এক ক্লাস ফ্রেন্ড ফোন দিয়ে বলে জানিস আমি অর্নবের মতো একজন কে দেখেছি।ওর কথাটা হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়েছিয়াল আমি।
আমার রুম থেকে অর্নব এর কবর টা দেখা যায়।আমি অর্নব এর কবরের দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকি।হটাত খেয়াল করি সাদা একটা বস্তু ওর কবর থেকে উঠে আসে।আর সেটা আমার রুমেই আসে।
**চলবে**
বান্ধবীর মৃত বয়ফ্রেন্ড ফিরে আসলেও ক্যানো আমার কাছেই ফিরে আসলো এটা নিয়া অনেক দুঃচিন্তায় পড়ে গেলাম।দৌড়ে দো'তলার রুমে গিয়ে দেখি অর্ণব এর নাম পুড়ে যাওয়া ছাই গুলো ফ্লোরেই পড়ে আছে।আমি তখন শতভাগ সিওর হলাম এটা কোনো দুঃস্বপ্ন বা মনের ধারণা ছিলো না।যেটা হয়েছে সেটা সত্য হয়েছে।অর্ণব এর আত্মা ফিরে এসেছে।কিন্তু ক্যানো? ও কি চাই আমার কাছে।অর্ণব কি তাহলে আমাকে মেরে ফেলতে চাই।আমার কারনেই কি তাহলে অর্ণব মারা গেছিলো।
আমার অতীতের কিছু ঘটনা মনে পড়ে যায়।অর্ণব আর তাসনিমের রিলেশন এর সব কিছু আদানপ্রদান আমি ই করতাম।অর্নব আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড ছিলো।
অর্নব আর আমি ছোট বেলা থেকে একই সাথে বড় হয়েছি।এক সাথে বড় হয়েছি এক সাথে খেলাধুলা করেছি।আমার ক্যানো জানি মনে হতো অর্নব আমাকে ভালবাসে।আমিও মনে মনে অর্নব কে খুব ভালবাসতাম।আমার সব ধারনা একদিন ভুল প্রমানিত হলো।অর্নব আমাকে জানায় সে আমাদের ভার্সিটির তাসনিম কে ভালবাসে। আমি যেনো ওদের রিলেশন টা করিয়ে দেই।সেদিন আমার বুক টা ফেটে যাচ্ছিলো।কারণ যাকে ছোট বেলা থেকে ভালবাসি সে অন্য কাউকে ভালবাসে।অর্নব কে আমি কোনদিন আর বিরক্ত করিনি।শুধু ওদের প্রেমের সাহায্য ই করে গেছি।হটাত অর্ণব একদিন জেনে যায় যে আমি ওকে ভালবাসি।অর্নব খুব মন খারাপ করে আর আমাকে বলে আমাকে ভাল না বাসলেও পারতিস রে মৌ।আমার হাতে বেশী সময় নেই রে মৌ।আমি বেশীদিন বাঁচবে না মৌ।আমার কাছে খুব অদ্ভুত লাগলো ও হঠাত এসব বলছে ক্যানো? ও বলে ওরা আমাকে বাঁচতে দিবে না মৌ।
প্রায় কয়েকদিন দেখতাম অর্নব বাড়ি থেকে বেরোতো না।রুমে সব সময় অন্ধকার করে বসে থাকতো।আমি অর্নব কে বললাম এভাবে অন্ধকার রুমে বসে থাকিস ক্যানো? অর্নব আমাকে বলতো ডার্ক হাউজে থাকার অভ্যাস করছি।আমাকে তো অন্ধকারেই থাকতে হবে।
একদিন রাত সাড়ে এগারোটার দিকে অর্নব মেসেজ করে আমার ড্রয়ার এর মাঝে একটা ডায়রি আছে।ওর মাঝে সব টা আছে ওটা পড়লেই সব বুঝতে পারবি।তার পরের দিন ই অর্নব সুইসাইড করে মারা যায়।কিন্তু ওর ডাইরি টা আমি কোথাও খুজে পাই নি আর।
সেদিন আমার এক ক্লাস ফ্রেন্ড ফোন দিয়ে বলে জানিস আমি অর্নবের মতো একজন কে দেখেছি।ওর কথাটা হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়েছিয়াল আমি।
আমার রুম থেকে অর্নব এর কবর টা দেখা যায়।আমি অর্নব এর কবরের দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকি।হটাত খেয়াল করি সাদা একটা বস্তু ওর কবর থেকে উঠে আসে।আর সেটা আমার রুমেই আসে।
**চলবে**
- Afifa sornaনবাগত
- Posts : 7
স্বর্ণমুদ্রা : 1169
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-09-19
Re: ডার্ক_হাউজ
Tue Sep 21, 2021 12:24 am
অর্ণব এর কবর থেকে সাদা কিছু একটা উঠে আসছিলো।এতদিনে তো অর্ণব এর কবরে এমন কিছুই দেখি নি।কাল থেকে চারদিকে শুধু অর্ণব এর ছায়া দেখছি কেনো?সাদা ছায়ার মতো আকার আকৃতি বোঝা যাচ্ছে না ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে।আমি খেয়াল করে দেখি দেয়াল টপকে আমাদের সীমানায় চলে আসলো ছায়া টা।তারপর ধীরে ধীরে ছায়া টা আমার রুমের বেলকুনিতে এসে বসে। প্রচন্ড ভয়ে আমার বুক দুরু দুরু করছিলো।আসলে ওটা কি আমি বুঝতে পারছিলাম না।যখন ওই ছায়াটা আমাকে বলে "আই ওয়ান্ট টু ম্যারি ইউ"।ভয়ে আমার গা ছমছম করছিলো।এরই মাঝে আম্মু আসে আমার রুমে। আম্মু আসার সাথেই ছায়াটা আবার আস্তে আস্তে অর্ণব এর কবরে গিয়ে সুয়ে পড়ে।সেদিন রাতে আম্মুকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়েছিলাম।
কেটে গেছে দু'দিন।আমাদের আরেকটা ক্লাস ফ্রেন্ড ফোন দিয়ে বলে জানিস মৌ কাল আমি অর্নব কে দেখেছি।ও আমাকে দেখে হেসে দিয়েছিলো। আমার খুব সন্দেহ হচ্ছিলো কে এই মানুষ টা।আমাকে দেখে এমন ভাবে হাসছিলো যেনো ও আমাকে চিনে সেই ইশারা করলো। আমি ওর পিছ পিছ গেলাম।ও ধীরে ধীরে একটা বাগানের কাছে পৌছে যায়।বাগান এর মাঝ থেকে অর্ণব বিলীন হয়ে যায়।মৌ ওটা অর্নব ই ছিলো।আমি হেসে বললাম ও মারা গেছে। কিন্তু আমার ফ্রেন্ড বললো অতৃপ্ত আত্মারা ফিরে আসে।আমি মনে মনে ভেবে যাচ্ছিলাম অর্ণব এর আত্মা কি তাহলে অতৃপ্ত হয়ে গেছে।আরো একদিন কেটে গেলো। আমার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আমি চুল এ চিরুনি দিচ্ছিলাম।কেমন যেনো মনে হচ্ছিলো আমার পেছনে কেউ দাঁড়িয়ে আছে।হঠাত বুকের মাঝে কেমন একটা বাড়ি মেরে উঠলো।আমার পেছন থেকে একটা লম্বা হাত এসে আয়নায় লিখছে" আই ওয়ান্ট টু ম্যারি ইউ"। লেখাটা রক্ত দিয়ে লেখা।হাত টা দেখতে খুব ই ভয়ানক ছিলো।এমন ভয়ঙ্কর হাত আমি জীবনে দেখি নি।কেউ আমার ঘাড়ে চুম্বন দিলো।এত ঠান্ডা কিছু মনে হলো বরফ লাগিয়ে দিয়েছে।কিন্ত ওটা চুম্বন ই ছিলো।আমি ভয়ে ঘাড় নাড়াতে পারছিলাম না সমস্ত শরীর অবস হয়ে যাচ্ছিলো।আবার ও আমার ঘাড়ে কেউ চুম্বন দিলো।তারপর আমি দেখি আমার ঘাড়ের পেছন থেকে আস্তে করে উঁকি দেই বিভৎস চেহারার কেউ।আমার পেছনে অমন বিভৎস চেহারার মানুষ আর আয়নায় অর্নব কে দেখলাম।আমি আবার ও ভয়ে সেন্সলেস হয়ে গেলাম।
সেন্স আসার পর দেখি আমার চারপাশে মানুষ জন।ডাক্তার বাবু বললেন আমার শরীর দূর্বল হয়েছে।আসলে তো আমার অন্য সমস্যা আমি কাউকে বলতে পারছিলাম না।
সবাই রুম থেকে চলে গেলে আমি আম্মুকে বলি আম্মু অর্ণব।আম্মু বলে অর্ণব কে মিস করছিস মা তুই।কি আর করা ছোট বেলা তো তোদের বিয়ের কথা হইছিলো।তোর আর অর্ণব এর রিলেশন এর কথা আমরা সবাই জানতাম।তোমাদের মাঝে যে রিলেশন ছিলো সেটা অর্ণব আর আমাদের ফ্যামিলি উভয়ই জানতো।
আমি অবাক হয়ে গেলাম।আম্মু এটা কি বলছে।আমাদের মাঝে তো কোনো রিলেশন ছিলো না।আমি আম্মুকে বললাম আম্মু তোমার এমন কেনো মনে হলো যে অর্ণব আর আমার মাঝে রিলেশন ছিলো।তখন আম্মু বললো অর্ণব যে তোকে না পেয়ে জিদে সুইসাইড করেছে এটাই ধারনা করে সবাই।অর্নব এর মা বাবা বলে সেদিন যদি ছেলের কথা মেনে নিতাম।তাহলে আর আজ এতকিছু ঘটতো না।আমি বললাম সেদিন কি হয়েছিলো আম্মু।আম্মু বলে অর্নব ওর বাড়িতে জানিয়েছিলো যে আমি মৌ কে এক্ষুণি বিয়ে করতে চাই।আমার হাতে বেশী টাইম নেই।যদি মৌ কে বিয়ে করতে পারি তাহলে হয়তো আমি বেঁচে থাকবো না হলে আমার হাতে সময় নেই।আমাকে বাঁচানোর মতো কেউ নেই।একমাত্র মৌ পারে আমাকে বাঁচিয়ে রাখতে।অর্ণব এর মা বাবা বলেছিলো গরমের আভাস টা একটু কমে যাক তারপর বিয়ে দিবো।অর্নব বলেছিলো তোমরা আমাকে আর বাঁচাতে পারলে না তাহলে। তোমরা ভুল করলে।
আম্মুর কথা শুনে আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম।অর্নব এগুলা বলেছিলো কই আমি তো জানিনা কিছু।অর্নব তো তাসনিম কে পাগলের মতো ভালবাসতো।কি এমন ঘটেছিলো অর্নব ওর ফ্যামিলিতে এগুলা বলেছিলো।অর্নব তার সুইসাইড এর ১৫ দিন আগেও বলেছিলো আমি একটা মারাত্মক ভুল করে ফেলছি মৌ।আমাকে এখুনি বিয়ে করতে হবে।আমাকে হেল্প কর প্লিজ।বিয়ের সম্পূর্ণ এরেজমেন্ট তোকেই করতে হবে।আমি বিয়ে ন করলে তাসনিম সুইসাইড করবে।ওর খুব বিপদ।আমাকে আমার ভালবাসা তাসনিম কে বাঁচাতেই হবে।আমি জানতে চেয়েছিলাম এমন কি হয়েছে অর্নব যার জন্য এতটা চিন্তিত তুই।অর্নব আমাকে বলেছিলো কোনো প্রশ্ন করিস না প্লিজ।আমি পরশু তাসনিম কে বিয়ে করতে চাই।
আমার চোখ দিয়ে টপটপ পানি পড়ছিলো।বুকের মাঝে ভেঙে চুরে যাচ্ছিলো।আমার ছোটবেলার ভালবাসা অর্নব।সে আজ আমাকেই বলছে অন্য কাউকে বিয়ে করবে।অন্যকে এভাবে ভালবাসার কথা বলছে আমি সহ্য করতে পারছিলাম না।সারারাত কেঁদেছিলাম।জীবনে অনেক মিরাক্কেল ঘটে অর্নব যদি একবার বলতো মৌ আমি তোকেই চাই তাসনিম কে নয়।
পরের দিন আমি কাজী অফিসে দাঁড়িয়ে ছিলাম।টাইম ওভার হয়ে গেছিলো কিন্তু অর্নব আর এলো না।অর্নব এর ফোন ও অফ পাচ্ছিলাম।আমাকে এত তাড়া দিচ্ছিলো অথচ সব রেডি করার পর অর্নব তাসনিম কেউ এলো না।
আমি অর্নব দের বাড়িতে গেলাম। অর্নব সেদিন বাড়িতে ছিলো না।আমি পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম অর্নব কে খুজে খুজে।পরের দিন বিকালে অর্নব আমাকে দেখা করতে বলে। তারপর থেকে অদ্ভুত মিরাক্কেল ঘটতে থাকে।
চলবে,,,,
- Afifa sornaনবাগত
- Posts : 7
স্বর্ণমুদ্রা : 1169
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-09-19
Re: ডার্ক_হাউজ
Wed Sep 22, 2021 12:30 am
হঠাত লোড শেডিং হলো,চারদিক নিকশ কালো অন্ধকার রুমে আমি একাই সুয়ে আছি।বরাবর কোলবালিশ জড়িয়ে ধরে ঘুমোনোর অভ্যাস আমার। সেদিন ও কোলবালিশ নিয়েই ঘুমিয়েছিলাম।কোলবালিশ টা এত নরম আর ঠান্ডা আমার কাছে খুব অবাক লাগছিলো।রাত তখন আনুমানিক তিনটা বাজে আমি সিওর ছিলাম না।আমি ফোনের টর্চ জ্বালিয়ে দেখি রাত ১২.০০ বাজে।ফোনের আলোতে দেখতে পাই আমার পাশে অর্নব এর কাফনে মোড়ানো লাশ সুয়ে আছে।পা থেকে মাথা সাদা কাফনে মোড়ানো শুধু মুখ টা খোলা।অর্নব এর শরীর দিয়ে আতর,গোলাপ আগরবাতির ঘ্রাণ আসছে।অর্নব এর জিভ খানিক টা বের হয়ে আছে।অর্নব এর দিকে তাকাতেই দাঁত বের করে হেসে দেই।এমন ভয়ানক দৃশ্য রাতের বেলা একা রুমে থাকলে ঘটলে মানুষের বেঁচে থাকা অসম্ভব প্রায়।আমার হাত পা থর থর করে কাঁপছিলো।আমি আম্মুকে অনেক ডাকছিলাম কিন্তু আমার গলা দিয়ে কোনো সাউন্ড ই বের হয় নি। হটাত কারেন্ট চলে আসে বিছানায় দেখি কেউ নেই আমার কোলবালিশ নিচে পড়ে আছে।তার মানে আমি অর্নব এর লাশ জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়েছিলাম।আমার জীবনের ওই ভয়ানক মুহুর্ত আমি কখনোই ভুলতে পারবো না।আমি ওয়ালে তাকিয়ে দেখি রাত দুইটা বেজে, দশ মিনিট।মোবাইলে তাকিয়ে দেখি সেই ১২.০০ টাই বাজে।এতক্ষণে কি ঘড়ির কাটা একটুও সরে নি।দুই জায়াগা দু'রকম টাইম।
আমি বার বার মোবাইল আর ওয়াল ঘড়ি চেক দিচ্ছিলাম।বার বার দেখছি টাইম দু'রকম দু'জায়াগা।আমার শরীর হীম হয়ে আসছিলো দেখে।এমন সময় একটা চিঠি উড়ে এসে আমার কাছে পড়ে।চিঠিটা অর্নব এর লেখা।।।
প্রিয় মৌ,
তুই আমাকে এতটা ভালবাসিস বুঝতে পারিনি।তোর ভালবাসার উত্তর আর আমার না বলা কথা গুলো ডায়রি তে লেখা আছে।আমি কেনো কাল যেতে পারিনি আর ক্যানো তাসনিম কে বিয়ে করতে পারিনি সব ডায়রিতে লেখা আছে।মৌ আমি ডার্কনেস এ ফেঁসে গেছি।গতকাল আমার জীবনের সব থেকে ভয়ানক ঘটনা ঘটে গেছে। আমার লেখা ডায়রি টা তে সব আছে মৌ।
চিঠিটা পড়ে মনে হচ্ছিলো ওই ডায়রিতে ভয়ানক কিছু আছে।ডায়রিটা কোথায় পাবো আমি।ডায়রিটা তো খুজেও পেলাম না।
পরের দিন আমার গায়ে হলুদ ছিলো।গায়ে হলুদে আমার হাতে রেদওয়ানের নাম লিখে দিয়েছিলো কাজিন রা।কিন্তু আমি দেখতে পাই আমার হাতে অর্ণব লেখা আছে। অর্ণব এর আত্মা আসলে কি চাইছিলো আমি কিছুই বুঝছিলাম না।আমার মনে অদ্ভুত একটা ভয় লেগে ছিলো।সব সময় আতঙ্ক লেগে ছিলো।বিয়ে বাড়িতে চারদিকে আলোর রোশনাই।সবাই হাসি আনন্দে মেতে আছে।কিন্তু আমার মনে এক অজানা ভয় লেগে ছিলো।
গায়ে হলুদের রাতে অর্নব এর কবরের দিকে তাকিয়ে ছিলাম আমি। আমাকে কেমন একটা মায়াবী সুরে টানছিলো ওই কবর।আমি অজান্তে হাটতে হাটতে ওর কবরের কাছে চলে গেলাম।গভীর রাতে আমি কিভাবে কবরের কাছে গেলাম তা নিজেও জানিনা।হটাত আমার পেছনে কেউ ঘাড়ে হাত দিলো।তাকিয়ে দেখি অর্নব।আমি অর্নব কে দেখে বললাম তু তুমি।হ্যাঁ আমি তোমার জন্য ফিরে এসেছি।শুধু তোমার জন্য।
আমি কিভাবে ওখান থেকে পালিয়ে এসছি তা নিজেও জানিনা।পরের দিন আমার বিয়ে হয়ে গেলো।আমি জানিনা রেদওয়ান নাকি অর্নব কার সাথে বিয়ে হয়েছে আমার।
বউ সেজে বাসর ঘরে বসে আছি আমি।হটাত খুব পানির পিপাসা পায় আমার। খাটের নিচ থেকে পানির পট আনতে গিয়ে দেখি সাদা কাফনে মোড়ানো অর্নব এর লাশ।পানির পট টা ছুড়ে ফেলে দৌড় দিতেই রেদওয়ানের সাথে ধাক্কা খাই আমি।
রেদওয়ান যেহেতু আমার স্বামি।তাই স্বাভাবিক ভাবে ওর সাথে আমার স্বামি স্ত্রীর মিলন হয়। রেদওয়ান সে রাতেই ওয়াশ রুমে যায় গোসলে।তখন ই তাসনিম আমার রুমে এসে বসে রেদওয়ানের ইমারজেন্সি কাজ পড়েছে তাই আজ ও আর আসতে পারবে না।
আমি চমকে যায় তাসনিমের কথা শুনে তাহলে এত সময় কে ছিলো আমার সাথে।
চলবে,,,,
- Afifa sornaনবাগত
- Posts : 7
স্বর্ণমুদ্রা : 1169
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-09-19
Re: ডার্ক_হাউজ
Mon Sep 27, 2021 12:21 am
নিজের বিবাহিত স্বামীর সাথে বাসর রাত কাটানোর পর যখন জানতে পারলাম আমার স্বামী আজ বাসায় আসবে না তখন যেন আমার পায়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছিলো। তাহলে কে ছিল উনি যার সাথে আমি এতটা সময় কাটালাম? উনি ত রেদোয়ানের মতে দেখতে ছিল যদি মানুষটা অন্য কারো মত দেখতে হতো তাহলে আমার দুঃশ্চিন্তার কারণ ছিল। কিন্তু হুবহু রেদোয়ানের মতোই দেখতে সেই মানুষটা। আমার সাথে তাসনিম মজা করছে না তো। তাসনিম আমার বেস্ট ফ্রেন্ড বরাবর এমন মজা আমার সাথে করে থাকে। আবার ওর ই দেবরের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে।
কেমন যেন আমার মাথা আচমকা ঘুরে উঠলো। আমি তাসনিমকে কিছুই বললাম না যদি বলি আমার সাথে কেউ ছিল তাহলে তো বিশ্বাসই করবে না বরং আমার চরিত্র নিয়ে উল্টাপাল্টা ভাববে তাই আমি তাসনিমকে হেসে উত্তর দিলাম কোন ব্যাপার না?
" তাসনিম আমাকে বলে রেদওয়ান সাত দিন বাদে ফিরবে তুই চিন্তা করিস না। আসলে বিয়ের রাতে বর ইমারজেন্সি কাজে বাইরে যাওয়াটা খুব বাজে একটা ব্যাপার। তবুও যদি না যায় তাহলে ওর অনেক বড় ঝামেলা হয়ে যাবে তাই বলতে বাধ্য হয়েছে। প্লিজ কষ্ট পাস না রেদওয়ান আসলে আচ্ছা মতো বকে দিস। এসব নিয়ে চিন্তা করিস না এখন ঘুমিয়ে যা। "
তাসনিম আমাকে বিদায় জানিয়ে রুমে চলে গেল। আমাকে ফেলে দিয়ে গেলে ভীষণ দুঃশ্চিন্তায়। আমার সাথে রেদওয়ান নামের মানুষটা ছিল সেই তো ওয়াশরুমে গোসল করতে গেছিল আমি কি যাব ওয়াশরুম চেক করতে নিজে নিজেই ভাবছি। এমন সময় বাথরুমে পানির সাওয়ার ছাড়ার শব্দ চলছে। পানির টুপটাপ আওয়াজ হচ্ছে।আসলেই তো বাথরুমে কেউ আছে সে গোসল করছে।
বাথরুমের ভেতর থেকে একটা সাউন্ড এলো কে এসেছিল বাইরে। ভয়ে আমার শরীর আরেকবার হিম হয়ে আসলো। ভেতরে কে তাহলে কি অর্ণব। অর্ণব এর নামটা ভাবতেই আমার শরীরের সমস্ত পশম দাঁড়িয়ে গেল। ওয়াশরুম থেকে আবারও প্রশ্ন এলো বাইরে কে এসেছিল? আমি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে উত্তর দিলাম তা তা। তখন ভেতর থেকে আবার প্রশ্ন এলো কি তা তা করছো তাসনিম ছিল নাকি। আমি আবারও কাঁপাকাঁপা কন্ঠে বললাম আপনি কে? তখন বাথরুমের ভেতর থেকে আবারও কন্ঠ ভেসে এলো নিজের হাজবেন্ড বাসায় না থাকলে ঘরের দরজা লক করা থাকলে গভীর রাতে বাথরুমে কে থাকে সেটা জানতে চাও তোমার কি মনে ভয় লাগে না। বোঝনা এমন গভীর রাতে অন্ধকার ঘরে কে থাকতে পারে। বাথরুমে কেউ নেই বিশ্বাস না হলে এসে দেখো। ভয়ে আমি কাঁপতে কাঁপতে পিছু হটা শুরু করলাম যে দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে যাব। বাথরুম থেকে খুব জোরে হেসে দিয়ে বললো দরজা খুলে দেখো আমি দাঁড়িয়ে আছি। আমি সাথে সাথে দরজা খুলে দেখি পিছন দিকে ঘুরে সাদা কাফন পরা কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। আমি বললাম কে কে আপনি? সাথে সাথে তার একটা হাত পেছন দিকে দিয়ে আমাকে ধাক্কা মেরে দিল কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার আমি ফ্লোরে পড়লাম না। একদম বেডের উপর এমন ভাবে পড়লাম আমি একটুও ব্যথা পেলাম না। দরজার পাল্লাটা খোলা আছে কিন্তু আর একবার তাকিয়ে দেখি বাইরে কেউ দাঁড়িয়ে নেই। বাথরুমে পানির শব্দ হয়ে যাচ্ছে আমার সাথে বেশ কয়েকদিন এরকম ঘটনা ঘটে যাচ্ছে কিন্তু খুবই অদ্ভুত ব্যাপার আমার কোনো ক্ষয়ক্ষতি করছে না। চাইলে তো আমাকে মেরে ফেলতে পারে কিন্তু না আমাকে কিছুই করছে না আবার আমি ভয় পাই এমন কিছু করছে না। চাইলে আমাকে ভয়ানক ভয় দেখিয়ে আমাকে মেরে ফেলতে পারে সেটাও তো করছে না।বাথরুমে পানি পড়ার টুপটাপ শব্দে আমি এগিয়ে গেলাম আমি জানি খারাপ কিছু আছে কিন্তু সে আমার কোন ক্ষতি করবে না সেটা আমি এতদিনে সিওর হয়ে গেছিলাম। বাথরুমের দরজা খুলে দেখি টুপটাপ পানির শব্দ হচ্ছে সাওয়ার টা ছাড়া। বাথরুমের ভিতরে আমার গিফট করা অর্নবের কফি কালারের সেই গেঞ্জিটা। গেঞ্জিটা দেখেই আমি দৌড়ে গিয়ে গেঞ্জিটা আমার হাতে নিলাম। গেঞ্জিটা হাতে নিয়ে অর্ণব বলে ডুকরে কেঁদে উঠলাম আমি। গেঞ্জিটা নিজে থেকেই আমার হাত থেকে সরে গিয়ে হাওয়ায় ভাসছে। আমি অর্ণব অর্ণব বলে ডাকছি। তখন হওয়ার মাঝ থেকে খুব করুন একটা কণ্ঠে বলে ওঠে কাকে ভালোবাসো রেদওয়ান নাকি অর্ণব। আমি বললাম রেদওয়ান আমার স্বামী তাকে ভালবাসাটা আমার কর্তব্য। আবারো ঐ কন্ঠ টা বলে তাহলে অর্নব। তাহলে কি অর্নব কে ভালোবাসো না নাকি সবটাই অভিনয় ছিল। তুমি তো অর্নব এর জন্য ভীষণ পাগল ছিলে আজ স্বামী পেয়ে অর্নব কে ভুলে গেলে বাহ বাহ বাহ? একটা মানুষ মরে গেলে বুঝি তার ভালোবাসা টাও শেষ হয়ে যায় এটাই কি তাহলে ভালোবাসা। তখন আমি খুব জোরে চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠে বলি আমি অর্নব কে ভুলিনি আমি ভালোবাসি অর্নব কে। আজও ভালোবাসি ভীষণ ভালোবাসি। কিন্তু সে কথা আমি কাউকে বুঝাতে পারিনা কাউকে বলতে পারিনা। অর্নব আমার রক্তের সাথে মিশে আছে অর্ণবকে আমি প্রতিটি স্পন্দনে অনুভব করি কিন্তু অর্ণব এতটা দূরে চলে গেছে সেখান থেকে চাইলে ওকে আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। আই মিস ইউ অর্ণব রিয়েলি আই মিস ইউ। আমি তোমাকে ভালোবাসি অর্ণব আমি তোমাকে সত্যিই খুব ভালোবাসি। চোখ বন্ধ করে দুই কানে হাত চেপে ধরে খুব জোরে জোরে এই কথাগুলো আমি বলছিলাম ঠিক তখনই আমি দেখি আমার সামনে দাড়িয়ে আছে তাসনিম।
তাসনিমকে দেখে আমি হতভম্ব হয়ে যাই আমি কি বলবো বুঝতে পারিনা। তাসনিম অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলে,, তুই কি বলছিলি মৌ। তুই কোন অর্নব এর কথা বলছিলি।তুই কি অর্নব কে ভালোবাসিস তুই কি আমার অর্নব এর কথা বলছিস। তাসনিম আমার দুই হাত ধরে ঝাকি দিয়ে বলে উত্তর দে তুই কাকে ভালোবাসিস মৌ তোকে উত্তর দিতেই হবে। তুই মাঝরাতে চিৎকার দিয়ে কেন বলছিস তুই ওকে ভালবাসিস। তুই আমার অর্ণব কে ভালবাসতিস। তখন আমার নিজের কাছে কেমন একটা লাগছে তাসনিম আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ও আমাকে কি ভাবছে এতদিন যে কথাটা কেউ জানতে পারেনি আজ অর্নব মরে যাওয়ার দুই বছর পর তাসনিম জানলো ও আমি ওকে ভালবাসতাম।
আমি মাথা নিচু করে বললাম দেখ তাসনিম অর্ণব তোর আর আমার মাঝে নেই অর্ণব মারা গেছে চাইলে তো কারো কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া সম্ভব না। একটা মৃত মানুষকে ভালবাসা কি খুব অন্যায়। না অন্যায় না তাই বলে তুই আমার ভালোবাসার মানুষকে ভালবাসবি সেটা আমি অর্নব মারা যাবার পরেও মেনে নিতে পারছিনা। তুই এতটা জঘন্য কিভাবে হতে পারলি মৌ।আমার ভালোবাসার মানুষকে কিভাবে ভালোবাসতে পারলি।না জানি আমার আড়ালে কি কি করেছিস আর। তাসনিমের কথাগুলো আমি আর নিতে পারছিলাম না বিগত কয়েকদিনে অর্নব এর উপস্থিতি আমাকে অন্যরকম করে দিয়েছে। তখন আমিও চুপ করে রইলাম না তাসনিমকে বললাম তুই অর্ণবকে যদি এতটাই ভালবাসিস তাহলে ও মারা যাবার একমাস পরেই কিভাবে বিয়ে করে হানিমুনে গিয়ে সুখে সংসার করিস। সেখানে আমি অর্ণব কে ভালবাসি সেটা কি দোষ আমি তো অর্নব বেঁচে থাকতে কোনদিন অর্নব কে বলিনি আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি তো তোদের ভালোবাসায় সবসময় সাহায্য করেছি আমিতো কখনো অর্নব কে তোর জীবন থেকে কেড়ে নেওয়ার জন্য কোন চেষ্টা ও করিনি। তাহলে অজ তোর কিসের এত অভিযোগ তাসনিম। তুই আজ অর্নবকে ভালবাসার দাবি করছিস অর্নব মারা যাবার একমাত্র এক মাস পার হবার আগেই তুই বিয়ে করে স্বামীর সংসার নিয়ে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেছিস সেটা কি খুব ভালবাসা ছিলো অর্নব এর প্রতি। তাতে কি অর্নব এর কষ্ট হয়নি আর সেখানে আমি অর্নব কে ভালোবাসি এটা দেখে তোর কষ্ট হচ্ছে? তোর কি অর্নব নামটা মনে ছিল তাসমিন? বিশ্বাস কর তাসনিম তুই অর্নব এর ভালোবাসা পেয়েও অর্নব কে এভাবে ভুলে যেতে পেরেছিস কিন্তু আমি অর্নব এর ভালোবাসা না পেয়েও ওকে ভুলতে পারিনি।
আমি অর্নব কে ভালোবাসি তাসনিম অর্ণবকে ভালোবাসি সারাটা জীবন অর্ণব আমার মনে থাকবে।
এমন সময় সিলিং ফ্যান টা খুব জোরে ঘুরছিলো।
চলবে......
- Afifa sornaনবাগত
- Posts : 7
স্বর্ণমুদ্রা : 1169
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-09-19
Re: ডার্ক_হাউজ
Sat Oct 02, 2021 1:29 am
সিলিং ফ্যানটা খুব জোরে তাসনিম এর মাথার উপরে পড়বে এমন সময় তাসনিন কে সরিয়ে দেই আমি।ফ্যান টা খুব জোরে এসে ফ্লোরের মাঝ খানে পড়ে।তাসনিম আমাকে কিছু না বলে ওর রুমে চলে যায়।পরের দিন তাসনিম এর হ্যাজবেন্ড রেজওয়ানের সাথে ভয়ানক ঘটনা।রেজওয়ান অফিসে গিয়ে দেখে তার মতোই একজন রেজওয়ান পরিচয় দিয়ে অফিসে বসে আছে আর অফিসের কাজ কাম করছে।কি অদ্ভুত রেজওয়ান কে কেউ চিনছেই না।রেজওয়ান সবাই কে বলে ও কে এই টেবিল টা আমার।রেজওয়ানের মতো দেখতে ওই লোকটি হাসছে আর কোনো কোনো কথা বলছে না।রেজওয়ান তাকিয়ে দেখে ওই লোকটির কোনো পা ই নেই।এমন সময় রেজওয়ান চিৎকার দিয়ে ওঠে চারদিক থেকে সবাই এগিয়ে এসে বলে কি সমস্যা আপনার বেরোন এখান থেকে।অদ্ভুত লাগলো খুব রেজওয়ান কে কেউ চিনছেই না।সবাই তাড়িয়ে দিলো।রেজওয়ান অফিস থেকে বেরোনোর সময় দাঁরোয়ান বলে কেনো এসেছিলেন এখানে।রেজওয়ান বলে আরে মজিদ তুমি আমায় চিনছো না।দাঁরোয়ানের এমন হাসি দেখে চমকে যায় রেজওয়ান।মজিদ বিশ্রি ভাবে হাসছে মজিদের দুইটা পা নেই।রেজওয়ান বলে তোমার পা এ কি হয়েছে।এমন কথা বলার সাথে সাথেই মজিদ হাওয়া হয়ে যায়।
রেজওয়ানের কাছে ব্যাপারটা খুব অদ্ভুত লাগল আজ এমন কেন হলো আর ওর মতো দেখতে কে ছিলো অফিসে। রেজওয়ান সেদিন বাসায় এসে ভীষণ অন্যমনস্কভাবে ছিল কেমন যেন সবকিছু অস্বাভাবিক লাগছে তার। তার মত দেখতে হুবহু আরেকজন মানুষ কিভাবে হতে পারে। বাড়িতে এসে কারো সাথে কোন কথা না বলে সারাদিন শুয়ে থাকে রেজওয়ান। তাসনিম বারবার জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে তোমার কি হয়েছে তোমার কোন কথার কোন উত্তর দেয় না। রাত দশটায় তাসনিম রান্না রেডি করে সবাইকে খাবার জন্য খেতে ডাকছে আমি এসে তাসনিম কে বলি তাসনিম তুই কি আমার উপর রেগে আছিস কেন কথা বলছিস না। তাসনিম বলে না রেগে থাকবো কেনো তুই মনে মনে অর্নব কে ভালোবেসে গেলি অথচ আমি কোনদিন জানতে পারলাম না। আমি বললাম আমাদের বন্ধু ছিল অর্নব বাদ দে না।যেখানে আছে সেখানেই ভালো থাকুক না। ভাইয়া কোথায়? জানিনা উনি আজ সকাল সকাল অফিস থেকে এসে শুয়ে আছেন রাত দশটা বাজে এখনো ওঠেনি তুই একটু দেখ না? আমি রেজওয়ানের রুমে গেলাম দেখলাম অচেতনভাবে সুয়ে আছে। আমি ডাক দিতেই বলে আমাকে বাঁচাও প্লিজ আমাকে বাঁচাও।আমি বললাম কি হয়েছে ভাইয়া।রেজওয়ান ভাইয়া আমাকে বলে এখানে ডার্ক হাউজ আছে মানে একটা অন্ধকার বাড়ি আছে।আমাকে ওখানে নিয়ে গেছিলো আমাকে মেরে ফেলবে বাঁচাও প্লিজ।
"এখানে আমি শুয়ে ছিলাম হঠাৎ করে দেখি ফ্যান এ একটা লাশ ঝুলছে। দেখে আমার শরীর কেমন একটা হিম হয়ে আসছিল এখানে কার লাশ ঝুলবে। তখন লাশটা আমার দিকে তাকিয়ে খুব জোরে হেসে দেয়। ওর হাসি দেখে আমার প্রাণ যাওয়ার মত অবস্থা,, তারপর আস্তে আস্তে নিচে নেমে ওর গলার ফাঁস বের করে আমার গলায় দড়ি দিয়ে আমাকে ঝুলিয়ে দেয়। আমি মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছিলাম কিন্তু আমি মারা যাব যাব এমন একটা অবস্থায় গেলে আবার আমাকে ছেড়ে দিল। তারপর আমার গলার ফাঁস অবস্থায় টানতে টানতে আমাকে একটা জায়গায় নিয়ে গেল। ভয়ে আমার হৃদপিণ্ড খুব করে কাঁপছিল। নিকশ কালো অন্ধকার কোন অন্ধকার জায়গা দিয়ে আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল কোথায় নিয়ে যাচ্ছিল কিছুই জানিনা। একটা সময় সে আমাকে খুব অন্ধকার একটা বাড়িতে নিয়ে যায়। যে বাড়িটাতে কোথাও কোনো লাইট নেই আলো নেই ধূসর কালো অন্ধকার। অন্ধকারে কোথাও কিছু দেখা যাচ্ছে না শুধু ঐ লোকটাকে দেখা যাচ্ছিল। আমি বললাম কি তুমি আমাকে কেন এখানে নিয়ে এলে তখন লোকটা বলে অন্ধকার এই ভয়ানক অন্ধকারে তোমাকে নিয়ে এসেছি।
এই বাড়িটা টা সব সময় এমন অন্ধকারে থাকে তাই ওর নাম আমি ডার্ক হাউজ বলেই ডাকি। তখন লোকটি আমাকে একটা সিলিং ফ্যান দেখিয়ে বলে এই যে এইখানে একদিন একজন সুইসাইড করে মারা গেছিল। এটা দেখো তোমার মৃত্যু এভাবেই হবে তাই আমি তোমাকে দেখাতে নিয়ে এলাম। আমি ভয়ে ভয়ে বললাম আমাকে কেন মারতে চাও তখন সে বলে মৃত্যুর আগে কাউকে বারবার হুমকি দিলে কেমন লাগে সেটাই তোমাকে বোঝানোর ছিল। একটা মানুষকে অসহায় পেয়ে বারবার তার প্রাণ নেওয়ার হুমকি দিলে তার কেমন একটা অদ্ভুত ফিলিংস হয় সেটা জানো।তারপর যখন আমি লোকটার মুখ দেখলাম চমকে গেলাম।আমি বললাম যা করেছি সব তাসনিম করিয়েছে।আমার কোনো দোষ নেই।"
আমি ভাইয়া কে বলি কি করিয়েছে তাসনিম।ওই যে অর্নব।সাথে সাথে তাসনিম এসে বলে তোমাকে কি মেন্টাল হসপিটালে নিতে হবে।আজ সকাল থেকে উল্টাপাল্টা বলে যাচ্ছে।কি করিয়েছি আমি।রেজওয়ান ভাইয়া বলে কি করেছো মানে তোমার জন্যই তো অর্ণব এর সাথে এত কিছু করলাম। সবকিছু তো তুমি করেছিলে আজ তোমার জন্য অর্ণব আমার কাছে এসেছিল আমার সাথে দেখা করে ছিল ও আমাকে মেরে ফেলবে। তখন তাসনিম বলে তোমার মাথা সত্যি সত্যি খারাপ হয়ে গেছে তোমাকে এখনই মেন্টাল হসপিটালে নিতে হবে মৌ রেডি হ ওকে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে। আমি স্পষ্ট খেয়াল করে দেখলাম তাসনিমের চোখেমুখে কোনোকিছুর ভয় জড়িয়ে আছে।
আমি তাসনিমের হাত ধরে শক্ত করে ধরলাম সত্যি করে বল কি করছিস তুই। কিছু না কিছু তো লুকাচ্ছিস সত্যি করে বল আমাকে খুলে বল সব।ও ভুলভাল বলছে তাই বিশ্বাস করছিস ওর মাথা ঠিক নেই। তাসনিম একটা হাসি দিয়ে বলে মরা মানুষ জীবীত হতে পারে নাকি।তাসনিম ভাইয়া কে হসপিটালে পাঠিয়ে দিলো।
বাড়িতে কেউ নেই। শুধু আছি আমি আর তাসনিম। তাসনিম ওর রুমে আমি আমার রুমে। কেমন যেন ঝোড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে কারেন্টের লাইট গুলো অটো জ্বলছে নিভছে রাত বারোটা হবে? তাসনিম কে কেউ গুটিশুটি মেরে জড়িয়ে ধরেছে।তাসনিম বলে কে কে আমাকে ধরেছে ছাড়ো। আমি পাশের রুম থেকে স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিলাম তাসনিমের কথা। কে তুমি তোমার শরীর এত ঠান্ডা কেন ছাড়ো আমাকে আমার হাত-পা জমে যাচ্ছে? তাসনিম ফোনের আলো জ্বালিয়ে দেখে রেজওয়ান।
তুমি আমাকে হসপিটালে পাঠিয়ে দিলে কি হবে আমি ওখান থেকে চলে এসেছি। ওখান থেকে চলে আসছো মানে তুমি যে এই ঘরে সেই ডাইরিটা লুকিয়ে রেখেছো সেটা কি কেউ জানে।তসলিম বলে তোমার তো ডাইরির কথা জানার কথা নয় তুমি কিভাবে জানলে? ফোনটা তাসনিম এর হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ফেলে দেয়। একটা অদ্ভুত আলো এসে রেজওয়ানের মুখে পরে খেয়াল করে দেখে ওটাঅর্ণব। তাসনিম বলে অর্ণব তুমি। অর্ণব হাহা করে হাসছে আর তাসনিমের পেটের কাপড় সরিয়ে দিয়ে কুচি কুচি করে কেটে দেয়। রক্তা গড়িয়ে পড়ে।কয়েকশ বার কেটে দেই তাসনিম যন্ত্রনায় ছটফট করে।আমি আমার রুম থেকে দ্রুত ছুটে গিয়ে দেখি ঝোড়ো হাওয়া বইছে।তাসনিম বিছানায় ছটফট করছে।
আমার পায়ের কাছে একটা ডায়রি এসে পড়ে। ডায়রির মলাটে লেখা মৌ কে অর্ণব।
চলবে,,,,
- Afifa sornaনবাগত
- Posts : 7
স্বর্ণমুদ্রা : 1169
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-09-19
Re: ডার্ক_হাউজ
Sat Oct 02, 2021 1:31 am
ডায়রিটা হাতে নিয়ে আমি খুলে পড়া শুরু করলাম।
" তুই আমার জন্য অনেক অপেক্ষা করেছিস তাই না মৌ। আমি আসতে পারিনি আমি আসার মতো অবস্থায় ছিলাম না। আমি কেন আসতে পারিনি জানিস আমার জীবনের সবথেকে ভয়ঙ্কর জিনিসটা সেদিন আমি দেখেছি। তাসনিমকে আমি আমার নিজের প্রাণের থেকেও বেশি ভালবাসতাম কিন্তু তাসনিম আমাকে কখনোই ভালোবাসেনি। তাসনিম আমার সাথে সম্পর্ক থাকা অবস্থায় রেজওয়ানের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে। শুধু সম্পর্কে জড়িয়েছে সেটা হলেও স্বাভাবিক ছিল আমি যখন তাসনিমকে ওর বাসায় আনতে যায় তখন ওর রুমের বাইরে একটা ছেলেদের জুতা দেখতে পায়। তারপর ওর জানালার একটা ছিদ্র দিয়ে উঁকি মেরে দেখি দুজনের খুব বিশ্রী রকম ঘনিষ্ঠ অবস্থা। আমার পায়ের নিচের মাটি সরে গিয়েছিল। জানিস আমি বিয়ের পোশাকে দাঁড়িয়ে যখন আমার হবু স্ত্রীকে এমন জঘন্য অবস্থায়ে দেখছিলাম তখন আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। এটুকু হলেও ঠিক ছিল কিন্তু ওরা বলাবলি করছিল যে আমাকে বিয়ে করে তাসনিম আমার সম্পত্তি ওর নামে করে নিয়ে তারপর আমাকে ডিভোর্স দিয়ে রেজওয়ানের সাথে চলে আসবে। ওদের সম্পর্ক নাকি অনেক আগে থেকেই ছিল শুধুমাত্র আমাকে ঠাকবে বলে ওরা দুজনে প্ল্যান করে তাসমীন আমার সাথে সম্পর্কে জড়ায়। ওরা দুজন এতটাই ধূর্ত ছিল যে আমি যদি ওদের সম্পর্কের কথা কখনো জেনে গিয়ে দূরে সরে যায় তাই তাসনিম আগে থেকেই ওর সব প্ল্যান করে রেখেছিল। বিশ্বাস কর আমি যখন অনুভব উপলব্ধি করতে পেরেছি তুই আমাকে ভালবাসিস কিন্তু আমি যে তোর কাছে ফিরে যাবো সে মুখ আমার ছিলনা। কি বলে তোর ভালোবাসার সম্মতি আমি দিতাম কারণ আমি যে অপবিত্র আমার শরীর অন্য একটা মেয়েকে দিয়ে দিয়েছিলাম? আমি মাঝরাস্তায় এলে আমার ফোনে একটা ভিডিও পাঠায় রেজওয়ান ভিডিওতে তাসনিমের মুখ বুঝা যাচ্ছেনা আমার মুখ সম্পূর্ণ ক্লিয়ার বুঝা যাচ্ছে। এমন ভাবে এডিটিং করা যেখানে সম্পূর্ণ আমাকে ফাঁসানো হয়েছিল। ওই কয়েকদিনে আমি সম্পূর্ণ ডিপ্রেশনে চলে যায়। ওদের দাবি থাকে আমি যেন তাসনিম কে বিয়ে করি কিন্তু আমি জানি যে আমাকে ভালবাসে না তাকে বিয়ে করব কিভাবে আমি। আর যার অন্যের সাথে সম্পর্ক আছে তাকে কিভাবে আমি বিয়ে করি। আমি তোর রুমের সাইডে যে আমাদের আরেকটা ফ্ল্যাট আছে ওই ফ্ল্যাটে কিছুদিন থাকা শুরু করেছিলাম কেন জানিস? আমার সাথে হুটহাট তাসনিম রেজওয়ান দেখা করতে আসত আর আমার সাথে জঘন্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করত বাবা-মার সাথে থাকলে ওরা হয়তো বিষয়টা জেনে যাবে অনেক কষ্ট পাবে।ওরা প্রচুর টাকা নিতো।একটা সময় আমাকে নিঃস্ব করে দেই। আমার কাছে আর কোনো টাকা ছিলো না। একদিন রাতে ওরা আমার ফ্লাটে এসে সমস্ত লাইট অফ করে দেয় দিয়ে আমাকে মৃত্যুপুরীর ভয় দেখায়। তাসনিম, রেজওয়ান আমাকে বলে দেখ এই অন্ধকার কত সুন্দর লাগছে যখন তুই মরে যাবি কবরে এই রুমের মতোই হয়ে যাবে তার আগে তুই তোর সমস্ত সম্পত্তি আমাদের নামে লিখে দে। আমি আমার মা-বাবা আত্মীয়-স্বজন সবাইকে ফাকি দিয়ে কিভাবে সম্পত্তি লিখে দিতাম বল আমি এটাতে রাজি না হওয়ায় ওরা আমাদের সমস্ত পরিচিত বন্ধুদের মাঝে ভিডিওর কিছু কিছু অংশ শেয়ার করে দিয়েছিল। বন্ধু মহল আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করত আমি সবসময়ই গুটিসুটি মেরে অন্ধকার ঘরের মাঝে বসে থাকতাম। তখন আমার ইচ্ছা করছিল বাঁচতে ভীষণ ভাবে বাঁচতে ইচ্ছে করছিল আর চিৎকার দিয়ে বলতে ইচ্ছে করছিলো আমি তোকে ভালোবাসি। আমি তখন আমার মা বাবাকে বলেছিলাম ওর সাথে আমাকে আজকেই বিয়ে দাও কিন্তু ওরা লেট করতে চাই লেট করার মত টাইম আমার হাতে ছিল না। আমি জানি তোর সাথে আমার বিয়ে হলে আমাকে ঠিকই বাঁচিয়ে নিতে পারতি। হয়তো আমার গালে দুইটা থাপ্পড় মারতি তবুও তুই আমাকে ক্ষমা করে দিতি আমি জানি। ডাইরিটা তুই আমার রুমে যখন আসবি তখনই পাবি আমি জানি ডায়রি পড়লে তুই সব বুঝবি। ডায়রি কেন লিখলাম জানিস আমি মুখে এসব কথা তোকে বলতে পারছিলাম না তাই লিখলাম যাতে এগুলো পড়লে তুই অন্তত আমাকে বুঝতে পারিস।
ডায়রি পড়ার পর আমি হুহু করে কেঁদে উঠলাম অর্ণব কতটা অসহায় অবস্থায় ছিল কতটা ছটফট করেছিল বাঁচার জন্য। কিন্তু ডাইরিতে তো আর কিছু লেখা নেই। তারপর অর্নব সুইসাইড কিভাবে করলো কিছুই তো জানতে পারলাম না।
আমি এগিয়ে গিয়ে তাসনিমের দুই গালে দুটো চড় মারলাম মেরে বললাম ডাইনি কালনাগিনি এত লোভ তোর সম্পত্তির। এতটা ভাল মানুষের অভিনয় করে থাকিস তুই এতটা জঘন্য তুই আমি তোকে পুলিশে দিব। বলে যখন আমি ওখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করি তখন তাসনি। পেছন থেকে টেনে ধরে আমার গলা চেপে ধরে। আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে যাবে এমন অবস্থায় হঠাৎ করে অর্নব এর আত্মা এসে হাজির হয়। পুরো মুখ সাদা ধবধবে ফর্সা শরীর টা কালো কুচকুচে দেখা যাচ্ছে সাদা ধবধবে মুখ মনে আচ্ছা আটা লাগানো চোখ আগুনের মতো হাতের নখ বড় বড়।
ধারালো নখ দিয়ে তাসনিমের দুই গাল কেটে দেই।গালে হাজার হাজার আঁচড় দেই। মুখ কেটে রক্ত গড়িয়ে পড়ে।
আমি অর্ণভকে দেখে বলি অর্ণভ তুমি কি আমাকে মেরে ফেলতে চাও। অর্নব বলে আমি তোকে মারতে চাই না আমিতো তোকে এই ডাইনির হাত থেকে বাঁচাতে এসেছি।
তাহলে তুই কেন সুইসাইড করেছিল তুই কেন আমার কাছে এলিনা।
আমি কেনো সুইসাইড করবো। আমাকে এরা মেরে ফেলেছে।আমি রাতে শুয়ে ছিলাম এরা দুজন আমার ফ্লাটে এসে সমস্ত রুমের লাইট অফ করে পুরো ফ্লাট অন্ধকার করে ফেলে। তখন ওরা আমাকে বলে এই ডার্ক হাউজ থেকে আসল ডার্ক হাউজে চলো। তখন ওরা দুজন আমাকে আত্মার ভয় দেখিয়ে বলে আমরা ডার্ক হাউজের মানুষ তোকে নিতে এসেছি। বলে আমার গলায় রশি দিয়ে আমাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়।এরাই আমাকে মেরেছিলো।
তাইতো আমি কাউকে মারে নি শুধু তোর সাথে বারবার দেখা দিয়েছিলাম যাতে তুই বুঝতে পারিস আমার সাথে খারাপ কিছু ঘটে ছিল কিন্তু তুমি তো আমাকে ভয় পাচ্ছিলি। রেজওয়ানকে আমি হসপিটালে মেরে এসেছি আর বাদ আছিস তুই তাসনিম।অর্ণব তাসনিমের চোখেমুখে নাক সমস্ত শরীর তার ধারালো নখ দিয়ে কেটে দেয় তাসনিম রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করতে থাকে। শুকনো মরিচের গুঁড়া ও লবণ দিয়ে তাসনিমের রক্তাক্ত শরীরে লাগিয়ে দেয় অর্নব। তাসনিম আমার কাছে বারবার প্রাণভিক্ষা চায়। অর্নব এর কাছে বারবার প্রাণ ভিক্ষা চায় কিন্তু অর্নব তাসনিমের প্রাণ ভিক্ষা দেয়না তাসনিমের গলা ধরে উঁচু করে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দেই।
কাঁদতে কাঁদতে অর্ণবের আত্মা বিলীন হয়ে যায়। অর্নব এর আত্মা হয়তো এবার মুক্তি পেয়ে গেছে।
হঠাত স্টোর রুম থেকে রেদওয়ান বেরিয়ে আসে। রেদওয়ান এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে। আমি বলি তুমি। রেদোয়ান বলে আমি সব জানি আমাকে কিছুই বলতে হবেনা অর্ণব আমাকে ঘরের একটা রুমে আটকে রেখেছিল আমি কোথাও গেছিলাম না। আমি সব কিছুই জানি তাসনিম আর ভাইয়া তাদের পাপের শাস্তি পেয়ে গেছে। ভালোবাসার মানুষের সাথে বেইমানি করলে প্রত্যেকেরই এমন শাস্তি হওয়া উচিত। পৃথিবীতে সব কিছুরই বিচার হয় শুধু মন ভাঙার বেঈমানির কোন বিচার হয় না। তাদের এমন ভয়ানক শাস্তি উচিত। আমি জানি অর্নব কে তুমি ভালোবাসো কিন্তু অর্নব আজ নেই তাই ওর ভালবাসা তোমার মনের সারাজীবন সম্মানের স্থানে থাকুক।
তবে আমি চেষ্টা করবো তোমাকে অর্নবের মতো ভালোবাসতে না পারলেও তোমাকে ভালোবাসার চেষ্টা করব তোমার জীবনে যাতে ভালোবাসার অভাব না হয় সে চেষ্টাই আমি করব। অর্ণবকে ভুলে যেতে হবে না তবে আমার ভালোবাসায় ভালো রাখার চেষ্টা করব। অর্ণব বেঁচে থাকুক তোমার আর আমার মাঝে স্মৃতি হয়ে।
সমাপ্ত।
peranhafish07 লেখাটি পছন্দ করেছে
Permissions in this forum:
You cannot reply to topics in this forum