- Riazনবাগত
- Posts : 9
স্বর্ণমুদ্রা : 1354
মর্যাদা : 10
Join date : 2021-06-04
রহস্য
Fri Jun 04, 2021 11:14 pm
রাত তখন প্রায় বারোটা হালকা বাতাসে শরীরে কাঁপুনি ধরিয়ে দিচ্ছিল। গায়ে চাদরটা জড়িয়ে রওনা দিলাম ছাত্রর বাড়ির দিকে।
জরুরি তলব এসেছে তাই এত রাতে যাওয়া। বাইরে বের হতেই দেখি চারিদিকে কুয়াশায় ঢেকে আছে। কয়েক হাত দুরত্বের কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
মনটা যেতে না চায়লে ও মনের উপর একটু জোর খাটিয়েই রওনা দিলাম।
ছাত্রের বাড়ির কিছুটা পূর্বেই শেমলির আম বাগান।
চারিদিকে বিশাল বিশাল আম গাছ তার পাশেই বড় একটা পুকুর।
শেমলির আম বাগানের কাছে আসতেই পরিবেশ টা যেন নিস্তব্ধ হয়ে গেল।
ঝিঝি পোকার ডাক, হঠাৎ গাছের পাতা পড়া শব্দ ও যেন মনের মধ্যে বিকট শব্দের ধারণ করছে।
হঠাৎ শরীরটা ভার হয়ে উঠল।মনে হচ্ছে পাঁচ মিনিটের এই আম বাগান পেরতে আমার কয়েক ঘন্টা লেগে যাবে।
তবুও মনে একটু সাহস জুগিয়ে হাটতে শুরু করলাম।
বড় পুকুরটার কাছে আসতেই শরীরের লোম দাঁড়িয়ে গেল। হাটবিট যেন দ্বিগুণ বেড়ে গেল।
কুয়াশায় চারিদিক ঢেকে থাকলে ও আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম।কিছু মহিলা পুকুরের ঘাট থেকে একটা খাটিয়ে নিয়ে আমার দিকে আসছে।
আমি যেন সকল শক্তি হারিয়ে ফেললাম দৌড়ে পালাবার কিংবা চিৎকার কিছুই করতে পারছিলাম না তবুও অনেক কষ্টে একটা বড় আম গাছের আড়ালে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।
মহিলা গুলো আমার পাশ কেটেই খাটিয়া নিয়ে চলে গেল।
আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম খাটিয়াতে কারর মরদেহ গোসল করিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন ও সেই মরদেহ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছিল।
মহিলা গুলো খাটিয়া নিয়ে আম বাগান পার হতেই প্রকৃতি যেন আবার আগের রুপ ধারণ করল।
মনেও তখন একটু সাহস হলো দ্রুত সেখানে থেকে হাটা শুরু করলাম রাত একটা নাগাদ ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে পৌছালাম।
সেখানে গিয়ে আর রাস্তায় ঘটে যাওয়া ঘটনা বললাম না।
মনে মনে ভাবলাম আজ আর বাড়িতে যাব না। ছাত্রের বাড়িতে থেকে যাব।
কিন্তু কথায় আছে না যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই রাত পোহায়।
রাত দুটোর দিকে বাড়ি থেকে ফোন এলো মা খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
রাতের ঘটে যাওয়া ঘটনা ভুলে বেরিয়ে পড়লাম বাড়ির উদ্দেশ্যে।
• সেই শেমলির আম বাগানের কাছে আসতেই শরীরে কাটা দিয়ে উঠল।তখনই লক্ষ্য করলাম হুইসেল দিয়ে একটি অ্যাম্বুলেস্ন এগিয়ে আসছে।
এটা দেখে মনে একটু সাহস পেলাম যাক এবার এই রাস্তা টুকু অ্যাম্বুলেস্নের সাথে দৌড়িয়ে পাড় হতে পারব।
ঠিক আমার কাছে এসেই গাড়িটা ব্রেক কষলো।
আমি থমকে দাড়ালাম। গাড়ির ভেতর থেকে ভেসে আসল একটি মেয়েলি কন্ঠ -
-- রাজ এত রাতে এখানে কি করছ?
কন্ঠটা চিনতে আমার আর ভুল হলো না এ যে শান্তার কন্ঠ। আমাদের পাশের গ্রামেই তার বাড়ি।
একটা সময় দুজনের খুবই ঘনিষ্ঠতা ছিল কিন্তু একটা দোমকা হাওয়া এসে সবই উলোটপালট করে দিয়েছিল।
দীর্ঘ চার বছর পর আবার আজ তার সাথে দেখা।
মায়ের অসুস্থতার কথা বলাতে দ্রুত গাড়িতে উঠতে বলল।
আমি ও কোন কথা না বাড়িয়ে উঠে পড়লাম।
তার গাড়িতে করেই মাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম।
হাসপাতালে দিয়েই শান্তা বিদায় জানালো যাওয়ার সময় বলে গেল কাল একবার হলেও আমাদের বাড়িতে যেও।
সকালের দিকে মা বেশ সুস্থ হয়ে উঠল।তাই মাকে বাড়িতে দিয়ে শান্তাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
বাড়ির কাছে পৌছাতেই বেশ লোকজনের সমাগম লক্ষ করলাম।
বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করতে বুঝতে পারলাম কেউ একজন মারা গিয়েছে।
খাটিয়ার কাছে যেতেই যেন স্তব্ধ হয়ে গেলাম এ যে শান্তা।
মাথায় যেন কোন কিছুই কাজ করছিল না।কাল রাতে যে আমি ওর সাথে কথা বললাম।
পরিচিত একজনকে বললাম কিভাবে এমন হলো।
তার কথা শুনে আমি চমকে উঠলাম গত দুই দিন আগে নাকি এক রোড দূর্ঘটনায় শান্তার মৃত্যু হয়েছে।
নিজের মনকে একটু শান্ত করে শান্তার দাফনের কাজ সম্পন্ন করে বাড়িতে আসলাম।
রাতে মাথায় শুধু একটায় চিন্তা ঘুরছিল।শান্তা যদি মারযায় যায় তাহলে রাতের মেয়েটি কে ছিল?
আর কেনই বা আমাকে সাহায্য করল।
শান্তা একদিন বলেছিল - আমার মৃত্যু যেন তোমার আগে হয় এবং তোমার হাতের মাটি দিয়েই যেন আমার দাফনের শেষ কাজ সম্পন্ন হয়।
হয়ত শান্তার শেষ ইচ্ছেটা পূরণ করার জন্যই তার আত্মা আমাকে আহবান করতে এসেছিল।
শেখ রিয়াজ
জরুরি তলব এসেছে তাই এত রাতে যাওয়া। বাইরে বের হতেই দেখি চারিদিকে কুয়াশায় ঢেকে আছে। কয়েক হাত দুরত্বের কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
মনটা যেতে না চায়লে ও মনের উপর একটু জোর খাটিয়েই রওনা দিলাম।
ছাত্রের বাড়ির কিছুটা পূর্বেই শেমলির আম বাগান।
চারিদিকে বিশাল বিশাল আম গাছ তার পাশেই বড় একটা পুকুর।
শেমলির আম বাগানের কাছে আসতেই পরিবেশ টা যেন নিস্তব্ধ হয়ে গেল।
ঝিঝি পোকার ডাক, হঠাৎ গাছের পাতা পড়া শব্দ ও যেন মনের মধ্যে বিকট শব্দের ধারণ করছে।
হঠাৎ শরীরটা ভার হয়ে উঠল।মনে হচ্ছে পাঁচ মিনিটের এই আম বাগান পেরতে আমার কয়েক ঘন্টা লেগে যাবে।
তবুও মনে একটু সাহস জুগিয়ে হাটতে শুরু করলাম।
বড় পুকুরটার কাছে আসতেই শরীরের লোম দাঁড়িয়ে গেল। হাটবিট যেন দ্বিগুণ বেড়ে গেল।
কুয়াশায় চারিদিক ঢেকে থাকলে ও আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম।কিছু মহিলা পুকুরের ঘাট থেকে একটা খাটিয়ে নিয়ে আমার দিকে আসছে।
আমি যেন সকল শক্তি হারিয়ে ফেললাম দৌড়ে পালাবার কিংবা চিৎকার কিছুই করতে পারছিলাম না তবুও অনেক কষ্টে একটা বড় আম গাছের আড়ালে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।
মহিলা গুলো আমার পাশ কেটেই খাটিয়া নিয়ে চলে গেল।
আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম খাটিয়াতে কারর মরদেহ গোসল করিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন ও সেই মরদেহ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছিল।
মহিলা গুলো খাটিয়া নিয়ে আম বাগান পার হতেই প্রকৃতি যেন আবার আগের রুপ ধারণ করল।
মনেও তখন একটু সাহস হলো দ্রুত সেখানে থেকে হাটা শুরু করলাম রাত একটা নাগাদ ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে পৌছালাম।
সেখানে গিয়ে আর রাস্তায় ঘটে যাওয়া ঘটনা বললাম না।
মনে মনে ভাবলাম আজ আর বাড়িতে যাব না। ছাত্রের বাড়িতে থেকে যাব।
কিন্তু কথায় আছে না যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই রাত পোহায়।
রাত দুটোর দিকে বাড়ি থেকে ফোন এলো মা খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
রাতের ঘটে যাওয়া ঘটনা ভুলে বেরিয়ে পড়লাম বাড়ির উদ্দেশ্যে।
• সেই শেমলির আম বাগানের কাছে আসতেই শরীরে কাটা দিয়ে উঠল।তখনই লক্ষ্য করলাম হুইসেল দিয়ে একটি অ্যাম্বুলেস্ন এগিয়ে আসছে।
এটা দেখে মনে একটু সাহস পেলাম যাক এবার এই রাস্তা টুকু অ্যাম্বুলেস্নের সাথে দৌড়িয়ে পাড় হতে পারব।
ঠিক আমার কাছে এসেই গাড়িটা ব্রেক কষলো।
আমি থমকে দাড়ালাম। গাড়ির ভেতর থেকে ভেসে আসল একটি মেয়েলি কন্ঠ -
-- রাজ এত রাতে এখানে কি করছ?
কন্ঠটা চিনতে আমার আর ভুল হলো না এ যে শান্তার কন্ঠ। আমাদের পাশের গ্রামেই তার বাড়ি।
একটা সময় দুজনের খুবই ঘনিষ্ঠতা ছিল কিন্তু একটা দোমকা হাওয়া এসে সবই উলোটপালট করে দিয়েছিল।
দীর্ঘ চার বছর পর আবার আজ তার সাথে দেখা।
মায়ের অসুস্থতার কথা বলাতে দ্রুত গাড়িতে উঠতে বলল।
আমি ও কোন কথা না বাড়িয়ে উঠে পড়লাম।
তার গাড়িতে করেই মাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম।
হাসপাতালে দিয়েই শান্তা বিদায় জানালো যাওয়ার সময় বলে গেল কাল একবার হলেও আমাদের বাড়িতে যেও।
সকালের দিকে মা বেশ সুস্থ হয়ে উঠল।তাই মাকে বাড়িতে দিয়ে শান্তাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
বাড়ির কাছে পৌছাতেই বেশ লোকজনের সমাগম লক্ষ করলাম।
বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করতে বুঝতে পারলাম কেউ একজন মারা গিয়েছে।
খাটিয়ার কাছে যেতেই যেন স্তব্ধ হয়ে গেলাম এ যে শান্তা।
মাথায় যেন কোন কিছুই কাজ করছিল না।কাল রাতে যে আমি ওর সাথে কথা বললাম।
পরিচিত একজনকে বললাম কিভাবে এমন হলো।
তার কথা শুনে আমি চমকে উঠলাম গত দুই দিন আগে নাকি এক রোড দূর্ঘটনায় শান্তার মৃত্যু হয়েছে।
নিজের মনকে একটু শান্ত করে শান্তার দাফনের কাজ সম্পন্ন করে বাড়িতে আসলাম।
রাতে মাথায় শুধু একটায় চিন্তা ঘুরছিল।শান্তা যদি মারযায় যায় তাহলে রাতের মেয়েটি কে ছিল?
আর কেনই বা আমাকে সাহায্য করল।
শান্তা একদিন বলেছিল - আমার মৃত্যু যেন তোমার আগে হয় এবং তোমার হাতের মাটি দিয়েই যেন আমার দাফনের শেষ কাজ সম্পন্ন হয়।
হয়ত শান্তার শেষ ইচ্ছেটা পূরণ করার জন্যই তার আত্মা আমাকে আহবান করতে এসেছিল।
শেখ রিয়াজ
Hasibul hasan santo, Abul basar, Sk sagor, Tanusri roi, Rohan Ahmed, Fahad islam, Za mahmud and লেখাটি পছন্দ করেছে
Permissions in this forum:
You cannot reply to topics in this forum